খাগড়াছড়ির রিসাং ঝরনায় মুগ্ধ পর্যটকরা

খাগড়াছড়ি শহর থেকে সামান্য দূরে সম্পূর্ণ পাথরের পাহাড় থেকে সৃষ্ট এক অপূর্ব ঝরনা, রিসাং। পাহাড়ের প্রায় ১০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে ঝরনার স্বচ্ছ পানির প্রবাহের আছড়ে পড়ার শব্দ যে কাউকে বিহ্বল করে দেয়। চারদিকে উঁচু-নিচু সবুজ পাহাড়, বুনোঝোপ, নামহীন রঙিন বুনোফুলের সৌন্দর্য মানুষকে নিয়ে যায় এক কল্পনার রাজ্যে। 

ভরা বর্ষায় এখন প্রাণ ফিরে পেয়েছে পাহাড়ি এই ঝরনা। কেবল রিসাং নয়, তৈদুছড়া, তৈছামাসহ জেলার ১০টি ঝরনা ভরে উঠেছে পানিতে। অন্তত ৭ মাস পর নিয়মিত বৃষ্টিপাতে ঝরনাগুলোতে যেন ভরা যৌবন ফিরে এসেছে।

খাগড়াছড়ি জেলার প্রধান ও জনপ্রিয় ঝরনা রিসাং ঝরনায় গিয়ে অভিভূত হচ্ছেন পর্যটকরা। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘তেরাং তৈকালাই’ নামে পরিচিত। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে  অনেকেই ঝরনার এই রূপ দেখতে ছুটে গেছে রিসাং ঝরনায়। পাহাড়ি ছড়া বেয়ে নেমে আসা পানির প্রবাহে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। ঝরনার এমন প্রবল রূপ আগে কখনো দেখেননি তারা। এত দিন ঝরনায় তেমন পানি ছিল না বলে অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে এখন প্রতিটি ঝরনায় প্রচুর পানি। 

খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে রিসাং ঝরনা। কিন্তু সারা বছরই কমবেশি এখানে পর্যটক সমাগম থাকে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গত সাত মাসের বেশি সময় ধরে রিসাংসহ অন্যান্য ঝরনার পানি প্রবাহ একেবারেই কমে এসেছে। বৃষ্টি হওয়ায় প্রতিটি ঝরনায় পানির স্রোতোধারা বয়ে যাচ্ছে। 

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘খাগড়াছড়িতে বেড়াতে  এসেছি। আসার পর থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষায় পাহাড় খুব সুন্দর। তাই এই সময়ে ভ্রমণে এলাম। সবচেয়ে ভালো লেগেছে ঝরনা দেখে। রিসাং ঝরনায় এখন প্রচুর পানি। যাতায়াতে কিছুটা কষ্ট হলেও ঝরনাগুলো এখন ভয়ংকর সুন্দর। টানা বৃষ্টিতে না এলে এই সৌন্দর্য অনেকেই মিস করবে।’

খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটক মারুফ হোসেন ও সায়েম আজাদ বলেন, ‘বৃষ্টিতে ভিজে ঝরনার সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। বর্ষায় পাহাড় সুন্দর। এ ছাড়া ঝরনার এমন রূপ দেখতে পাওয়া সত্যিই সৌভাগ্যের। যারা এই সময়ে পাহাড়ে আসবেন, তারা ঝরনার এমন রূপ দেখে মুগ্ধ হবেন।’

খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, ‘খাগড়াছড়িতে ছোট বড় দশটি ঝরনা রয়েছে। এসব ঝরনাকে কেন্দ্র করে পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে রিসাং ঝরনায় বিপুল পরিমাণ পর্যটক থাকে। তবে যাতায়াত সুবিধা না থাকার কারণে তৈদুছড়া, শিলাছড়িসহ বিভিন্ন ঝরনাগুলোতে দর্শনার্থীরা যেতে পারে না।  এসব এলাকায় সড়ক নির্মিত হলে পর্যটক সমাগম আরও বাড়বে। স্থানীয় পর্যটন অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।’ 

খাগড়াছড়ি ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কর্মকর্তা হাসান ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘রিসাং ঝরনায় দর্শনার্থীদের আমরা নিরাপত্তা প্রদান করি। ছুটির দিনগুলোতে আমাদের টিম টহল দেয়। এ ছাড়া দুর্গম এলাকাগুলোয় যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় টহল দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে কোনো পর্যটক যদি প্রত্যন্ত এলাকার ঝরনায় গিয়ে সমস্যায় পড়ে সে ক্ষেত্রে তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে আমরা সহায়তা দিতে পারব।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //