কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের গেট ভেঙে বেশ কয়েকজন বন্দি পালিয়েছেন। কতজন পালিয়ে গেছেন তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি কারা কর্তৃপক্ষ। তবে ধারণা করা হচ্ছে আনুমানিক ২০-৩০ জন পালিয়েছেন।
এদিকে কারাগারের একটি সূত্র জানায়, কারাগারের ভেতরে থাকা কুষ্টিয়ার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এস কে সজীবের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে।
আজ বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি চালান কারারক্ষীরা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনী কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এ ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুরে কারাগারের দর্শনার্থী কক্ষে স্বজনরা বন্দিদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। হঠাৎ ভেতর থেকে বেশ কয়েকজন কয়েদি কারারক্ষীদের মারধর শুরু করে। এসময় বাইরে থাকা করাবন্দিদের স্বজনরাও চেঁচামেচি শুরু করেন।
কুষ্টিয়ার জেল সুপার আ. বারেক বলেন, ভেতরে দুপুরের খাবার ও বন্দি গণনা শেষে অফিসে নামাজ পড়ছিলাম। নামাজ শেষ করে উঠতেই হঠাৎ কারাগারের ভেতর থেকে চিৎকার ও অভ্যন্তরীণ গেটে আঘাতের শব্দ শুনতে পাই। দৌড়ে গিয়ে দেখি অন্তত ৩০০ জন সংঘবদ্ধ হয়ে ভেতর থেকে একসঙ্গে গেটে ধাক্কা দিচ্ছে। এতে গেটের হেজবোল্ড ভেঙে যায়। এসময় কারাবন্দিরা পালানোর চেষ্টা করলে রক্ষীরা ফাঁকাগুলি চালান। তখন বন্দিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আবারো ভেতরে ঢুকে যায়। তবে এই সুযোগে ২০-৩০ জন কারাবন্দি পালিয়ে গেছেন।
এই কর্মকর্তা জানান, বন্দিদের ঠেকাতে গিয়ে ৫ কারারক্ষী আহত হয়েছেন। এছাড়া কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অস্ত্র ভাণ্ডার রক্ষিত আছে, বন্দিরা নিরাপদে আছে।
কারারক্ষীরা জানান, জেলখানার ভেতরের রান্নাঘর থেকে চেলা কাঠ সংগ্রহ করে কারাগারের প্রধান ফটকের আগের ফটকটি ভেঙে বেরিয়ে আসেন দেড় শতাধিক বন্দি। এসময় কারারক্ষীরা বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালান। এরপর বন্দিরা ফটকের কারারক্ষীকে মারধর করে তার কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে তালা খুলে একে একে বেরিয়ে যেতে শুরু করেন। এসময় জেলখানার বাইরে থাকা কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। তবে তার আগেই বেশ কয়েকজন বন্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
জেল সুপার আব্দুল বারেক জানান, ঠিক কতজন বন্দি পালিছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
এছাড়া পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে কোনো জঙ্গি বা বড় মাপের কোনো সন্ত্রাসী আছে কি না সেটাও বলতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, বন্দিদের তালিকা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তালিকা মেলানোর পর জানা যাবে কতজন বন্দি পালিয়েছেন। পাশাপাশি পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের পরিচয় জানা যাবে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ১২-১৩ জন বন্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। বন্দিদের পালানো ঠেকাতে কারারক্ষীরা বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
কুষ্টিয়া ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা লে. কর্নেল মো. মাহবুবুল আলম শিকদার জানান, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh