নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের শ্রীনগর ইউনিয়নের আধিপত্য বিস্তারের জেরে রাতভর টেঁটা ও বন্দুক যুদ্ধে দু’পক্ষের অন্তত ৫ জন নিহত ও অন্তত অর্ধশত গুরুতর আহতের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার (২১ আগস্ট) রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দু’পক্ষের সমর্থকদের টেঁটা ও বন্ধুক যুদ্ধ চলে।
নিহতেরা হলেন, সায়দাবাদ গ্রামের সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৩৫), শাহীন মিয়ার ছেলে জুনাইদ (১৬), ইসমাইল ব্যাপারীর ছেলে আমির হোসেন (৭০), আব্বাস আলীর ছেলে আনিস (৩০) ও পরে ঢাকা নেওয়ার পথে নোয়াব মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল (৩০) মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়য়েনের সায়দাবাদ একই গ্রামের আইল্লার বাড়ীর হানিফ মাস্টার ও ফিরোজ মেম্বারের দলের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো।
স্থানীয় সায়দাবাদ বাজার দখল নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ বিদ্যমান। সায়দাবাদ বাজারটি আগে হানিফ মাস্টার সমর্থকদের দখলে ছিল কিন্তু গত প্রায় ৩ বছর ধরে ফিরোজ মেম্বারের সমর্থকদের দখলে থাকলেও আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর তারা বাজারে উঠতে পারছিল না। এ সুযোগে হানিফ মাস্টারের লোকজন বাজার দখলের চেষ্টা করে। গত ১০/১২ দিনে তাদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার (২১ আগস্ট) রাতে দু’পক্ষের মধ্যে রাতভর তুমুল টেঁটা ও বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশত আহত ও ৫জন নিহতের ঘটনা ঘটে। আহতের অধিকাংশ ও নিহতরা সবাই ফিরোজ মেম্বারের সমর্থক বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলো: শাহ আলমের ছেলে ইমরান (২৩), সুলতান মিয়ার ছেলে শহিদ মিয়া (৭০), বনি মিয়ার ছেলে এরশাদ মিয়া (৪০), মৃত দারু মিয়ার ছেলে জসিম মিয়া, মৃত ইউনূছ মিয়ার ছেলে আমির হোসেন (৫০), সম্ভু মিয়ার ছেলে আব্বাস আলী (৫০), বাচ্চু মিয়ারে ছলে জয় (১৯), আয়নুল মিয়ার ছেলে শাহারাজ (২২), বজলু ফকিরের ছেলে তাজুল ইসলাম (৩৮), মালেক মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়া (১৯), জামাল মিয়ার ছেলে ইদন মিয়া (২৩), মৃত সব্দর আলীর ছেলে মনসুর আলী (৫০), মজিদ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৬০), আবির মিয়ার ছেলে সৌরভ আলী (৩৫), ফরিদ মিয়ার ছেলে আয়মান (২০), মহন মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল (২৫), মাইন উদ্দিনের ছেলে সায়মান (১৪), শাহ আলমের ছেলে মাসুদ (২৩), আসাদের ছেলে সানজিদ (১৮), গিয়াস উদ্দিনের ছেলে তানভির (২০), আতাবর হোসেনের ছেলে সোহান মিয়া (২০), জাবিন মিয়ার মেয়ে তানজিনা (১৯), মানিক মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (২১), আসমত আলীর ছেলে আলী আকবর (৩৮) সহ প্রায় অর্ধশত।
এ বিষয়ে রায়পুরা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুল হালিম বলেন, এটা আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। এখন পর্যন্ত ৩জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আহত হয়েছে অনেকেই। ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh