কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াত ইসলামী একটি ইসলামী রাজনৈতিক দল। আমরা চাই সৎ নেতৃত্ব বসুক। দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব বসুক। যারা গদিকে নিজেদের বাপ-দাদার সম্পদ মনে করবে না। আর জনগণকে নিজেদের দাস বানানোর চিন্তা করবে না। বরং জনগণের চৌকিদার হিসেবে নিজেদের মনে করবে। জনগণ শান্তিতে ঘুমবে আর উনারা রাত জেগে জনগণকে পাহারা দেবে।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বজন হারানোর শোকগুলো একত্র করে আমরা শক্তিতে রূপান্তর করব এবং অঙ্গীকার নেব যে আমরা শহীদদের মর্যাদা রাখব। তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না।
আজ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতিহাস কথা বলবেই। যেমন তেমন ইতিহাস লিখলে সেই ইতিহাস টেকসই হয় না। তিনি বলেন, আসলে আমাদের ইতিহাস বড়ই বিচিত্র। ইতিহাসের পালা বদলে আমরা বন্ধুকে শত্রু বানাই, শত্রুকে বন্ধু বানাই। এরকম যে জাতি করে সেই জাতি কোনোদিন বিশ্বের দরবারে ও নিজের বিবেকের কাছে সম্মানিত হতে পারে না। অপসংস্কৃতির এই যন্ত্রণা থেকে এই জাতিকে বের হয়ে আসতে হবে। জাতির জন্য যার যেখানে যে অবদান এটা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনার লোকেরাই আপনাকে মাস্টারমাইন্ড ও গডমাদার বানিয়েছে।
এসময় তিনি বলেন, এখন যারা ধরা পড়ছে তারা বলছে, এটা আমি করি নাই অমুকের হুকুমে করেছি। আর যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন সবসময় বলা হতো- গাছটা এদিকে দুলেছে, গাছের পাতা নড়ছে, প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) দেখছেন। সব কিছুতেই উনার অনুমতি লাগবে, উনার নির্দেশনা লাগবে। তাহলে আপনার লোকেরাই তো আপনাকে মাস্টারমাইন্ড এবং গডমাদার বানিয়েছে, আমরা বানাইনি।
জামায়াতের আমির আরো বলেন, ‘বলেছিলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে সুন্দর বেহেশতী বাগান পয়দা করলে সাড়ে ১৫ বছরের মাথায় আপনাদের এভাবে দেশ ছেড়ে পালাতে হতো না।’ আমাদের কোন নেতৃবৃন্দ তো পালিয়ে যাননি৷ তারা নিজ নিজ কর্মসংস্থান এবং নিজ নিজ বাসস্থানে ছিলেন। এখন কেন শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেন বলেও যোগ করেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, আমরা আজকে শহীদ পরিবারের কাছে এসেছি সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য নয় বরং আমরা এসেছি অনুপ্রেরণা নেওয়ার জন্য। তারা বড়ই সৌভাগ্যবান। শুধু শহীদদের হাশরের দিন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, তুমি তোমার জীবনের সর্বোচ্চ সম্পদ আমার জন্য দান করেছো। আজকে আমি আমার জান্নাতের সব দুয়ার তোমার জন্য খুলে দিলাম। আমার আফসোস এবারের এই যুদ্ধে আমি শহীদের পরিবারের একজন হতে পারলাম না। এ সৌভাগ্য যাদেরকে আল্লাহ দান করেছেন তাদেরকে আমার ঈর্ষা হয়। আমি যদি তাদের একজন হতাম। আমরা আজকে ঘোষণা করতে এসেছি আমরা আপনার পরিবারের সদস্য হতে চাই।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে জেলা সেক্রেটারি সুজা উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের কার্যনির্বাহী সদস্য ও পরিচালক মোবারক হোসাইন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের টিম সদস্য ড. আলমগীর বিশ্বাস, খন্দকার এ কে এম আলী মহসিন, আব্দুল মতিন, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা জেলা জামায়াতের আমির, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হুসাইন, মুফতি আমির হামজা প্রমুখ।
শহীদ পরিবারের সাথে মতবিনিময় শেষে ১৪ জন শহীদ পরিবারের হাতে দুই লাখ করে মোট ২৮ লাখ টাকা তুলে দেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : কুষ্টিয়া জামায়াত ইসলামী রাজনীতি ডা. শফিকুর
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh