কাজ করতেন মেয়রের বাসায়। অথচ বেতন নিচ্ছেন সিটি করপোরেশন থেকে। আবার নামে কর্মচারী হলেও দায়িত্ব ছিল রাজনীতির মাঠে জনবলের জোগান দেওয়া। তার ওপর নেই নিয়োগের বৈধতা।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের এমন ৪২ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীর তালিকা করেছে নগর প্রশাসন। যাদের চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে মানা হয়নি নিয়ম-নীতি। শুধুমাত্র মেয়রদের কাছের লোক হওয়াই ছিল তাদের যোগ্যতা।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত এসব কর্মচারীরা চাকরি হারাতে পারেন যেকোনো সময়। এমনটাই জানিয়েছেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী। যদিও গত ১০ সেপ্টেম্বর মেয়রের দপ্তরের ১৬ জন কর্মচারীকে এরই মধ্যে ছাটাই করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নগর ভবনের নির্ভরযোগ্য সূত্র।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী বলেন, চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে। কিন্তু বরিশাল সিটি করপোরেশনে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগে সেই নিয়োগগুলো অনুসরণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, প্রথমত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শূন্য পদের বিপরীতে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চুক্তির মেয়াদ থাকতে হবে। কিন্তু বরিশাল সিটি করপোরেশনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনটাই মানা হয়নি।
শওকত আলী বলেন, বিশেষ করে সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ যাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে গেছেন, তাদের কারোরই চুক্তির মেয়াদ নেই। পুরোটাই অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবার সদ্য সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ একইভাবে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই মেয়রের বাসায় দায়িত্ব পালন করেছেন। গত পাঁচ আগস্টের পরে তারা কেউ কর্মস্থলে আসেনি।
নগর প্রশাসক বলেন, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে যারা নিয়োগ পেয়েছেন আমরা এমন ৪২ জনের একটি তালিকা করেছি। এদের মধ্যে কয়েকজন আছেন যারা শূন্য পদের বিপরীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু এদের চুক্তির মেয়াদ উল্লেখ নেই। তবে এদের বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শীঘ্রই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার।
নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র থাকাবস্থায় তার অনুসারী ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। যারা প্রতি মাসে নগর ভবন থেকে মোটা অংকের মজুরি নিয়েছেন।
একইভাবে সদ্য সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ তার অনুসারী বেশ কয়েকজনকে সিটি করপোরেশনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন। যারা নাগরিক সেবায় কাজে না আসলেও দায়িত্ব পালন করেছেন মেয়রের বাসায়। খোকন সেরনিয়াবাতের স্ত্রী লুনা আবদুল্লাহর ব্যক্তিগতসহকারী থেকে শুরু করে কাজের লোকদের বেতনও দেওয়া হতো নগর ভবন থেকে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে নগর প্রশাসন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : বরিশাল সিটি করপোরেশন দুর্নীতি রাজনীতি
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh