বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর। ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে কক্সবাজার উপকূলে ছয়টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এঘটনায় ২ জন নিহত এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৫ জন। এদিকে মাছ ধরতে গিয়ে আরও অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি ফিশিং ট্রলারের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে সৈকতের লাবণী ও ইনানী পয়েন্টে ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে ছয়টি ট্রলার ডুবে যায়। পরে এসব ট্রলার স্রোতের তোড়ে সমুদ্রসৈকতের কলাতলী, ইনানীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ভেসে আসে।
জানা যায়, সমুদ্র উপকূলের লাবণী এলাকা থেকে এফবি রশিদা নামে একটি এবং সাগরের ইনানী পয়েন্টে পাঁচটি ফিশিং ট্রলার ডুবে যায়। তবে ইনানীতে ডুবে যাওয়া ট্রলার ও নিখোঁজ জেলেদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ডুবে যাওয়া ট্রলারে থাকা মাঝি-মাল্লাদের অনেকে কূলে উঠতে পারলেও শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৬ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
নিহতরা হলেন- মোহাম্মদ জামাল (৩৭) ও নুরুল আমিন (৩৫)। মৃত জামালের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা এবং নুরুল আমিনের বাড়ি বাশখালী এলাকায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) তানভির হোসেন বলেন, সমুদ্র সৈকতে কর্মরত লাইফগার্ড কর্মীরা ভাসমান অবস্থায় জেলেদের উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসেন। দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন নিখোঁজ আছেন বলে শুনেছি। তাদের উদ্ধারের জন্য কাজ চলছে।
ডুবে যাওয়া ট্রলারের জেলে মোহাম্মদ ফরহাদ বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাগরের লাবণী এলাকায় আসার পর ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়ি আমরা। তখন ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। একসময় ট্রলারটি ডুবে যায়। আমাদের চার জেলে ঢেউয়ের স্রোতে ভেসে গেছেন। আরেক জেলে জামালের অবস্থা খারাপ ছিল। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, ট্রলারটিতে ২৩ জন মাঝি-মাল্লা ছিল, তার মধ্যে একজন মারা গেছেন। এবং চারজন নিখোঁজ রয়েছেন।
সি-সেইফ লাইফগার্ড কর্মীদের ইনচার্জ ওসমান গনি বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় লাইফগার্ড কর্মীরা একটি ট্রলার ভেসে আসতে দেখেন। পরে কাছে গিয়ে ভাসমান জেলেদের কূলে নিয়ে আসা হয়৷
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে ৩০ থেকে ৩৫টি ফিশিং ট্রলারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান বলেন, সাগরে তিন নম্বর সতর্কসংকেত জারি রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থান নেয়া সব ধরনের মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার জন্য বলা হয়েছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh