সড়ক দুর্ঘটনায় বিলীন দেড় শতাধিক পরিবার

সড়ক দুর্ঘটনায় একসাথে পুরো পরিবার নিহতের প্রবণতা বাড়ছে। গত ৫ বছরে দেড় শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

২০২০ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা যায় মোটরবাইক, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে একসাথে পুরো পরিবার বা এক পরিবারের অধিক সদস্য নিহতের প্রবণতা বাড়ছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা যায় গত ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। 

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

মোটরবাইক দুর্ঘটনা: মোটরবাইক আরোহী হিসেবে স্বামী-স্ত্রী নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১২৩টি এবং পিতা-পুত্র নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৮৪টি। অর্থাৎ ১২৩টি বাইক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন ২৪৬ জন এবং ৮৪টি দুর্ঘটনায় পিতা-পুত্র নিহত হয়েছেন ১৬৮ জন।

অটোরিকশা দুর্ঘটনা: অটোরিকশা যাত্রী হিসেবে স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের দুইজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৩৭টি। তিনজন নিহতের ঘটনা ৭৮টি, চারজন নিহতের ঘটনা ৬২টি, পাঁচজন নিহতের ঘটনা ৩৮টি, ছয়জন নিহতের ঘটনা ২৬টি এবং সাতজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। মোট ৩৫২টি পরিবারের ১১৭৯ জন নিহত হয়েছে।

মাইক্রোবাস দুর্ঘটনা: মাইক্রোবাসের আরোহী হিসেবে একই পরিবারের দুইজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৬টি, তিনজন নিহতের ঘটনা ২২টি, চারজন নিহতের ঘটনা ১৭টি, পাঁচজন নিহতের ঘটনা ১১টি, ছয়জন নিহতের ঘটনা ৮টি এবং ১১ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ৭৫টি পরিবারের ২৮০ জন নিহত হয়।

প্রাইভেটকার দুর্ঘটনা: প্রাইভেটকার আরোহী হিসেবে একই পরিবারের দুইজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। তিনজন নিহতের ঘটনা ২১টি, চারজন নিহতের ঘটনা ১৭টি, পাঁচজন নিহতের ঘটনা ১৪টি। মোট ৭৬টি পরিবারের ২৪৯ জন নিহত হয়।

অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনা: অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে তিনজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৯টি, চারজন নিহতের ঘটনা ৫টি, পাঁচজন নিহতের ঘটনা ৩টি, ৮ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ১৮টি পরিবারের ৭০ জন নিহত হয়।

দুর্ঘটনার কারণসমূহ

১. সড়ক অবকাঠামো বিস্তৃত হওয়ায় পরিবারের সকলে একসাথে বেড়াতে বা কোনো কাজে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।
২. মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল।
৩. অধিকাংশ মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্সের ফিটনেস না থাকা।
৪. মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অদক্ষতা ও বিশ্রামহীন ড্রাইভিং করা।
৫. ট্রাফিক আইন না মেনে বেপরোয়া মোটরযান চালনা।

সুপারিশ

১. মোটরবাইক আরোহীদের ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করা।
২. ট্রাফিক আইন মেনে মোটরযান চালানো।
৩. মহাসড়কে রোড ডিভাইডার ও সার্ভিস রোড নির্মাণ করা।
৪. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের চলাচল নজরদারি করা। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh