আসামি নিয়মিত অফিস করলেও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ

পঞ্চগড়ে এজাহারভুক্ত আসামি নিয়মিত অফিস করলেও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পুলিশ কার্যত নিজের দায়িত্ব পাশ কাটিয়ে আসামিদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ করে দিচ্ছে।

জানা যায়, গত বছর ২৮ ডিসেম্বর জেলার বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের ঝলঝলি এলাকায় নিজ জমিতে প্রাচীর নির্মাণের সময় প্রতিবেশী আশিরুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের হামলার মুখে পড়েন ভুক্তভোগী মোজাম্মল হক। 

আশিরুলদের দাবি, প্রাচীরটি সরকারি জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছিল। যদিও এর আগে এসি ল্যান্ড ও ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ করেন আশিরুলরা। পরে এসি ল্যাণ্ডের নির্দেশে তহসিলদার আব্দুল কুদ্দুসক সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। যেখানে সরকারি জায়গায় প্রাচীর নির্মাণ করার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলা হয়।

ঘটনার দিন (২৮ ডিসেম্বর) প্রাচীর নির্মাণের সময় মৃত ফয়জুর রহমানের ছেলে আজিজুর প্রথমে রাজমিস্ত্রীদের বাধা দেন। পরে এর প্রতিবাদ করলে আজিজুর, আমিনুল, আশিরুল, আজিজুরের ছেলে রিফাতসহ আরো ৪/৫ জন কাজে বাধা দেওয়ার সাথে সাথে অতর্কিত হামলা চালায়। এই সময় আশিরুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে মোজাম্মেল হকের মাথায় কোপ দিলে মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আমিনুল নামে আরেক আসামি মোজাম্মালের ভাই তোয়াবুরের উপরও হামলা চালায়। এতে তোয়াবুরের কপালের ডান দিকে ও মাথার মধ্যভাগে কেটে যায়। রাজমিস্ত্রীদেরও মারপিট করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেন ডাক্তার।

বেংহারী বনগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাবেদ আলীও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মোজাম্মেলদের পুরনো দেওয়ালটি আমারও জন্মের আগে নির্মিত। জরাজীর্ণ হওয়ায় সেখানেই নতুন করে দেওয়াল নির্মাণ করছিল তারা।

এই ঘটনায় মোজাম্মেলের ছেলে মাহফিজুর রহমান আশিরুলকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নাম উল্লেখসহ ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ৩১ ডিসেম্বর বোদা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আশিরুল ও আমিনুল বাদে বাকীরা আদালত থেকে জামিনে আছেন।

এদিকে প্রধান আসামি আশিরুল পঞ্চগড় জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে অডিটর পদে কর্তব্যরত আছেন। নিয়মিত অফিস করলেও পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। পুলিশের এমন ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

বাদির অভিযোগ, ‘মামলা হওয়ার পর একদিনও পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করেনি। এমনকি মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালামকে বাদী আশিরুলের অবস্থান জানালেও ফোনে তাকে সরে যেতে বলেন।’

জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আবেদ হোসেন সরকার বলেন, আশিরুল নিয়মিত অফিস করছেন। মাঝে দুইবার তিন দিন করে ছুটি নিয়েছিলেন।

বোদা থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, মামলা হলে আসামি যেই হোক না কেন গ্রেপ্তার করা হবে। নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ হয়েছে। আসামির অবস্থান নিশ্চিত করা গেলেই গ্রেপ্তার করা হবে।

এই বিষয়ে জানতে সাম্প্রতিক দেশকালের স্থানীয় প্রতিনিধি পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সীকে মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh