শেরপুরের বিএনপি নেতা মাসুদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

শেরপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবদল সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিব্রত করছেন শেরপুর জেলা বিএনপিকে। অভিযোগ রয়েছে, রাজনীতিতে নাটকীয় উত্থানে এখন তিনি বেশ অর্থ-বিত্তের মালিক হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয়দের ভাষ্য- চোখের সামনে যা পাচ্ছেন তা-ই দখলে নিচ্ছেন শফিকুল ইসলাম মাসুদ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জামালপুর ব্রিজের ১০০ গজের ভেতর অবৈধভাবে বালু তোলা, কাঁচাবাজার দখল, গরুর হাট দখল করে চাঁদাবাজি করছেন নিয়মিত। এ সব খাত থেকে মাসে মাসোয়ারা পাচ্ছেন কোটি টাকা। চাঁদার ভাগ যাচ্ছে  আওয়ামী লীগ নেতাদের পকেটেও।

অভিযোগ রয়েছে-  দলে যুবদল কিংবা বিএনপির হলেও শফিকুল ইসলাম মাসুদের মননে আওয়ামী লীগ। তার বাবা আবদুল লতিফ শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে রিলিফ চেয়ারম্যান ছিলেন। মাসুদের দুই ভাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তার আপন চাচাতো ভাই আকবর চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সরাসরি অংশগ্রহণকারী আকবর। পরে হত্যা মামলার আসামি হয়ে পলাতক রয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে শফিকুল ইসলাম মাসুদ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। পরে বিএনপিতে ফিরে আসেন। তার চাচাতো ভাই আকবর চেয়ারম্যানের পক্ষে শফিকুল ইসলাম মাসুদ তিনবার নৌকা মার্কার নির্বাচনি প্রচার চালান এবং বিএনপির দলীয় ইউনিয়নে প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও তার অনুসারীদের বিরোধিতা করতে বলেন।

আকবর চেয়ারম্যান ছাত্র আন্দোলনে বিরোধিতা কারীদের একজন। তিনি অবৈধ বালু ব্যবসা, জমি দখল, বাজার দখল, ব্রহ্মপুত্র ব্রিজের পাড়ে ১০০ গজ ভেতরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ বালু তোলাসহ যাবতীয় অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী লীগের পতনের পর শফিকুল ইসলাম মাসুদ অবৈধ এই বালু ব্যবসার হাল ধরেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের পতনের পর শেরপুরে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে যুবদল নেতা মাসুদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়র এবং তার ছেলের ঠিকাদারি কাজের দায়িত্ব পরিচালনা করছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ।

স্থানীয় বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শফিকুল ইসলাম মাসুদ আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছেন। বিভিন্ন সভায় আওয়ামী লীগের লোকদের বিএনপিতে যোগ দেওয়াচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে বিএনপির জন্য তা ক্ষতিকর হয়ে যাবে।’

জেলা বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শফিকুল ইসলাম মাসুদের কোনো জন সম্পৃক্ততা নেই। তিনি একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। তিনি বিএনপির মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টির পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার ষড়যন্ত্রে সম্পৃক্ত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর জেলা যুব দলের সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা মিথ্যা। এলাকায় এসে খোঁজ নিন, এগুলোর কোনো সত্যতা পাবেন না।’

মাসুদ আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও তার দোসরা আমার বিরুদ্ধে এ সব ষড়যন্ত্র করছে। আমি পরিচ্ছন্ন মানুষ এবং পরিচ্ছন্ন ভাবে রাজনীতি করতে চাই।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh