নাটোরের লালপুরে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দফায় দফায় সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সাত আওয়ামী লীগ সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর চিনি বটতলা ঈদগাহ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
লালপুর থানার ওসি মো. নাজমুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
আহতরা হলেন- রামকৃষ্ণপুর গ্রামের লোকমান মণ্ডলের ছেলে সাব্বির হোসেন, মো. আরজেত আলীর ছেলে সুজাত আলী, আয়ুব উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মো. হায়াত উদ্দিন, বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের মৃত ইসাহাক আলীর ছেলে মো. জিয়াউর রহমান, খোলা কাগজের লালপুর প্রতিনিধি উত্তর লালপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে তুষার ইমরান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলা রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে নামাজ শেষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপির সমর্থকদের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে সাব্বির নামে এক বিএনপি সমর্থক আহত হন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা বিএনপি সমর্থকদের ওপর গুলি চালায়। এতে সুজাত নামে এক বিএনপি সমর্থক গুলিবিদ্ধ হন।
পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. অন্বেষা সরকার বলেন, আহত পাঁচজনের মধ্যে সুজাত আলী নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে।
এ ঘটনায় রামকৃষ্ণপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাফ হোসেন ঝুলফুর ছেলে মুন, জরিপের ছেলে দ্বীপ, খায়রুল বাসার ভাদুর ছেলে লিপু, পল্টনসহ সাতজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মী সুজাত বলেন, “ঈদের নামাজের পর আওয়ামী নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলে স্থানীয় মুসল্লি ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি চালালে আমার পায়ে গুলি লাগে।”
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব হারুনার রশিদ পাপ্পু বলেন, “স্বৈরাচারী হাসিনার দোসরেরা আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। আওয়ামী লীগ ক্যাডার রবিউল ইসলাম রবির নেতৃত্বে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি করা হয়েছে। অস্ত্রধারী এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার প্রশাসনের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
ওসি নাজমুল হক বলেন, “ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”
যাচাই-বাছাই করে আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : নাটোর লালপুর বিএনপি আওয়ামী লীগ
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh