মাদকের টাকা না পেয়েই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একই পরিবারের দুই নারী ও এক শিশুর হত্যা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।
তারা বলছেন, ওই ঘটনায় আটক মোহাম্মদ ইয়াসিন মাদক কেনার টাকা না চেয়ে না পেয়ে স্ত্রী, সন্তান এবং স্ত্রীর বড় বোনকে হত্যা করেছে।
শুক্রবার দুপুরে মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে একটি পরিত্যক্ত স্থানে বস্তায় ভর্তি অবস্থায় একই পরিবারের দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, মিজমিজি এলাকার লামিয়া আক্তার (২২), তার বোন স্বপ্না আক্তার (৩৫) ও লামিয়ার চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ।
লামিয়ার খালা আয়েশা বেগম বলেন, প্রেমের সম্পর্ক ছিল লামিয়া ও ইয়াসিনের। পাঁচ বছর আগে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর ধরা পড়ে ইয়াসিন মাদকাসক্ত।
আয়েশা বলেন, “মাদকসহ ধরা পড়ায় কয়েকবার জেলে খেটেছে ইয়াসিন। লামিয়া তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসাও করিয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। ঈদের আগে থেকে মাদক কেনার টাকা নিয়ে লামিয়ার সঙ্গে ইয়াসিনের ঝগড়া চলছিল। গত সপ্তাহে লামিয়া ফোন করে জানিয়েছিল, ইয়াসিন তাকে মারধর করেছে।
লামিয়ার মেজ বোন রত্না বলেন, “ঈদের কয়েকদিন আগেই জেল থেকে বেরিয়ে ইয়াসিন ফের নেশা করার জন্য লামিয়াকে মারধর শুরু করে। আমার প্রতিবন্ধী বড় বোন স্বপ্নাকে সে অনেক মারধর করেছে। মাদক কেনার টাকা দেয়নি বলেই তাদের হত্যা করেছে। শিশু সন্তানটাকেও নির্মম ভাবে মেরেছে ইয়াসিন।”
পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তাদের কাছে মনে হচ্ছে, পারিবারিক কলহ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকার বড় বাড়ি আঙিনার সামনের একটি পরিত্যাক্ত জায়গা থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা জড়ো হন। এসময় ইটের স্তুপ সরিয়ে কয়েখটি বস্তা দেখতে পান তারা। পরে পুলিশ এসে মাটির নীচে পুঁতে রাখা বস্তাগুলো বের করে। এসময় দুই নারী ও এক শিশুর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার হয়।
লামিয়া পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তিনি তার মানসিক প্রতিবন্ধী বোন স্বপ্না ও সন্তান আব্দুল্লাহকে নিয়ে স্বামী ইয়াসিনের সঙ্গে থাকতেন।
খণ্ডিত দেহগুলো নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসমিন আক্তার। তিনি বলেন, “এ ঘটনায় লামিয়ার স্বামী মোহাম্মদ ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ ইয়াসিনকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, চার থেকে পাঁচ দিন আগেই তিনজনকে হত্যার পর খণ্ডিত দেহ বস্তায় ভরে পুঁতে রাখে ইয়াসিন। পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।”
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ হত্যা
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh