
ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ
আগামী ২ জুন, অর্থ উপদেষ্টা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য নতুন বাজেট উপস্থাপন করবেন। বাজেটের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, মানুষের কৌতূহল ও উদ্বেগ ততই বাড়ছে। বৈশ্বিক মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের সংকট, মূল্যস্ফীতির চাপ এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঘাটতির মতো বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে আসন্ন বাজেট কতটা বাস্তবমুখী ও গণমুখী হবে, সেটিই প্রশ্ন।
সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের বাজেট সাজাচ্ছে। এ ছাড়া গুরুত্ব পাচ্ছে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ তৈরি, জ্বালানি সাশ্রয়, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের অগ্রাধিকার এবং সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর সম্প্রসারণ।
প্রশ্ন উঠছে এত কিছু কীভাবে সম্ভব? সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে, অথচ আয় বাড়ছে না। বাজেটে যদি খাদ্য, জ্বালানি ও গৃহস্থালি খাতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে এই সংকট আরো গভীর হবে। এনবিআর এখনো কাক্সিক্ষত পরিমাণ রাজস্ব আদায়ে সফল হতে পারছে না। ফলে সরকার ঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, যা ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। আবার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে কম বরাদ্দ দেওয়ার প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদি মানবসম্পদ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করবে।
তবে কৃষি ও রপ্তানি খাতে টেকসই প্রণোদনা এবং এসএমই খাতকে উৎসাহিত করলে অর্থনীতির ভিত্তি আরো মজবুত হতে পারে। আবার প্রবাসী আয়ের ওপর উৎসাহ প্রদান এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ বাজেটকে শক্ত ভিত দিতে পারে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচন করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও কর্মসংস্থান খাতে অধিক গুরুত্ব দেওয়া গেলে বাজেট হতে পারে সংকটময় সময়ে আশার আলো।
মোদ্দাকথা, আমরা এমন বাজেট চাই, যা সাধারণ মানুষের স্বস্তির কথা বলে, দারিদ্র্য বিমোচন এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের রূপরেখা টেনে দেয়।