
ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ
সরকারি
চাকরি আইন, ২০১৮-এর ‘অধিকতর সংশোধন’ হিসেবে ২৫ মে ২০২৫ তারিখে জারি হওয়া সরকারি চাকরি
(সংশোধন) অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে কয়েক দিন ধরে সচিবালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করছিলেন
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সংশোধিত আইন অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি এমন কর্মকাণ্ডে
যুক্ত হন যা ‘অনানুগত্য’ হিসেবে বিবেচিত, তবে সেই কর্মচারী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের
একক সিদ্ধান্তে শাস্তিযোগ্য হবেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে আইনটির অপব্যবহার হতে পারে। কারণ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নিজেই
তদন্তকারী, বিচারক ও শাস্তিদাতা। ফলে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রত্যাহারের দাবি
করছেন তারা। কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে আন্দোলনকারীদের অবস্থান যেন জনগণের প্রত্যাশিত
সংস্কারের বিরোধী না হয় এবং এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনো মহল যেন রাজনৈতিক স্বার্থ
উদ্ধারের অপচেষ্টা না করে। চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল নিয়ে যত বাগবিতণ্ডা জিয়াউদ্দীন
আহমেদ সাবেক নির্বাহী পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম বন্দরের ৯টি টার্মিনালের মধ্যে
একটি পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার যে উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার
নিয়েছে তার সমালোচনা এখন তুঙ্গে।
সম্প্রতি
চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্বের তুলনায়
পিছিয়ে থাকা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার ভার পৃথিবীর সেরা কোম্পানির হাতে ছেড়ে দিতে
হবে এবং এই ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা মানুষকে বোঝাতে হবে। সরকার এরই রাষ্ট্র বা সরকার
কোনো একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় পরিচালিত হয় না; এর মূল লক্ষ্য জনগণের
সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নৈতিক দায়িত্ব
জনগণের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষা করা। তা ভুলে নিজের দাবি আদায়ের জন্য জনজীবনকে জিম্মি
করে ফেলা গ্রহণযোগ্য নয়।
আন্দোলনের
নামে প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হলে এর সরাসরি প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর। এমনকি
বাজেট প্রণয়ন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ
প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আশার কথা, আন্দোলনরতদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে কর্মচারী
নেতাদের সঙ্গে অবশেষে বৈঠকে বসেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা এবং আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত
করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সমস্যা যত জটিলই হোক না কেন, আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান
সম্ভব