
পাখির কলকাকলিতে রোজ মুখরিত ময়নাদ্বীপ। ছবি: নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
শত সহস্র পাখির কলকাকলিতে রোজ মুখরিত হয়ে ওঠে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ময়নাদ্বীপ। পাখিদের এমন কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙছে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের।
ময়নাদ্বীপে এমন গুঞ্জন ছড়াচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি হয়ে আসা বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরা। এরই মধ্যে ময়নাদ্বীপকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
দিনভর জলকেলি, খুনসুটি সেই সঙ্গে কিচির-মিচির শব্দে কম্পিত হচ্ছে চারপাশ, কখনো পালকের ভেতর মুখ গুঁজে নিশ্চুপ রোদ পোহানো, কখনো আবার তারা একঝাকে ডানা মেলছে আকাশে। প্রতিদিনের এমন দৃশ্য দেখতে ক্যাম্পাসে ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরা। প্রতিবছরই শীত আসলেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নোবিপ্রবিতে এভাবে ছুটে আসে অতিথি পাখি। সাধারণত শীতে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে পাখিরা আসে।
নোবিপ্রবির ময়নাদ্বীপ নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়ায় অতিথি পাখিরা এখানে অবস্থান করে। অতিথিদের নিরাপত্তা ও অবৈধ শিকার রোধে প্রথমবারের মত এবার জনসচেতনতা ব্যানার টানিয়েছে প্রশাসন। তবে, এসব জমিতে প্রতিবছর চাষাবাদ করা হয়। এতে পাখিরা অনেক সময় নিরাপদ আশ্রয় না ভেবে পাড়ি জমায় অন্যত্র।
শিক্ষার্থীরা বলছে, শীত মৌসুমে চাষাবাদ না করে এভাবে প্রতি বছর ময়নাদ্বীপ অতিথি পাখিদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে বরাদ্দ রাখলে অতিথি হয়ে আরো বেশি পাখি আমাদের ক্যাম্পাসে আসবে এবং এতে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
এসব দৃশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনে যেমন এক প্রশান্তি আনে তেমনি ঘুরতে আসা বিভিন্ন মানুষের মনকে আকৃষ্ট করে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিনিয়তই বাইরের মানুষ ভিড় করছে অতিথি পাখিদের গুঞ্জন শুনতে, দেখতে। চারপাশের যান্ত্রিকতার মধ্যে থেকে যখন সবার মন, চোখ, কান ক্লান্ত, তখন এমন দৃশ্য উপভোগ করতেই ছুটে আসে তারা তাদের অযান্ত্রিক জীবন্ত আত্নাকে খুঁজতে।
প্রতি বছর পূর্ব ইউরোপ, সাইবেরিয়া, মধ্য এশিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, উত্তর মিয়ানমার, কাশ্মীর, হিমাচল, তিব্বত, পশ্চিমের আরব সাগর ও আফ্রিকা থেকে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশে এই অতিথি পাখিরা আসে। এরা পরিযায়ী পাখি নামেও পরিচিত।