ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: খামেবন্দি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন

ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:২৫
-63fdac6bd46e7.jpg)
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম আগামী ৪ মার্চ পর্যন্ত ছুটিতে আছেন। তিনি ছুটিতে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট খামবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি না ফেরা পর্যন্ত এই প্রতিবেদনটি সিলগালা অবস্থায় থাকবে।
গণমাধ্যমকে এমনটি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়সারা কাজ এগুলো। উপাচার্যের অনুপস্থিত কালে উপ-উপাচার্য আছেন। চাইলে তিনিও কাজটি করতে পারেন। কিন্তু তারা তাকিয়ে আছেন হাইকোর্টের দিকে। যেটা লজ্জাজনক। আমরা ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের স্থায়ী ছাত্রত্ব বাতিল চাই।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের দায় এড়াতে হাইকোর্টের দিকে তাকিয়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন আছে। সে মোতাবেক এই ঘটনার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ উচিত ছিল। হল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ব্যর্থ।
এদিকে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনের স্থায়ীভাবে আবাসিকতা বাতিল করেছে হল কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
তিনি বলেন, ঘটনার সত্যতা মিলেছে। এতে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম ইসলাম, হালিমা খাতুন উর্মি, ইশরাত জাহাম মীম ও মায়োবিয়ার সিট বাতিল করা হয়েছে। একইসাথে স্থায়ীভাবে আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে। আগামী ১ মার্চের মধ্যে তাদের সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, উপাচার্য স্যার ছুটিতে আছেন। আগামী শনিবার তিনি ক্যাম্পাসে ফিরতে পারেন। তখন বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় নবীন ওই ছাত্রীকে। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা ওই ছাত্রীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়।