
নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ছবি: সংগৃহীত
পহেলা বৈশাখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে র্যালী বা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
আজ বৃহষ্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নতুন নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
পৃথক নির্দেশনায় রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে ও ধর্মীয় অনুভূতি বজায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মাদ্রাসাগুলোতে মঙ্গল শোভাযাত্রার পরিবর্তে কোরআন তেলাওয়াত করতে বলা হয়েছে।
মাউশির সহকারি পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) রূপক রায় স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু করতে হবে।
অনুষ্ঠানে পবিত্র রমজানের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা করতে হবে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে ও ধর্মীয় অনুভূতি বজায় রেখে যথাযথ আড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে।
সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজকে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে এসব কর্মসূচির আয়োজন করতে বলেছে অধিদপ্তর।
এর আগে, গত ১১ এপ্রিল মাউশি থেকে জারি করা এক আদেশে পহেলা বৈশাখে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে র্যালির আয়োজন ও মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অপরিমেয় বিশ্ব সংষ্কৃতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রচার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সে আদেশটি আজ বৃহষ্পতিবার বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পহেলা বৈশাখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শোভাযাত্রা করার প্রশ্নে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। শোভাযাত্রার পরিবর্তে এখন জাতীয় সংগীত ও কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ পালনের নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ মাদ্রাসা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এ নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, মাহে রমজানের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও কোরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে হবে। আদেশটি সব বেসরকারি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, সুপার ও ইবতেদায়ি প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সব মাদ্রাসায় মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
গত ২০ মার্চ বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পহেলা বৈশাখ উদযাপন ও র্যালী করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংষ্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
গত ২৮ মার্চ সংষ্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়।
ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অপরিমেয় বিশ্ব সংষ্কৃতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রচার করতে হবে। সকালে আবশ্যিকভাবে শিক্ষার্থীদের নিয়ে র্যালি করতে হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে।