নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা জরুরি

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৩, ১৩:২৩

প্রতীকী ছবি
বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য উল্লেখযোগ্য। ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত এ ধর্মীয় উৎসব প্রত্যেক মুসলমানের জন্য বয়ে আনে অপার মহিমা। বাংলাদেশেও অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে থাকে দিনটি। কিন্তু এই উদযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাগলাঘোড়া।
নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম লাগামছাড়া হয়ে পড়ায়, যেখানে প্রয়োজনীয় জিনিসের জোগান দিতেই পরিবারগুলো হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে ঈদ উৎসবের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ তাদের কাছে কঠিন পরীক্ষা। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ দরকার। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাওয়া দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি সহনশীল পর্যায়ে আনা অতিজরুরি।
চলতি বছর ঈদুল ফিতরে ঘরের টানে বাড়ি ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা বেশ নির্বিঘ্ন ছিল। তবে এবার ঈদুল আজহার আগে বৃষ্টি, সড়কের পাশে ফলের বাজার, পশুবাহী ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং সড়কের পাশে অস্থায়ী পশুর হাট যানবাহন চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এতে যানজটও দীর্ঘ হতে পারে। আমরা আশা করব মানুষের ভোগান্তি দূর করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকবে। পাশাপাশি অতি গতিতে যানবাহন চালানো, সড়ক নীতিমালা আইন ও ওভারটেকিং বিষয়ে চালকরা সচেতন থাকবেন।
এদিকে কোরবানির পশু নিয়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রান্তিক খামারিরা রাজধানীকেন্দ্রিক হাটগুলোতে ভিড় জমিয়ে থাকেন। এ সময় পশুবাহী ট্রলারে চাঁদাবাজিসহ নৌপথে ডাকাতি ও সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগ পাওয়া যায়। কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই ব্যবসায়ীরা যেন ঢাকায় কোরবানির পশু নিয়ে আসতে এবং বিক্রির পর নিজ গন্তব্যে নিরাপদে ফিরতে পারেন সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে।
যত্রতত্র বা রাস্তার পাশে পশুর হাট স্থাপনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি ও নীতিমালা মেনে চলতে হবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কোরবানির জন্য কিছু স্থান নির্ধারণ করে ওই সব স্থানেই পশু কোরবানি করার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানায়। তবে নির্ধারিত স্থানের বাইরেই বেশির ভাগ পশু কোরবানি হয়। এ জন্য দুই সিটি করপোরেশনকে মহানগরের সব পাড়া-মহল্লা থেকে কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত সরিয়ে ফেলার জন্য তৎপর থাকতে হবে। নগরবাসীকেও সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে। নিজ স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ব্লিচিং পাউডার, জীবাণুনাশক স্যাভলন বা অন্যান্য অ্যান্টিসেপ্টিক দিয়ে বাড়ির আঙিনা, ড্রেন ও চারপাশ পরিচ্ছন্ন রেখে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। কেননা ব্যক্তি স্বাস্থ্য সচেতনতা সমগ্র সমাজের সুস্থতার একক। এভাবে সিটি করপোরেশনের কাজও অনেকটাই সহজ হয়ে আসবে।
সবাইকে ঈদুল আজহার অগ্রিম শুভেচ্ছা।