অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাবি শিক্ষক বরখাস্ত

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৩, ১৯:৪৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দীনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ রবিবার (৯ জুলাই) তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম।
তিনি জানান, উচ্চ আদালতে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখায় সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৪২ ধারা অনুযায়ী ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদ ও চাকরি থেকে তাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসার বাইরের ম্যানহোলে অধ্যাপক তাহেরের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সেদিন তার ছেলে সানজিদ আলভী আহমেদ মতিহার থানায় মামলা করেন।
মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। এছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা ২০০৮ ও ২০০৯ সালে আপিল করেন। আপিলের ওপর ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ে তাহেরের একসময়ের ছাত্র, পরে বিভাগীয় সহকর্মী মহিউদ্দিন ও তাহেরের বাসভবনের তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। অপর দুই আসামি জাহাঙ্গীরের ভাই আবদুস সালাম ও তার আত্মীয় নাজমুলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। এসবের ওপর শুনানি শেষে গতবছরের ৫ এপ্রিল হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে তিন দণ্ডিত পৃথক আবেদন (রিভিউ) করেন। এরমধ্যে, মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মহিউদ্দিনের করা আবেদনের (রিভিউ) পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি বোরহান উদ্দিন গতবছরের ৪ অক্টোবর মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
এবছরের ২ মার্চ দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের রিভিউ খারিজ করে রায় দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৮ সদস্যের বেঞ্চ। ফলে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এমাসেই মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে। কারাবিধি অনুযায়ী, আগামী ২৫ জুলাই থেকে ১ আগস্টের মধ্যে ফাঁসি কার্যকরের কথা। তবে ২৫ জুলাইয়ের পর চলতি মাসেই যেকোনো দিন রাতে ফাঁসি কার্যকর করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।