
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ বাস আটকে তল্লাশি। ছবি: জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্টাফ বাস আটকে তল্লাশির ঘটনা ঘটেছে। বিএনপিপন্থী নেতাকর্মীরা মহাসমাবেশে যোগ দিচ্ছেন এমন সন্দেহের বসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাস আটকে তল্লাশি চালায়।
আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সাতটায় ঢাকাগামী স্টাফ বাসে এ তল্লাশি চালায় বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী সকাল সাতটার স্টাফ বাস ক্যাম্পাস সংলগ্ন সিএন্ডবি এলাকায় পৌঁছালে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী সেটি থামায়। এসময় তারা বহিরাগত কোন যাত্রী বাসে উঠানো হয়েছে কিনা সেবিষয়ে চালক, হেলপার ও যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং বাসে করে কেউ বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছে কিনা তা তল্লাশি করে।
তবে তল্লাশির কথা অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যবহার করে এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বাবুলের নেতৃত্বে ২০ জন বহিরাগত বিএনপির সমাবেশে যাচ্ছিলো। তাই সেটি যাচাই করতে বাস চালককে ফোন দিয়ে বাস থামানোর নির্দেশ দেন। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পূর্বেই বহিরাগতরা বাস থেকে নেমে চলে যায়। ছাত্রলীগ নেতারা আরো জানায়, বাবুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন।
ঘটনাস্থলে থাকা মীর মশাররফ হোসেন হল শাখার ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী সাগর বলেন, আমরা বাসে তল্লাশি করিনি। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বহিরাগতরা ঢাকা যায়। আমরা সেটি চেক করে দেখেছি। তখন বাসে বহিরাগত ৭/৮ জন দেখি। যারা ক্যাম্পাসের কেউ না। তাদের কথা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় নেমে যেতে বলি। তবে পরে বাসটি ক্যাম্পাস ছেড়ে সিএন্ডবি এলাকায় গেলে বাবুল ভাইয়ের নির্দেশে প্রায় বিশ জনের মতো বহিরাগত লোক বাসে উঠেছে বলে বাসে থাকা এক ছোট ভাই জানায়। তখন আমরা গিয়ে সেটি থামিয়ে বাস চালক ও হেলপারকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বাবুল ভাইয়ের নির্দেশে বাসে বহিরাগত লোক উঠিয়েছে বলে স্বীকার করে। স্বীকারোক্তির ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বাবুল গণমাধ্যমকে বলেন, আমার নেতৃত্বে কোন বহিরাগত কেউ বাসে উঠেনি। এটা একটি অসত্য অভিযোগ। ছাত্রলীগ বাস আটকিয়ে কেউ বিএনপির সমাবেশে যাচ্ছে কিনা তা তল্লাশি করেছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আওলাদ হোসেন বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। যেহেতু এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি বাস এবং কেউ যদি এ বাস আটকিয়ে তল্লাশি করে থাকে তবে তা ঠিক করেনি।
তল্লাশির অভিযোগের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এছাড়া কমিউনিটি বাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যতীত শিক্ষার্থীরা তল্লাশি করতে পারে কিনা সে বিষয়ে জানতে প্রক্টর আ.স.ম. ফিরোজ-উল-হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।