নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ইবি শিক্ষকের বিচার দাবি স্ত্রীর

ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ১৫:৫৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর, হত্যার হুমকি ও হত্যা চেষ্টা, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি এবং শ্বশুরের টাকায় চাকরির দেনা পরিশোধসহ ডজন খানেক অভিযোগ তুলেছে তার স্ত্রী জয়া সাহা। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জয়া ও তার পরিবার।
গতকাল মঙ্গলবার (৫ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ এবং ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও তার বাবা-মা। পরে ওই শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষকের স্ত্রী জয়া।
জানা যায়, নির্যাতনের শিকার অধ্যাপকের স্ত্রী জয়া সাহা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। তিনি নাটোরের উপরবাজার উপজেলার রতন কুমার সাহার বড় কন্যা। এদিকে সঞ্জয় কুমার পাবনা জেলার চড়াডাঙ্গা গ্রামের সুশান্ত কুমার সাহার ছেলে। ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়। বিয়েতে জয়ার বাবা উপহার হিসেবে ২৫ লাখ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় ফার্নিচার দেয়। তবে বিয়েরে পর থেকেই তাদের উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য শুরু হয়। গত বছরের জুন মাসে স্ত্রীকে জোরপূর্বক শ্বশুরবাড়ি রেখে আসে সঞ্জয়। তারপর থেকে উভয়েই একবছর আলাদা থাকছেন। তাদের সংসারে সাড়ে চার বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। নির্যাতন নিয়ে আদালতে মামলাও করেছেন বলেও জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে জয়া সাহা বলেন, বিয়ের পর কিছুদিন পার হলে সঞ্জয় আমার উপর পাশবিক নির্যাতন শুরু করে আমার জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। কারণে অকারণে আমাকে মারধর শুরু করে। তার পাশবিকতার হাত থেকে আমার ছোট ছেলেটিও রক্ষা পায়নি। আমি এই শিক্ষক নামের অভিযুক্তের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
জয়ার বাবা রতন কুমার সাহা বলেন, ‘সঞ্জয় আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকে অমানবিক নির্যাতন করেছেন। এক বছর আগে মেয়েকে আমার বাড়ি রেখে গেছেন। এরপর আর যোগাযোগ করেনি। আমি একজন বাবা হিসেবে এই অন্যায়ের বিচার চাই।’
অভিযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, ‘এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। আমার স্ত্রী সন্তানের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা। আমি তার সঙ্গে সংসার করতে চাই। পারিবারিক বিষয়ে এর বেশি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
প্রসঙ্গত, এরআগেও সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে তার বিভাগের এক ছাত্রীকে নিপীড়ন ও হুমকির অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে মেয়ের বাবা অভিযোগ করলে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। নির্যাতনে ওই ছাত্রী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে বলেও অভিযোগ রয়েছে।