শিক্ষকদের অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতিতে সেশন জটের শঙ্কা শিক্ষার্থীদের

এস এম তাওহীদ, জাবি
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১২:৫২

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত ‘প্রত্যয়’ নামে পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তিকরণ ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে ১ জুলাই থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে শিক্ষকেরা। অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতির জন্য শিক্ষাজীবন দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, কর্মবিরতির জন্য গতকাল (১ জুলাই) নয়টি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে এমন এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন পরীক্ষার আগের দিন এসে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে পরীক্ষা কবে নাগাদ হবে তার কোন ঠিক নেই। এমন অবস্থায় আমারা খুবই উদ্বিগ্নতার সাথে দিন পার করছি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলা অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, নিজেদের স্বার্থে আন্দোলন করছে শিক্ষকেরা। তাদের পেনশন স্কিম যেমন বৈষম্যমূলক একইভাবে কোটা পদ্ধতি ও বৈষম্যমূলক। কিন্তু তাদেরকে কখনোই কোটার বিরুদ্ধে তো কথা বলতে দেখছি না।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোতাহার হোসেন বলেন, এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীসহ আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমরা চাই প্রশাসন আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিক, আমরা আমাদের কর্মস্থলে ফিরে যাই। আমরা তো আন্দোলন করছি ভবিষ্যৎ জাতির জন্য। মেধাবীরা যাতে শিক্ষকতা পেশায় না আসে সেই জন্য এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা অতিদ্রুত এই স্কিম বাতিল করুক যাতে মেধাবীরা এই মহৎ পেশায় আগ্রহ না হারায়।
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বশির আহমেদ বলেন, সর্বজনীন পেনশনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যুক্ত করা একটি অন্যায্য সিদ্ধান্ত। আমাদের বেতনের বাইরে অন্য কোন আয় নাই। চাকরির শেষে যে এককালীন টাকা পেতাম তা ও বন্ধ করা হচ্ছে। এতে করে শিক্ষকতা পেশায় মেধাবীরা আসার আগ্রহ হারাবে। আমরা আশা করছি সরকার দ্রুত আমাদের দাবি মেনে নিবে। এরমধ্যে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে আমাদের শিক্ষকেরা বেশি বেশি ক্লাস নিয়ে সেই ক্ষতি পূরণ করে দিবেন। এতে শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের কোন ক্ষতি হবে না বলে আশা করছি।
এদিকে শিক্ষকদের পাশাপাশি কর্মবিরতি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাজে বিরাজ করছে স্থবিরতা। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্ম বিরতির অংশ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার গতকাল রাতে (১ জুলাই) বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। লাইব্রেরি বন্ধের ঘোষণা আসার পর আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে লাইব্রেরি খোলা রাখতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।