সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা চাইলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০:৪৪
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও সমসাময়িক বাস্তবতার কারণে আপাতত কোন কর্মসূচি নেই বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
তবে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের ন্যায় চার দফা দাবি জানিয়েছেন তারা। যে দাবিরগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টিও উঠে আসে।
আজ শনিবার (২৭ জুলাই) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ।
বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এর আগে বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিস্থিতি এবং দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয় শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে হল খুলে দিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় সাধারণ জনগণকে কোন ধরনের মামলা বা হয়রানি করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক কোন ধরনের হয়রানি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও ক্যাম্পাস খোলার পর ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, ‘গত ১ জুলাই থেকে সারাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায় আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছি। আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মহামান্য আদালত কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় প্রদান করেন এবং সরকারের নির্বাহী বিভাগ তা অনুসরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বরাবরই শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলন করে আসছিলাম। কিন্তু আন্দোলন চলাকালীন দেশব্যাপি নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে আমাদের অনেক ভাই-বোন আহত ও নিহত হয়েছেন।’
আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ‘আমরা কারো অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে চাইনি। নির্বাহী বিভাগ আমাদের কোটা সংস্কারের দাবির প্রেক্ষিতে যে সমাধান করেছে, আমরা মনে করি তাতে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে।’
এসময় সারাদেশের শিক্ষার্থীদের দাবির পাশাপাশি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে চার দফা দাবি তুলে ধরে সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগ আমাদের কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে। আমরা অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী। তাই আমাদের উপর্যুক্ত দাবিগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকা এবং নানা বাস্তবতায় এই মুহূর্তে কোন কর্মসূচি নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা আমাদের পরবর্তী করণীয় আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানাবো।
পরিশেষে, আমরা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করছি যে, সন্ত্রাস ও সহিংসতার সাথে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং এটাকে আমরা ঘৃণা করি। তাই শিক্ষার্থীদের কোন প্রকার মামলা বা হয়রানি না করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কোটা সংস্কার দাবি আন্দোলনকারী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থী মাহমুদুল আলম রাজিব, ভূমিকা সরকার, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা। এসময় তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে হল খুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন কর্মসূচি ঘিরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়।