Logo
×

Follow Us

শিক্ষা

ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ

Icon

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৪৭

ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেনস্তা, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, কথা না শুনলে মার্ক কম দেওয়া ও ছাত্রদের জোরপূর্বক সমকামীতায় বাধ্য করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রধান ফটক অবরোধ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

জানা যায়, ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করা, শ্রেণিকক্ষে সবার সামনে ছাত্রীদের কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ, মেয়েদের ফোন দিয়ে বিরক্ত করা, ফেইক আইডি দিয়ে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুরে ওই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা দুপুর ২টায় প্রধান ফটক বন্ধ করে দুপুরের সিডিউলের বাস আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা প্রধান ফটক ছেড়ে দেন। দুপুর ৩টায় উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৭টি অভিযোগ এনে তার বহিষ্কারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দেন। এসময় উপাচার্য তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।

আন্দোলনকালে বিভাগের ছাত্রী লামিয়া হোসেন বলেন, তিনি আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে খোঁজখবর নিতেন। আমার চরিত্র নিয়ে বিভিন্ন সময় ক্লাসে সবার সামনে বাজে মন্তব্য করেছেন৷ সবার সামনে আমাকে হেনস্তা করে বলেছেন, তুমি কোন দোকানের লাড্ডু খাও তাও আমি জানি। কোন ছেলের সঙ্গে ঘুরো সব খবর আমার কাছে আসে। আমি কোন জামা পরলাম, কার সঙ্গে কোথায় ঘুরতে গেলাম এসব নিয়ে ক্লাসে সবার সামনে অপমান করতেন। এছাড়া তিনি আমাকে উল্টা করে ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। বিভাগের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী তার দ্বারা হ্যারেজড। 

আরেক ছাত্রী মৌমিতা তাসনিয়া বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধব একসঙ্গে আড্ডা দিলে রাতে তিনি আমার বন্ধুদের কল দিয়ে বাপ-মা তুলে গালি দিতেন। ক্লাসে সবাইকে বলতেন তোমাদের তো রক্তের সমস্যা, তোমাদের বাপ-মায়ের ঠিক নেই। মেয়েদেরকে বাজারের মেয়ে ও নর্তকী বলে গালি দিতেন। ফেসবুকে আমাদের ছবি দেখে বলতেন, সব তো কাস্টমার ধরার ধান্দা। এছাড়া ক্লাসে বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে কথা বলতেন তিনি।

বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের আঁখি আলমগীর বলেন, তিনি ফেইক আইডি দিয়ে আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় চ্যাটিং করতেন। শ্রেণিকক্ষে আমার পোশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এছাড়া আমি পর্দা করতে শুরু করলে তিনি আমাকে ‘হুজুর সেঁজেছে’ বলে কটুক্তি করতেন। পরে আমাকে জীবননাশের হুমকিও দেন ওই শিক্ষক। আমি তার বিচার চাই।

মিরাজ হাসান নামের এক ছাত্র বলেন, হাফিজ স্যার আমাকে পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও নেশা দ্রব্যের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আমি রাজি নাহলে তিনি আমার উপর মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন হুমকি দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। 

বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আতিফা কাফি বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি। উপাচার্য স্যার তদন্ত কমিটির আশ্বাস দিয়েছেন। তদন্ত কমিটি পরবর্তী পদক্ষেপ নিবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তারা সকল অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। সেখানে আপনারা সবাই সবার ব্যক্তিগত সমস্যা শেয়ার করবেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেব।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫