Logo
×

Follow Us

শিক্ষা

রাবি শিক্ষার্থীদের উপর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হামলা

Icon

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১:০৫

রাবি শিক্ষার্থীদের উপর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হামলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা। হামলায় এক ছাত্রলীগ কর্মীসহ অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে হামলাকারীরা আহত ছাত্রলীগ কর্মীকে থানায় সোপর্দ করেন।

গতকাল ২৪ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলেও ছাত্রলীগ কর্মীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। আহত ছাত্রলীগ কর্মী হলেন আজিজুল হক আকাশ।

ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ২৫ শিক্ষার্থী ট্রেনযোগে পঞ্চগড় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন যায়। সেখানে তাদের ‘বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস’ নামে একটি ট্রেন রাত ৯টায় যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও ৯টা বেজে ২০ মিনিট পার হলেও যাত্রা শুরু করে না। তখন তারা সবাই ট্রেনেই অপেক্ষা করছিলেন। হটাৎ করে অচেনা ৪০-৪৫ জন ব্যক্তি এসে ট্রেনের জানালা দিয়ে তাদের কাছে বিভাগের নাম জানতে চায়। পরে শিক্ষার্থীরা বিভাগের নাম জানালে তারা বিভাগের সানি নামে এক শিক্ষার্থী ট্রেনে তাদের সাথে আছে কিনা জানতে চায়। সানি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। পরে শিক্ষার্থীরা জানায় সেই নামে ট্রেনে তাদের সাথে কেউ নেই।

সানিকে না পাওয়ার পর আরেক শিক্ষার্থীকে দেখিয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের একজন বলেন এই যে সানি। পরে তাকে বাইরে আসতে বলে। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী তখন বলে সে সানি না এবং সে তার পরিচয়পত্র দেখায়। আরেক শিক্ষার্থী আজিজুল হক আকাশকে সানি ভেবে ধাওয়া শুরু করে হামলাকারীরা। তখন আকাশ ভয় পেয়ে ট্রেন থেকে নেমে দৌড় দেয়। সেসময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আকাশকে ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে হকিস্টিক দিয়ে তার মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে আকাশের মাথা ফেটে যায়। আকাশ জানায় সে ওই শিক্ষার্থী না যাকে তারা খুঁজছে।

আকাশকে যখন ধাওয়া শুরু করে তখন তাকে বাঁচাতে তার পেছনে বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীরাও দৌড়ে যায়। এর পরে আকাশকে ধরে অচেনা ব্যক্তিরা নানাভাবে মারধর শুরু করে। তখন শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাদের বন্ধুকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তারাও মারধরের শিকার হয়। দীর্ঘসময় ধরে শিক্ষার্থীদের সাথে অচেনা ব্যক্তিদের ধস্তাধস্তি হয়। শিক্ষার্থীরা বার বার বলে, যাকে সন্দেহ করে মারা হচ্ছে সে সানি না। তাদের মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এসময় আকাশের মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নেন অচেনা ব্যক্তিরা। পরে আকাশকে তারা অন্য কোথাও নিয়ে যেতে চান এবং শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার জন্য বলে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা জোরজবরদস্তি করলে তারা আকাশকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল (সাজ্জাদ বকুল) বলেন, গতকাল রাতে বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকসহ আমরা থানায় গিয়েছিলাম। প্রথমে আহত আকাশের প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি। তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না তা থানার ওসি জানাতে পারেননি। শুধু বলেছেন যেহেতু তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে তাই বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে। এ অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির কথা বলা হলে তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমরাও হাসপাতালে পুলিশের সাথে ছিলাম। আমরা এখনও সার্বিকভাবে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।

এ বিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদী মাসুদ বলেন, আকাশের চিকিৎসা শেষে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সে এখন পুলিশি হেফাজতে আছে।

তবে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং কে বা কারা পুলিশের সোপর্দ করেছে জানতে চাইলে, তিনি (ওসি) ‘বাহিরে আছি’ বলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫