Logo
×

Follow Us

শিক্ষা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: আবসিক হলে গাদাগাদি, শ্রেণিকক্ষ ভাগাভাগি

Icon

ববি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৬

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: আবসিক হলে গাদাগাদি, শ্রেণিকক্ষ ভাগাভাগি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আবাসন সংকটের দৃশ্য। ছবি: ববি প্রতিনিধি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আবাসন সংকটের কারণে হলগুলোতে একজনের বেডে গাদাগাদি করে থাকছেন দুজন। নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ। প্রতিটি বিভাগের মাত্র একটি করে শ্রেণিকক্ষ। ফলে একটি বিভাগের পরীক্ষা নিতে হলে অন্য বিভাগের শ্রেণিকক্ষ ভাগাভাগি করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির এমন বেহাল দশায় মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিবছর বিভাগের সংখ্যা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বাড়ানো হচ্ছে আসন সংখ্যা। ফলে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও। দীর্ঘদিন নতুন প্রকল্প না আসায় নানামুখী সংকটে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে ক্যাম্পাসের তালতলাসহ বিভিন্ন উন্মূক্ত স্থানে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। যেখানে প্রতি বিভাগের কমপক্ষে ৩-৪টি কক্ষের প্রয়োজন, সেখানে ববিতে ১১ হাজার শিক্ষর্থীর জন্য মোট শ্রেণিকক্ষ রয়েছে মাত্র ৩১টি। এর মধ্য থেকে ১৫টি বিভাগকে মৌখিকভাবে একটি করে শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই শ্রেণিকক্ষও অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় সময় অপচয়ের কারণে প্রতিদিন নির্ধারিত ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। পাঠদানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগান আর মুক্তমঞ্চেও ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। তাই নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ববিতে ১১ হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র চারটি হল রয়েছে। দুটি ছাত্র হল, দুটি ছাত্রী হল। এই চারটি হলে মোট ১৮৬৭ জন শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। অর্থাৎ মোট শিক্ষার্থী সংখ্যার হিসেবে মাত্র ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন। বাকি ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে অন্যত্র মেস ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে। এতে করে নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে তাদের।

বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বদরুজ্জামান বলেন, এক ব্যাচের ক্লাস হলে অন্য ব্যাচ দাঁড়িয়ে থাকে। কোনো কোনো সময় দেখা যায়, একটা ক্লাস অ্যাকাডেমিক ভবনে অন্যটা প্রশাসনিক ভবনে। ক্লাসরুমের সংকট তো আছেই তার ওপর প্রতি বছর আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করায় সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং সঠিক শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। যেটার ফলপ্রসূ সমাধান জরুরি।

শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, একজনের বেডে জোড়াতালি দিয়ে গাদাগাদি করে দুজনকে থাকতে হচ্ছে । চারজনের কক্ষে আটজন থাকায় পড়াশোনার পরিবেশও নেই। পরীক্ষার সময় আরো বেশি সমস্যায় পড়তে হয় । তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা ।

বাংলা বিভাগের প্রভাষক তাইয়্যেবুন নাহার মিমি বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকট বহুদিনের। তাই সেশনজট এড়াতে নিয়মিত পাঠদান নিশ্চিতে অনেক শিক্ষকই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ক্লাস নিয়ে আসছেন।

কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন তানভীর কায়সার বলেন, ক্লাসরুমের সংকট রয়েছে এটা সত্য। আমাদের শিক্ষকরাও এক রুমে তিনজনের বসতে হয়। এর জন্য অবকাঠামো নির্মাণ জরুরি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, বর্তমানে একাডেমিক ভবন ও হল নির্মান আমার প্রয়োজন লিস্টের এক নম্বরে রয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে নিয়মিত মন্ত্রণালয়ে কথা বলছি। আশা করি, দ্রুত শিক্ষার্থীদের সুসংবাদ জানাতে পারব।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫