বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) লাইব্রেরি ও দুইটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামের ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। বঙ্গবন্ধু হলের পরিবর্তে ‘বিজয় ২৪’, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘কবি সুফিয়া কামাল’ হল ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত লাইব্রেরির পরিবর্তে ‘কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার’ নামকরণ করে ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন তারা। আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নতুন নামের ব্যানার টাঙিয়ে দেন।

জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক হল ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির নাম পরিবর্তনের লিখিত দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে গত ২ ডিসেম্বর হলের নাম পরিবর্তন বিষয়ক কমিটি গঠন করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে কমিটি গঠনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে হয়নি কোনো অগ্রগতি বা সিদ্ধান্ত।

নাম পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কালক্ষেপণের কারণে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মঙ্গলবার দুপুরে তিনটি স্থাপনার নাম ঢেকে দিয়ে নতুন নামের ব্যানার টাঙিয়ে দেন।

এ বিষয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আমরা হলের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু পাঁচ মাস অতিক্রম হয়ে গেলেও এখনো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরদের নাম বহাল আছে। প্রশাসন থেকে নাম পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। তাই, আমরা হলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান ওরফে সিফাত বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে অনেক আগেই স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। কিন্তু এতদিন হয়ে গেলেও প্রশাসন নাম পরিবর্তন করতে পারেনি। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা মিলে নাম পরিবর্তন করে ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই প্রশাসন এই নাম গুলো বহাল রাখুক।

শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মনোয়ারা বেগম বলেন, নাম পরিবর্তনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন, যেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিও রয়েছে। নাম পরিবর্তনে আমাদের কাজ চলমান ছিল। তবে কী নাম হবে তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসিনি। হঠাৎ করে আজ দেখলাম কিছু শিক্ষার্থী কবি সুফিয়া কামাল হল নাম দিয়ে ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন।

হল ও লাইব্রেরির নাম পরিবর্তন বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু হল প্রাধ্যক্ষ মো. মেহেদী হাসান বলেন, হলের নাম পরিবর্তন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে একটি মিটিং করেছি। পরবর্তীতে উপাচার্যের সাথেও এই বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। কমিটি থেকে নামের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। শিক্ষার্থীরা যদি কিছু করে থাকে তবে সেটা তাদের জায়গা থেকে করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম বলেন, নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত যে কমিটি হয়েছে, সেই কমিটিতে বিভিন্ন নামের প্রস্তাবনা রাখা হয়। সেই নির্দেশনার ওপর ভিত্তি করে সিন্ডিকেট কল করে সদস্যরা একটি সিদ্ধান্ত নেবে। এর পরই নাম পরিবর্তন আসবে।