Logo
×

Follow Us

শিক্ষা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জিডি

Icon

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৪৩

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জিডি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) কেএম. সানোয়ার পারভেজ লিটন।

রেজিস্ট্রারের অপসারণ চেয়ে তার কার্যালয়ে তালা এবং কুশপুতুলে আগুন দেওয়ার অভিযোগে সোমবার এ জিডি করা হয়।

বরিশাল মেটোপলিটন পুলিশের বন্দর থানায় করা এ সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) ১০ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও অজানা আরও ১০-১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের কথা জানিয়েছেন থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।

অভিযুক্তরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের রাকিন খান, সাংবাদিকতা বিভাগের নাজমুল ঢালী, লোক প্রশাসন বিভাগের মোকাব্বেল শেখ, আইন বিভাগের তরিক হোসেন, ইংরেজি বিভাগের মিজানুর রহমান, ইংরেজি বিভাগের এনামুল হক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এম. ডি শিহাব, ইংরেজি বিভাগের তরিকুল ইসলাম, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের স্বপ্নীল অপূর্ব রকি ও রসায়ন বিভাগের রফিক।

রবিবার রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের অপসারণ দাবিতে তার কুশপুতুল পুড়িয়ে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা দেন একদল শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের দাবি, রেজিস্ট্রার ফ্যাসিস্টের দোসর ও ভোলার মনপুরা উপজেলার আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।

এছাড়া ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে গত ১৩ এপ্রিল সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্বিবদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকেই অধ্যাপককে স্বপদে ফিরিয়ে আনার দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে একদল শিক্ষার্থী। সেখানে চার দফা দাবি দিয়ে সময়সীমা বেঁধে দেন তারা।

মুহসিন উদ্দীন সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিল সদস্য ফিরে পেতে হাইকোর্টে একটি বেঞ্চে রিট করেন। ওই বেঞ্চ রিটটি আমলে না নিয়ে তা খারিজ করে দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছি। অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে আওয়ামী দোসর আখ্যা দিয়ে সিন্ডিকেট সদস্য থেকে অব্যাহতি দেন উপাচার্য। এমন স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন চালিয়ে আসছি। কিন্তু উপাচার্য আন্দোলন দমাতে মামলা করান।”

এবার ‘আওয়ামী দোসর’ রেজিস্ট্রারকে অপসারণের দাবি ওঠাতে গিয়ে উপাচার্যের চাপে পড়ে শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করতে গেলে সুনির্দিষ্ট অপরাধ না থাকায় মামলা গ্রহণ করিনি। তবে সাধারণ ডায়েরি করেন সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) সানোয়ার পারভেজ লিটন।

সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র। তারা বিভিন্নভাবে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে বেড়ায়।

ছাত্রদলের সাবেক সদস্য ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, “হামলা মামলা দিয়ে শিক্ষার্থীদের দমন করা যাবে না। খুনি হাসিনা যেভাবে হামলা মামলা দিয়ে বিরোধী মতকে অন্যায়ভাবে দমন করতে চেয়েছিলো; ঠিক একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই পথেই হাঁটছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করবে।”

আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কণ্ঠরোধ করতে জিডি এবং মামলার ভয় দেখাচ্ছে। এর আগেও তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন, যা এখনোও বহাল রয়েছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক ও জিডির ৭ নম্বর অভিযুক্ত এমডি শিহাব জানান, যৌক্তিক আন্দোলনকে দমন করতে ও শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাতে সাধারণ ডায়েরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমন ঘৃণিত পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাই।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের কাছে আপাতত ১০ শিক্ষার্থীর নামে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”

প্রক্টর সোনিয়া খান সনি বলেন, “আমিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি দেখেছি। তবে আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না “

তবে উপাচার্য শূচিতা শরমিনকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কোন সাড়া মেলেনি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫