পঞ্চগড়ে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকরির অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২০, ১৭:২০

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হওয়া সন্দেশ দিঘী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্তাজুল হক এবং শরীর চর্চা শিক্ষক জোসনা বেগমের বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকরি গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাহেরা বেগম এবং রতন বিলাশ বর্মণ, খকেন্দ্রনাথ রায়, মকছেদ আলী পৃথক পৃথকভাবে জেলা শিক্ষা অফিসার পঞ্চগড় ও জেলা প্রশাসক পঞ্চগড় বরাবর দুইটি লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে সাহেরা বেগম জানান, ২০০৫ সালে ৯ম/১০ম শ্রেণি খোলার নিমিত্তে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় জোসনা বেগমকে। কিন্তু দীর্ঘ দিন যাবত যে সমস্ত শিক্ষক নিয়োগ প্রাপ্ত আছে এবং এমপিও প্রাপ্তি হবে তাদের বাদ দিয়ে অর্থের লোভে জোসনা বেগমকে আকস্মিকভাবে প্রশিক্ষণ ছাড়া বিপিএড সনদ ক্রয় করে শরীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির জন্য কাগজপত্র প্রেরণ করে।
অন্য অভিযোগে আরো জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্তাজুল হকের এমপিওভুক্তির জন্য যে কাগজপত্র প্রেরণ করেছেন তার মধ্যে বিএড সনদটি বাজারে ক্রয়কৃত। প্রধান শিক্ষকের নামে একই অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক রতন বিলাশ বর্মণ, খকেন্দ্রনাথ রায়, মকছেদ আলী।
অভিযোগে দাখিলকৃত কাগজপত্র সুষ্ঠু তদন্ত না করা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ও শরীর চর্চা শিক্ষকের এমপিওভুক্ত না করা এবং সনদ জালিয়াতির জন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তির জোর দাবি জানান তারা।
শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাগজপত্রে ও অসংগতি দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার রেজাল্ট শিট, রেজুলেশন, শিক্ষকদের তথ্য শিটসহ বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিদ্যালয়ের শিক্ষক গন। শিক্ষক নিয়োগ ও সনদ জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আ. খালেক জানান, আমি বার বার এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলেছি। যদি এমন কিছু হয়, তাহলে সব কিছুর দায়ভার তাদের নিতে হবে।
আটোয়ারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তোবারক হোসেন সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সনদ যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে শরীর চর্চা শিক্ষক জোসনা বেগম বলেন, আমি বিপিএড করেছি বগুড়ায়। আমার সনদের সত্যতা যাচাই হয়ে যদি সঠিক হয় তো হবে, নাহলে হবে না।
এ বিষয়ে সন্দেশ দিঘী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইনতাজুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদকের সাথে দেখা করবেন বলেই ফোনটি কেটে দেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সনদ যাচাই করে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির আবেদন গ্রহণ করা হবে।