
মহামারি করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে ৬ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। একই সাথে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষাও করোনার কারণে স্থগিত রয়েছে। বন্ধ রয়েছে কলেজে ভর্তির কার্যক্রম।
''আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সিলেবাস কমিয়ে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে।''
তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার কথা জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর গোলাম ফারুক এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ।
এ ব্যাপারে মাউশি মহাপরিচালক প্রফেসর গোলাম ফারুক জানান, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সিলেবাস কমিয়ে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে।
সম্প্রতি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের এডুকেশন প্রোগ্রাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সিলেবাস কাটছাঁট ও বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়ে নিজ নিজ প্রস্তাবনা তুলে ধরেন মাউশি মহাপরিচালক প্রফেসর গোলাম ফারুক এবং ডিপিই'র মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের স্কুলের পাঠ বিরতিতে মন্ত্রণালয় পরিচালিত কর্মকাণ্ডের নানা দিক নিয়েও ব্র্যাক তাদের একটি জরিপের ফলাফল তুলে ধরে।
মাউশির মহাপরিচালক জানান, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে যাতে কোনো প্রকার বিরতি চলে না আসে সেই জন্য আমরা স্কুল বন্ধের মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে সংসদ টিভিতে বিষয়ভিত্তিক ক্লাস চালু করেছি। এটা এখনো চলছে। যদিও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এসব ক্লাসের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে; তারপরেও বলবো সরাসরি কিংবা অনলাইনে এসব ক্লাসের উপস্থিতি একেবারে কমও নয়।
মাউশির এক জরিপের তথ্য উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, স্বাভাবিক অবস্থাতেও ক্লাসের উপস্থিতি শতভাগ থাকে না বলে। তখনও প্রায় শতকরা ১৪ ভাগ শিক্ষার্থী ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে।
ডিসেম্বর মাসে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠানের বিষয়ে গোলাম ফারুক বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সিলেবাস কমিয়ে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে।
তবে, করোনার কারণে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাস খুব একটা ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন না প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ।
এ ব্যাপারে মো. ফসিউল্লাহ মনে করেন- প্রাথমিকের বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী ১৭ মার্চ থেকে রোজার ঈদের আগে স্কুল খোলা থাকার কথা ছিল ১৭ দিন আর ঈদের পরে স্কুল খোলা থাকার কথা ছিল ১০ দিন। সব মিলিয়ে স্কুল গত তিন মাস ধরে করোনার কারণে বন্ধ থাকলেও সেই হিসাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস মিস হয়েছে এক মাস। আর এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে পড়ালেখা চালিয়ে নেয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। সুতরাং ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়েও একটা প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
বিষয়টি মাথায় রেখে প্রত্যেক শ্রেণীর সিলেবাস কিভাবে সংক্ষিপ্ত করে শিক্ষার্থীদের চাপ কমানো যায় তা নিয়েও একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে বলে জানান তিনি।