প্রাথমিকে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিড়ম্বনা নিরসনে কারেকশন অপশন চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৫৩

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩২ হাজারের বেশি সহকারি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি গত মাসে প্রকাশিত হয়েছে।
তিন সপ্তাহে সাত লাখের বেশি চাকরিপ্রত্যাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করেছেন। গত ২৫ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই)সূত্র। অনলাইনে চাকরিপ্রত্যাশীরা আবেদন করতে গিয়ে বিড়ম্বণায় পড়ছেন। এই বিড়ম্বনা নিরসনে ওয়েবসাইটে কারেকশন অপশন যুক্ত করা হয়েছে। এবার সাড়ে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। তবে শূন্য আসন বৃদ্ধি পেলে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) পর্যন্ত সাত লাখ আবেদন জমা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন হবে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর গ্রেড ১৩ অনুযায়ী ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করতে গিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। তার মধ্যে একাডেমিক সার্টিফিকেট গ্রহণ না করা, বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত না থাকায় আবেদন সম্পন্ন না হওয়া, জেন্ডার (লিঙ্গ) নির্বাচনে ভুলসহ নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। অনেকে টেলিটকের হেল্পলাইনে ফোন করে অভিযোগ দিচ্ছেন, অনেকে আবার ডিপিইতে নানা মাধ্যমে অভিযোগ পাঠাচ্ছেন।
ডিপিইর মহাপরিচালক এ এম মনছুরুল আলম বলেন, অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগ আবেদন টেকনিক্যাল কারণে নানা ধরনের ভুলভ্রান্তি ধরা পড়ছে। এসব সমাধান করতে ওয়েবসাইটে কারেকশন অপশন যুক্ত করা হয়েছে। প্রার্থী সেই লিঙ্কে প্রবেশ করে তার অভিযোগ অথবা সমস্যা উল্লেখ করে পাঠালে তা সংশোধন করা হবে। আবেদন ফি জমা দেয়ার পরও এ টেকনিক্যাল সমস্যা সমাধান করা যাবে বলেও জানান তিনি।
আবেদন করবেন যেভাবে
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে https://dpe.teletalk.com.bd/apply/ অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। আবেদন গ্রহণ শেষ হবে ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। এ পদে প্রার্থীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদনের ফরম পূরণের নির্দেশনা পাওয়া যাবে। নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা করার পর অ্যাপ্লিকেশন কপি প্রিন্ট নিতে হবে। সঠিকভাবে পূরণকৃত অ্যাপ্লিকেশন কপির ইউজার আইডি দিয়ে আবেদন ফি জমা দিতে হবে। একবার আবেদন ফি জমা দেয়ার পর অ্যাপ্লিকেশন ফরম কোনো অবস্থায়ই সংশোধন বা প্রত্যাহার করা যাবে না। শুধু ইউজার আইডিপ্রাপ্ত প্রার্থীরা এই সময় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে পারবেন।
আবেদনকারী একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড পাবেন। ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সব সময়ের জন্য প্রার্থীকে সংরক্ষণ করতে হবে। প্রার্থীকে পরীক্ষার ফি বাবদ সার্ভিস চার্জসহ ১১০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। আবেদনকারীকে যেকোনো টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে যথাসময়ে প্রেরণ করতে হবে।
বয়সসীমা
আবেদনকারী প্রার্থীদের বয়স ২০ অক্টোবর তারিখে সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২৫ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর। প্রাথমিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ বছর পূর্ণ হওয়া প্রার্থীরাও আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। কারণ, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে এ বছর ২৫ মার্চ যাঁদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে, সরকারি চাকরিতে তাঁদের আবেদনের সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনের আলোকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছরের ২০ অক্টোবরে বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২৫ মার্চ ২০২০ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চে ৩২ বছর।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
আবেদনকারীকে যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।
আবেদন ফি
মোট আবেদন ফি ১১০ টাকা। যার মধ্যে অফেরতযোগ্য ১০০ টাকা আবেদন ফি ও ১০ টাকা টেলিটকের সার্ভিস চার্জ।