জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সুইমিংপুল সংলগ্ন মনপুরা এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আগুন লেগেছে। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩ টায় সেখানে আগুন লাগে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন ছাত্র ও নিরাপত্তা কর্মী প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আগুনে মনপুরা দ্বীপ সংলগ্ন এলাকার অনেকাংশ পুড়ে গেছে। কতিপয় বহিরাগত কর্তৃক আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেলেও কারা আগুন জালিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাবি শাখা ছাত্রলীগ কর্মী ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সবুজ শিকদার জানান, ‘দুপুরের পর আমি ও দুজন বড় ভাই সহ সুইমিংপুল এলাকায় হাঁটতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ ধোঁয়া দেখে সেখানে গিয়ে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। হাতের কাছে পানি দেয়ার সরঞ্জাম না থাকায় গাছের ডাল ভেঙে তা দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। এসময় হলের বন্ধুদেরও জানাই। পরে মোস্তাফিজ, পার্থ, জাফর ও আসিফ সেখানে এসে আগুন নেভাতে সাহায্য করে।’

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মীও আগুন নেভাতে সাহায্য করেন। পানি দিয়ে নেভানোর সুবিধা না থাকায় মনপুরা এলাকার অনেক জায়গাই পুড়ে যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল স্বাধীন বলেন, ‘বিকাল ৪ টার দিকে আগুনের কথা শুনতে পাই। সাথে সাথে সেখানে উপস্থিত হই। ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা সহ একসাথে চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমর্থ হই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্যদের কাছে জানতে পারি কতিপয় বহিরাগত অজ্ঞাতনামা লোক আগুন জ্বালিয়ে চলে যায়। কারা আগুন জালিয়েছে তাদের এখনো চিহ্নিত করা যায় নি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রতি বছরই এমন আগুনের ঘটনা ঘটছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পরিবেশ। বিগত বছরগুলোতেও শীতের শেষের দিকে এ ধরনের আগুনের সূত্রপাত বেশী হয়। এতে ছোট কীটপতঙ্গ এবং বৃক্ষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিশেষত এ সময়ে ঝরা পাতা কিংবা ঘাসের নিচে টিকটিকি, ব্যাঙ, সাপ, গিরগিটিসহ ছোট ছোট অনেক প্রাণী আশ্রয় নেয়। এ ধরনের আগুনের ঘটনায় সব প্রাণী মারা যায়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এ প্রাণীগুলোর অনেক অবদান রয়েছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) মো. আব্দুর রহমানকে অনেকবার ফোন করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

জানা যায়, প্রতিবছরই শীতের শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় এরকম আগুনের সূত্রপাত হয়। কে বা কারা এর পিছনে দায়ী তা এখনো খুঁজে বের করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।