এইচএসসির প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। আজ সোমবার (৭ নভেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সাম্প্রদায়িক প্রশ্নপত্র প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, কীভাবে এবং কারা এই প্রশ্ন করেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলা প্রথম পত্রের একটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক বিষয়কে উদ্দীপক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। এখন কারা সেটি করেছিল, তা বের করার চেষ্টা চলছে। বিদ্যমান নিয়মে পাণ্ডুলিপি ছাড়া তা চিহ্নিত করা যায় না। 

পাণ্ডুলিপি আছে ট্রেজারি অফিসে। আগামীকাল মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে সেখান থেকে পাণ্ডুলিপি এনে প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে সোমবার (৭ নভেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ঢাকায় একটি অনুষ্ঠান শেষে বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে যদি এমন কিছু থাকে যা সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিতে পারে, তা দুর্ভাগ্যজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। যারা প্রশ্ন সেট করেছে এবং মডারেট করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

গত রবিবার (৬ নভেম্বর) বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা দিয়ে সারা দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়। তাতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্রের সৃজনশীল অংশে একটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগ ওঠে। প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নে সনাতন ধর্মের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের বিষয় তুলে ধরা হয়।

প্রশ্নে দেখানো হয়, ‘নেপাল ও গোপাল নামের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাই নেপাল তার বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামের একজনের কাছে একাংশ জমি বিক্রি করে দেন। আব্দুল সেই জমিতে বাড়ি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং কোরবানির ঈদে সেখানে গরু কোরবানি দেন। এতে জমি বিক্রেতা ভাইয়ের মন ভেঙে যায়, তিনি জমি-জমা সব ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যান।’

এদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় বাংলা-২ (সৃজনশীল) পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্র নিয়েও বিতর্ক উঠেছে। সেখানে একজন কথাসাহিত্যিককে নিয়ে এমনভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, যাতে তাকে হেয় করা হয়েছে, যা মূলত বিদ্বেষপূর্ণ। গতকাল রোববারই এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া একই দিনে অনুষ্ঠিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসির (বিএমটি) একাদশ শ্রেণির বাংলা-১–এর (নতুন ও পুরোনো পাঠ্যসূচি) পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এর কারণ খুঁজতে গেলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র করা হয়ে গেছে পুরোনো পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে, আর পুরোনো শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নপত্র করা হয়েছে নতুন পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে। ফলে এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।