বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা এবং শিক্ষক বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ১৭:২৬

বক্তব্য দিচ্ছেন আনু মুহাম্মদ। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা এবং শিক্ষক’ শিরোনামে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মেজর হায়দার সভাকক্ষে আজ শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রাহমান চৌধুরী। নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক তানভীর আহমদ খান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, জনাব নূরুল কবীর।
মধ্যযুগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎপত্তিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কী রকম হওয়া দরকার তা নিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. রাহমান চৌধুরী।
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মূল সমস্যা যোগ্য শিক্ষকের অভাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সবচেয়ে বড় সঙ্কট হচ্ছে পরীক্ষা ব্যবস্থা। সম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থাকে পরীক্ষার উপর নির্ভরশীল করে রাখা হয়েছে। পরীক্ষা আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থার কোনো অনুষঙ্গ নয়, বরং পরীক্ষাব্যবস্থাই এখানে প্রকৃত শিক্ষাব্যবস্থা। ফলে উচ্চ শিক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে মুখস্থবিদ্যার নামান্তর।
তিনি বলেন, শিক্ষকের কাজ হচ্ছে কিছু বর্ণনা করে ছাত্রদের মগজ পুরো করে দেওয়া। শিক্ষক যাকে সত্যিকার জ্ঞান বলে বিবেচনা করছেন তা দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মগজ ভর্তি করাই তার কাজ। তিনি যা শেখাচ্ছেন বা বর্ণনা করছেন তা বাস্তবতা হতে বিচ্ছিন্ন, সমগ্রতার সাথে সম্পর্করহিত। শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদেরকে যান্ত্রিকভাবে মুখস্থ করতে উদ্বুদ্ধ করেন। ফলে শিক্ষা হয়ে ওঠে জমা করার বিষয়, সেখানে ছাত্রছাত্রীরা হচ্ছে জমা রাখার পাত্র।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীর জীবনে স্বার্থকতার জন্য প্রয়োজন বিচার ক্ষমতা, উদ্যোগ গ্রহণের সাহস- যার কোনোটাই মুখস্থ বিদ্যা থেকে আসে না। ব্যবহারিক জীবনে তাদের যে জ্ঞান দরকার সে সম্বন্ধে বিশেষ কিছু ব্যুৎপত্তি লাভ করা হয় না। অপরপক্ষে, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাভীতির কারণেই পড়াশুনা করার চেয়ে মনে করেন পরীক্ষা বৈতরণী পার হওয়াটাই শিক্ষার মূল কথা।
অন্য আলোচকরা তাদের বক্তব্যে দেশের শিক্ষা সার্বিক পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা অনেক পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি, কিন্তু আমাদের আরো পথ বাকি।
রাষ্ট্র এবং শিক্ষা পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জ্ঞানকে শাসকেরা ভয়ের চোখে দেখে, এ কারণে তারা জ্ঞানকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
নূরুল কবীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যেন মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান হয়, শুধুমাত্র পণ্য সর্বস্ব যেন না হয়ে যায়।