সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সব হলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করেছে কোটা আন্দোলনে সংম্পৃক্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে ঢাবিতে মেয়েদের পাঁচটি হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টায় হলের শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরে লিখিত অঙ্গীকারনামায় হলের প্রাধ্যক্ষরা স্বাক্ষর করেন। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া, শামসুন নাহার, কবি সুফিয়া কামাল হলে, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। পরে একই রকমভাবে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলকেও ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অঙ্গীকার নামায় উল্লেখ করা হয়, আমরা বাংলাদেশ কুলেত-মৈত্রী হলের সাধারণ শিক্ষার্থী এই মর্মে লিখিত নিচ্ছি যে, আজ ১৭-৭-২০২৪ থেকে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল, ছাত্রফ্রন্ট, জামায়াত-শিবির) নিষিদ্ধ করা হলো। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল গণরুম বা পলিটিক্যাল রুম থাকবে না। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম হবে না। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল সম্পৃক্ততা হলের সাথে থাকবে না। আমরা হলের মেয়েরা যদি এইসব দলের দ্বারা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে এই দায় প্রশাসন ও হল প্রভোস্টকে নিতে হবে।
এদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে উত্তেজনা এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় হলটিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (১৭ জুলাই) ভোর ৫টায় হলের প্রোভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থীদের জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
১. শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে স্থায়ীভাবে সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলো।
২. কোনো বহিরাগত হলে অবস্থান করতে পারবে না।।
৩. শিক্ষার্থী কোনও প্রকার ক্ষতির (শারীরিক ও মৌখিক) সম্মুখীন হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৪. প্রশাসনিকভাবে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সিট বণ্টনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫. হলের সকল ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, রাত দেড়টা থেকে হলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনে যুক্ত থাকায় হলে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হবে না মর্মে প্রভোস্টের কাছে লিখিত অঙ্গীকারনামা চান। পরে ভোর পৌনে ৫টায় হলগেটে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান ছাত্রলীগের নেতারা। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর করেন। পাশাপাশি হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ও অভিযুক্তদের হল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানালে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রশাসন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : সরকারি চাকরি কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ হামলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাবি ছাত্র রাজনীতি . ঘোষণা নিষিদ্ধ
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh