এক মাস পর খুলল সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

টানা এক মাস বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার (১৮ আগস্ট) সারাদেশে খুলেছে সব স্তুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

এর আগে গত ১৫ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনায় রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানায়।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা স্কুলে স্কুলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। স্কুলের গেটে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইডি কার্ড ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে যেন প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্কুলের শিক্ষার্থী পরিবহনে যানবাহনগুলোকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। অভিভাবকদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় তার সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর জন্য এসএমএস দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশব্যাপী কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গত ১৬ জুলাই বন্ধ ঘোষণা করা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। একইদিন রাতে বন্ধ ঘোষণা করা হয় দেশের সব সরকার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। 

ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর রোববার স্কুল খুলছে। ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছি। তারা যেন রাস্তায় কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য পরিবহনের সঙ্গে যুক্তদের সতর্ক থাকতে বলেছি। এ ছাড়া প্রত্যেক অভিভাবককে এসএমএস করে সন্তানের বিষয়ে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছি।

রাজধানী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এমাম হোসাইন বলেন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী বৈধ অভিভাবক ছাড়া কাউকে স্কুলে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এটা মানতে নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি কঠোর নজরদারি করা হবে। এই শৃঙ্খলা রক্ষায় আইডিয়াল স্কুলের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেছি।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানায়, গত ৭ আগস্ট থেকে অনেক প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হচ্ছিল। তবে উপস্থিতি কম ছিল। অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তার শঙ্কা ছিল। পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হয়ে আসায় রোববার থেকে স্কুল-কলেজে যথারীতি ক্লাস হবে।

মাধ্যমিক স্তরের মাদ্রাসা, কামিল ও ফাজিলে যথারীতি ক্লাস চালু হবে বলে জানিয়েছে মাদ্রাসা অধিদপ্তর এবং ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই নির্দেশনা দিয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরও। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম ছিল।

অপরদিকে, সর্বজনীন প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনে ১ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে যায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস-পরীক্ষা। আর কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানায় আইএসপিআর।

অন্যদিকে আজ রবিবার সরকারি আদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস হওয়া নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদ ফাঁকা, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ  শিক্ষার্থীদের সব দাবি দাওয়া পূরণ না হাওয়া পর্যন্ত ক্লাস শুরু করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রসাশন। 

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে কি না তা নিয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। উপাচার্যের পদত্যাগের পর মূলত স্থবির রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম। একই অবস্থায় বিরাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //