শিক্ষা নিয়ে ‘সংস্কার কমিশন’ হয়নি, অথচ এটাই আগে দরকার ছিল: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৩২

জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ‘গ্রন্থ আড্ডা’র অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
দেশের বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা, মান ও পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আজকে এই সরকার অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু শিক্ষা বিষয়ক কোনো সংস্কার কমিশন হয়নি। অথচ এটাই আগে দরকার ছিল। গোটা সমস্যার মূলে ওই জায়গায়।’
আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ‘গ্রন্থ আড্ডা’র অনুষ্ঠানে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কালকে মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে। এতগুলো ছেলেমেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। তার মধ্যে মনে হয় সাড়ে পাঁচ হাজার ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। বাকিরা কী করবে?
‘সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, হাইস্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়। আমি একটা উদাহরণ দিচ্ছি, ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুল সেখানে লটারি করে ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলেরা পরীক্ষা দিয়েছে। ক্লাস থ্রিতে যে ছেলেটা ভর্তি হবে তাকে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধা স্কুলে।’
এমন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কী লাভ এটাতে, কী তৈরি হচ্ছে আমি কিচ্ছু বুঝতে পারি না। এই যে একটা আমি বলব যে, ‘উন্মাদনা’ চলছে শিক্ষার ক্ষেত্রে। এটার ব্যাপারে কেউ দৃষ্টিও দিচ্ছে না, কথাও বলছে না, বিষয়গুলো পরিবর্তন করার জন্য কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের অনেক সমস্যা। তার মধ্যে লেখাপড়াটা একেবারে শেষ হয়ে গেছে। শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থা এটা একদম শেষ। এটার মধ্যে কিছু অবশিষ্ট আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনি প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করেন একেবারে ইউনির্ভাসিটি, সব জায়গায় দেখবেন যে এত নিচু চলে গেছে তার মান তা বলে বোঝানো না।
উদাহরণ টেনে সাবেক শিক্ষক ফখরুল বলেন, একেবারে কুড়িগ্রামের রৌমারী চরের সেই প্রাইমারি স্কুলে সেখানে কী শিক্ষা পাচ্ছে, কী সুবিধা পাচ্ছে সেটা কিন্তু আমরা একেবারেই জানি না। অসংখ্য স্কুল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন এমপিওভুক্তি করে, অনেক কলেজ তৈরি হয়েছে উইথ অনার্স অ্যান্ড মাস্টার্স। যেখানে আপনার কোনো শিক্ষক নেই সেখানেও অনার্স খুলে বসে আছে।
“দিনাজপুর গর্ভমেন্ট কলেজে কিছুদিন আগে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমার চাকুরি জীবনের শুরুতে আমি দিনাজপুর গর্ভমেন্ট কলেজে অধ্যাপনা করেছিলাম সেখানে একটা ডিপার্টমেন্ট আছে অ্যাকাউন্টিং ডিপার্টমেন্ট যেখানে একজন শিক্ষক; অনার্স আছে, মাস্টার্সও আছে।
‘এখন আপনারা বলুন এই বিভাগগুলোর কিংবা এই কলেজগুলো কী প্রয়োজন আছে? সবাই আর্টস পড়ে বিএ-আটর্স, কর্মাস খুব কম ছাত্র পড়ে, সাইন্স পড়ে না প্রায়। তাহলে এই যে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিএন পাস করাচ্ছেন এদেরকে দিয়ে কী আপনি করাবেন, সমাজে তার প্রয়োজন কি, কোনো প্রয়োজন নাই?.. সারাদেশে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার এটা বড় সমস্যা এটা নিয়ে কেউ চিন্তা করছি না!’