Logo
×

Follow Us

ঈদ সংখ্যা ২০২৪

শচীনকর্তা: অনন্য এক গানের মানুষ

Icon

হাসান হাফিজ

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ১৮:১৫

শচীনকর্তা: অনন্য এক গানের মানুষ

শচীন দেববর্মণ। ছবি: সংগৃহীত

শচীন দেববর্মণ। শচীনকর্তা বলে ডাকা হয় তাকে। উপমহাদেশীয় সংগীত জগতে তিনি অনন্য, নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। প্রখ্যাত গায়ক, সুরকার, লোকসংগীত সংগ্রাহক। রাজ পরিবারে জন্মালেও মনেপ্রাণে ছিলেন মাটির মানুষ। নিজেকে নিঃশেষে বিলিয়ে দিয়ে তাদের সঙ্গে এক হয়ে যেতে পেরেছিলেন। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের নানা অঞ্চলের লোকগান তিনি সংগ্রহ করেছেন। অননুকরণীয় ভঙ্গিতে সেগুলো গেয়ে পরিণত হয়েছেন কিংবদন্তিতে। মনেপ্রাণে ছিলেন বাঙালি, যাকে বলে আপাদমস্তক ‘বাঙাল’।

কিংবদন্তি লোকসংগীতশিল্পী আব্বাসউদ্দিন আহমদ তার সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘তিনি বাংলা গানের মোড় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।’ শচীন দেববর্মণ ৮০টিরও বেশি হিন্দি ছবিতে সুরারোপ করেছেন। পেয়েছেন সংগীত-নাটক একাডেমি পুরস্কার, এশিয়ান ফিল্ম সোসাইটির (লন্ডন) সম্মাননা, ভারত সরকারের দেওয়া সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’। শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক, শ্রেষ্ঠ সুরকার, শ্রেষ্ঠ প্লে-ব্যাক গায়ক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন বহুবার।

কাজী নজরুল ইসলাম, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, কবি জসীমউদ্দীন, অজয় ভট্টাচার্য, হেমেন্দ্রকুমার রায়, শৈলেন রায়, মোহিনী চৌধুরী, সুবোধ পুরকায়স্থ, প্রেমেন্দ্র মিত্র, রবি গুহ মজুমদার, স্ত্রী মীরা দেববর্মণসহ অনেক নামিদামি গীতিকবির লেখা গান প্রাণ পেয়েছে শচীন দেববর্মণের কণ্ঠে। হয়েছে কালজয়ী। পেয়েছে শ্রোতাদের অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও অনুরাগ। প্রীতিময় সেই অনুরাগে ভাটা পড়েনি কখনো।

তার গাওয়া অনন্য স্নিগ্ধবর্ণিল সেই গানগুলোর মধ্যে রয়েছে-‘মন দিল না বঁধু’, ‘বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে’, ‘কাঁদিব না ফাগুন গেলে’, ‘তুমি নি আমার বন্ধু রে’, ‘শোনো গো দখিন হাওয়া’, ‘বিরহ বড় ভালো লাগে’, ‘নিশীথে যাইও ফুলবনে রে ভোমরা’, ‘ঘাটে লাগাইয়া ডিঙা পান খাইয়া যাও’, ‘কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া’, ‘তুমি এসেছিলে পরশু’, ‘রঙ্গিলা রঙ্গিলা রঙ্গিলা রে’, ‘হায় কি যে করি এ মন নিয়া’, ‘প্রেম যমুনায় হয়তো কেউ’, ‘তুই কি শ্যামের বাঁশি রে’, ‘আমি ছিনু একা বাসর জাগায়ে’, ‘তুমি যে গিয়াছ বকুল বিছানো পথে’, ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই’, ‘যদি দখিনা পবন’, ‘ঝিলমিল ঝিলমিল ঝিলের জলে’, ‘মলয়া চল ধীরে’, ‘সেই যে দিনগুলি’, ‘প্রেমের সমাধি তীরে’, ‘ফুলের বনে থাকো ভ্রমর’, ‘ঝুলনে ঝুলিছে শ্যামরায়’, ‘মালাখানি ছিল হাতে’, ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নাই’ ইত্যাদি।

শচীনের ছেলেবেলা কেটেছে কুমিল্লা শহরে। ১৯১০ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত কুমিল্লা শহরের ঠাকুরপাড়ার সুরলোক, কান্দিরপাড়ের সবুজ সংঘ নাট্যদল, দি গ্রেট জার্নাল থিয়েটার পার্টি, ইয়ংমেন্স ক্লাব ইত্যাদি নিয়ে গড়ে উঠেছিল কুমিল্লার স্নিগ্ধ সুরেলা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল। ত্রিপুরার মহারাজাদের উদ্যোগে কুমিল্লায় নির্মিত হয়েছে টাউন হল, নাট্যশালা, লাইব্রেরি এবং নানা সংস্কৃতিক কেন্দ্র। ১৯২০ সালের দিকে শচীন দেবের বন্ধুরাও ছিলেন কীর্তিমান। তাদের মধ্যে ছিলেন-সুরসাগর হিমাংশু দত্ত, অজয় ভট্টাচার্য, মোহিনী চৌধুরী, সমরেন্দ্র পাল, কাজী নজরুল ইসলাম, শৈলবালা দাম, ধ্রুপদীয়া সৌরেন দাশ, সুধীন দাশ প্রমুখ। সেখানে নিয়মিত আসতেন চলচ্চিত্র পরিচালক সুশীল মজুমদার, ননী মজুমদার, ব্রজেন ব্যানার্জি, জিতু দত্ত, অরুণ মহলানবিশ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। 

উইকিপিডিয়া বাংলার তথ্য

সে সময়কার গানের ধরন ছিল ভোরকীর্তন, নগরকীর্তন, কবিগান, ঢপযাত্রা। সাহিত্যিক, সুরকার, গীতিকার, কবি ও সংগীতজ্ঞগণ একত্রিত হতেন ইয়ংমেন্স ক্লাবে। সেই আড্ডা থেকে ভেসে আসত নজরুল ও শচীন দেবের গান। নজরুল কুমিল্লা এলে থাকতেন তালপুকুরের পশ্চিমপাড়ের একটি ঘরে।

কুমিল্লা থেকে শচীন দেব কলকাতা চলে যান ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে। কুমিল্লায় তাদের বাড়িটি ইতোমধ্যে স্মৃতি ও ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান হিসেবে সংক্ষরণ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। 

শিশুবেলার কথা

তার জন্ম ১ অক্টোবর, ১৯০৬। মারা যান ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর। তার জন্ম কুমিল্লার ত্রিপুরা রাজবাড়িতে। তবে আদিবাস বর্তমান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। তিনি ছিলেন ত্রিপুরার চন্দ্রবংশীয় মাণিক্য রাজপরিবারের সন্তান। বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেববর্মণের কাছে সংগীতচর্চায় হাতেখড়ি।

তৎকালীন ত্রিপুরার অন্তর্গত কুমিল্লার রাজপরিবারের নয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। তার মা নিরুপমা দেবী ছিলেন মণিপুর রাজবংশের মেয়ে। ত্রিপুরার আগরতলায় কুমার বোর্ডিং স্কুলে শচীন দেবের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়। ত্রিপুরার রাজপরিবারের সন্তান এবং তথাকথিত ধনী ঘরের সন্তানদের পড়াশোনার জন্যই এই স্কুলটি বিশেষভাবে তৈরি হয়েছিল। পরে তার বাবা নবদ্বীপচন্দ্র তাকে কুমিল্লার ইউসুফ স্কুলে ভর্তি করে দেন। 

শচীনকর্তা পড়াশোনা করেছেন কুমিল্লা জিলা স্কুল, ভিক্টোরিয়া কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯২৫ সাল থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত কৃষ্ণচন্দ্র দের কাছে তিনি সংগীতের প্রথাগত তালিম নেওয়া শুরু করেন। তারপর একে একে ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, সারেঙ্গীবাদক বাদল খান, সরোদবাদক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের কাছে সংগীত ও বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষা গ্রহণ করেছেন শচীন দেব। 

বিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় বাংলা ও হিন্দি গানের কিংবদন্তিতুল্য ও জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক, সুরকার, গায়ক ও লোকসংগীত শিল্পী। প্রায়শ তাকে এস ডি বর্মণ হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। কিছুটা অনুনাসিক কণ্ঠস্বরের জন্য তিনি তার শ্রোতাদের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। একশ বছরেরও বেশি সময় পার করেও বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে তার কালোত্তীর্ণ গানের আবেদন কিছুমাত্র লঘু হয়নি। তার পুত্র রাহুল দেববর্মণ ভারতের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক এবং সুরকার ছিলেন। তার ছাত্রী এবং পরবর্তীকালে সহধর্মিণী মীরা দেববর্মণ গীতিকার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেন। 

গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী লিখেছেন

“...বিএ পাস করে ১৯২৪ সালে কলকাতায় যান এমএ পড়ার জন্য। ইংরেজি বিষয় নিয়ে ভর্তিও হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম দিকে লেখাপড়ায় কিছু মনোযোগ থাকলেও পরে তা আর বজায় থাকেনি। গান শিখতে শুরু করেন সেকালের লোকপ্রিয় অন্ধ গায়ক কৃষ্ণচন্দ্র দের কাছে। শচীনকর্তার প্রবল নেশা ছিল তিনটি-খেলা, মাছ ধরা আর গান করা। কিন্তু কলকাতার জীবনে গানের স্বার্থে অপর দুটি শখকে বিসর্জন দিতে হয় তাকে। অবশ্য পরে বোম্বাইয়ের (বর্তমান মুম্বাই) প্রবাসজীবনে খেলা দেখা আর মাছ ধরার নেশা ফিরে এলেও নিজের খেলার শখটি আর মেটাতে পারেননি। যা-ই হোক, পারিবারিক চাপে কলকাতায় আবার নতুন করে আইন পড়ার দিকে ঝুঁকলেও সে বিষয়েও অল্পদিনেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। সহায়-সম্পত্তি পরিচালনার প্রয়োজনে উচ্চতর শিক্ষার জন্য বাবার বিলেতে পাঠানোর প্রবল ইচ্ছা পূরণেও অনাগ্রহ প্রকাশ করেন-সেও এই গানের জন্যই।

উচ্চাঙ্গ সংগীতে তালিম নেওয়ার জন্য কিছুকাল ওস্তাদ বাদল খাঁ, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর কাছে নাড়া বাঁধেন। এরপর গান শিখতে শুরু করেন ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। কিন্তু একটা সময়ে গুরু-শিষ্যের সৌহার্দের সম্পর্কে অনেকখানিই চিড় ধরে। কিছু কিছু কারণে ভীষ্মদেব শচীনকর্তার প্রতি অপ্রসন্ন হলেও তিনি গুরুর প্রতি কখনো শ্রদ্ধা হারাননি। অনেকটা স্বাবলম্বী মনোভাবের জন্য জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে শচীনকর্তা গান শিখিয়ে কিংবা নানা অনুষ্ঠানে গান গেয়ে উপার্জন শুরু করেন। কলকাতার বাড়িতে ‘সুরমন্দির’ নামের একটি গানের স্কুলও খুলেছিলেন। গানের আড্ডাও বেশ জমত সেখানে। কলকাতায় এক জজ সাহেবের নাতনি মীরা ধরকে গান শেখাতে গিয়ে তার সঙ্গে গভীর অনুরাগের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনের বয়সের ব্যবধান থাকলেও প্রবল প্রণয়ের টানে তাদের বিয়ে আটকায়নি। ১৯৩৮ সালে শচীনকর্তার সংসারে প্রবেশ করে সংগীতগুণী মীরা তার জীবনকে ‘বর্ণে-গন্ধে-ছন্দে-রীতিতে’ ভরিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। যথেষ্ট প্রতিভা থাকলেও হয়তো সংসারের সব দায়িত্ব নেওয়ায় গানের জগতে মীরা খুব বেশি দূর এগোতে পারেননি। তার একক কয়েকটি এবং শচীনকর্তার সঙ্গে মিলে দুজনের কণ্ঠে চারটি গান রেকর্ডে বেরিয়েছিল। বিয়ের আগে বেতারে গান গেয়েছেন এবং নানা সংগীত সম্মিলনেও অংশ নিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বেশ কিছু গানও তিনি লিখেছিলেন। এসব গান শচীনকর্তার কণ্ঠে খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল।”

কাজী নজরুলের স্মৃতিসান্নিধ্য

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মেলামেশা করার সুযোগ হয়েছিল শচীনকর্তার। আত্মস্মৃতি ‘সরগমের নিখাদ’-এ তার কিছুটা বর্ণনা আমরা পাই। শচীন দেববর্মণ তার বইয়ে লিখেছেন, “কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গেও দীর্ঘকাল ধরে আমার ঘনিষ্ঠভাবে মিশবার সৌভাগ্য হয়েছিল। তার রচনা, গান, আবৃত্তি আমি বহু শুনেছি। তিনিও আমার গান ও সুর খুবই পছন্দ করতেন। আমার বাড়িতে আসতেন, মুগ্ধ করতেন কবিতা ও গানে। আমার নিজস্ব ধরনে গানে সুর দিয়ে তাকে যখনই শুনিয়েছি, উৎসাহিত করেছেন আমাকে উচ্ছ্বসিত প্রশংসায়। তার রচিত গান রেকর্ড করতে আমাকে আদেশও দিয়েছিলেন। আমার জন্যই বিশেষভাবে সেগুলো রচনা করেছিলেন তিনি। আমি তা রেকর্ডও করেছিলাম এবং সব কটি গানই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল কাজীদার রচনার গুণে। অনেকেই আমার গাওয়া ‘চোখ গেল, চোখ গেল, কে ডাকিস রে-চোখ গেল পাখি রে’ গানটি শুনেছেন। এটি কাজীদার রচিত। প্রায় চার-পাঁচ মিনিটের মধ্যে লিখেছিলেন আমার জন্য সুর দিয়ে। আমি কাজীদাকে বলেছিলাম, ঝুমুরের ধরনে একটু ‘টিকলিশ’ সুরের গান দিন আমাকে। কাজীদা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দিলেন এই গানটি উপহার। কাজীদার সঙ্গলাভও আমার জীবনের অন্যতম প্রধান ঘটনা।”

এত বড় মাপের শিল্পী শচীন দেববর্মণ মানুষটি ছিলেন কেমন? আবুল আহসান চৌধুরী সম্পাদিত গ্রন্থ ‘শচীন দেববর্মণ সরগমের নিখাদ’ বইয়ে পাই সে পরিচয়। বইটি বের করেছে ঐতিহ্য। সেখান থেকে উদ্ধৃতি-“শচীনকর্তা মানুষটি ছিলেন একটু বিচিত্র ধরনের। খেয়ালি, সরল, রঙ্গপ্রিয়, একগুঁয়ে-সেই সঙ্গে কিছুটা ‘কৃপণ’ নামও কিনেছিলেন। বেখেয়ালে ১০ টাকা মনে করে ১০০ টাকার নোট দিয়ে এসে মনভোলা মানুষটি স্ত্রীর তিরস্কার সহ্য করেন হাসিমুখে। হিন্দি ফিল্মে যখন কাজ করতেন, পারিশ্রমিক নিয়ে অন্য অনেকের মতো দর-কষাকষি করতেন না। আবার মোটরের তেল পুড়িয়ে গড়িয়াহাট পর্যন্ত যান এক ফেরিওয়ালা ছোকরার কাছে দেশি বিস্কুট কিনতে, কষে দরদাম করে তারপর কেনেন। বিহারের দুস্থ বানভাসি মানুষের সাহায্যের জন্য তার কাছে গেলে নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দেন। মাছ ধরতে গিয়ে খালি হাতে ফিরলে সঙ্গীকে অনায়াসে ‘অপয়া’ সাব্যস্ত করেন। নিজের দল হারলে খেলার মাঠ থেকে ফিরে কথা বন্ধ রাখেন ভিন্ন দলের সমর্থক কোনো প্রিয়জনের সঙ্গে। শিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি-অনুরাগ-প্রীতি-স্নেহ-মমতা পোষণ করে এসেছেন চিরকাল। বড় গুণগ্রাহী ছিলেন-কত বাঙালি শিল্পীকে বোম্বাই নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিয়েছেন।

সহশিল্পীর প্রতি অপরিসীম মমতা ও মনোযোগ ছিল তার। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের তখন উঠতি বয়স, কলকাতার এক জলসায় গাইতে গেছেন-শীতের রাত, ডায়াসে বসে গাইতে কষ্ট হবে ভেবে শচীনকর্তা তার গায়ের দামি শাল ডায়াসের চাদরের ওপর পেতে দিতে বলেন। এই গানের মানুষটি কখনো রাজনীতির ধারেকাছেও থাকেননি। কিন্তু সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার যোগাযোগ আজীবন ছিন্ন হয়নি। প্রগতিপন্থি সংস্কৃতিকর্মী ছিলেন, তা বেশ বোঝা যায়, যখন তথ্য মেলে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে একসময় তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ১৯৩৯ সালে তিনি এর লোকসংগীত শাখার সভাপতি ছিলেন। এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে তার অভিজ্ঞতার পরিধি বেড়েছিল।” 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫