Logo
×

Follow Us

ঈদ সংখ্যা ২০২৪

প্রতিরোধের চলচ্চিত্র নির্মাতা: আশিষ অভিকুন্তক

Icon

এন রাশেদ চৌধুরী

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ২০:১৪

প্রতিরোধের চলচ্চিত্র নির্মাতা: আশিষ অভিকুন্তক

আশিষ অভিকুন্তক মহাকুম্ভ মেলায় শুটিংয়ে। ছবি: সংগৃহীত

“The answer to the riddle is not important. The riddle itself is the answer. The mystery itself is the code. Is it possible to look at my films in this way?”

–Ashish Avikunthak

আশিষ অভিকুন্তকের জন্ম ভারতের জাবালপুরে ১৯৭২ সালে। তার নাম আজ ভারতবর্ষের নিরীক্ষাধর্মী চলচ্চিত্রের সঙ্গে সসম্মানে সমুচ্চারিত হচ্ছে! আমেরিকার রোড আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম মিডিয়া বিষয়ে শিক্ষকতারত আশিষের প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চতর পড়াশোনা 

এনথ্রোপলজি ও আর্কিওলজিতে। একজন নিবেদিতপ্রাণ সমাজকর্মী হিসেবেও তার সুখ্যাতি রয়েছে। চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক বাতাবরণের বাইরে চলচ্চিত্রকে একটি আর্টফর্ম হিসেবে বিবেচনার ক্ষেত্রে তার রয়েছে অনুপ্রেরণীয় দৃষ্টিভঙ্গি। ইউরোপের তথাকথিত ‘ওয়াইন’ (আর্টহাউস) সিনেমার বিপরীতে তিনি তার চলচ্চিত্র ধারাকে বরং ‘মহুয়া’ বা ‘চন্দ্রালোকিত’ চলচ্চিত্রচর্চা বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। অন্তত দুই দশকের চলচ্চিত্র চর্চায় তার ছবি লন্ডনের টেটমডার্ন গ্যালারি, প্যারিসের জর্জ পম্পেইডু  সেন্টার, বার্কলের প্যাসিফিক ফিল্ম আর্কাইভ ছাড়াও লোকার্নো, ভেনিস, রটর্ডাম, বার্লিনের মতো চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ওটিটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ‘মুবি’ প্রায় বছরব্যাপী তার চলচ্চিত্রের রেট্রোসপেক্টিভ প্রদর্শনী করে। নিজের ধারালো ধর্মীয় ও দার্শনিক থিমের প্রতি ঝোঁক তার কাজকে দিয়েছে মানবীয় ও আধ্যাত্মিক দায়বদ্ধতা। তার কাজে মিথিক্যাল টেক্সটের প্রতি আগ্রহ প্রতিমুহূর্তে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়, ধর্মীয় ও অধার্মিক ধারণার বিশ্বজনীনতার দিকে! প্রকৃতির অনিশ্চয়তার দোদুল্যমানতায় ও একই সঙ্গে সাম্প্রতিক ভারতবর্ষের দ্রুত পরিবর্তনশীল নগরায়ণের প্রতিক্রিয়ায়, অভিকুন্তকের সিনেমা আমাদের উপহার দেয় এক অনন্য ধূসর দৃশ্যকাব্য ও বাক্যালাপের সমন্বয়-যা তার ছবির দর্শককুলকে কব্জা করে রাখে সময় বা কালের অর্থ অনুসন্ধানে ও প্রত্যক্ষকরণে! প্রায়ই সেলুলয়েড মাধ্যমে শুটিংয়ের কারণে অভিকুন্তকের নিজস্ব চলচ্চিত্র ভাষা-ভঙ্গি যেমন আয়ত্ত করে মানুষের নৈমিত্তিক প্রাত্যহিকতা, একই সঙ্গে উদযাপন করে ব্যক্তির নিজস্বতা ও রাজনৈতিক অবিচ্ছেদ্যতাকে। 

আশিষের সঙ্গে আমার অন্তত একটি বিষয়ে মিল খুঁজে পেলাম, আমরা দুজনই আশির দশকের শেষাব্দে চলচ্চিত্র সংসদ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ি, মূলত ভালো সিনেমা দেখার আকাঙ্ক্ষা থেকে। আমাদের জন্য যেমন তৈরিই ছিল মুহম্মদ খসরুর নেতৃত্বে সংঘটিত চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের একটি উর্বর ক্ষেত্র-আশিষদের অনেক কষ্ট করে এর স্বাদ নিতে হয়েছিল। আশিষের স্মৃতিচারণে আমরা যেমনটা পাই, আশিষ কলকাতায় উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় ১৯৯০-এর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেন এবং ভারতবর্ষে প্রদর্শিত প্রথমবারের মতো ক্রিস্তফ কিয়েস্লোভস্কির রেট্রোস্পেকটিভ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী প্রত্যক্ষ করেন। সেখানেই দেখে ফেলেন-ক্যামেরা বাফ, ব্লাইন্ড চান্স, এ শর্ট ফিল্ম অ্যাবাউট কিলিং ও এ শর্ট ফিল্ম অ্যাবাউট লাভ ছবিগুলো। ত্রি-কালারস ট্রিলোজির অনেক আগেই যে ছবিগুলো তিনি বানিয়েছিলেন। ৯৩ সালের দিকে যখন বোম্বেতে পড়াশোনা করছিলেন সমাজকল্যাণ বিষয়ে তখন প্রচুর চলচ্চিত্র দেখেন এবং পাশাপাশি নানান সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এর পর ব্যাচেলর ডিগ্রি শেষ হলে এক বন্ধু পরামর্শ দেন, সিনেমা বিষয়ে যদি এতই আগ্রহ থাকে তবে যেন তিনি পুনায় চলে যান। সেখানে ভারতের ন্যাশনাল ফিল্ম আর্কাইভ আছে-যেখানে নিয়মিত পৃথিবী বিখ্যাত ছবিগুলো যেমন দেখা যায়, তেমনি জগদ্বিখ্যাত পুনা ফিল্ম ইনস্টিটিউটটিতেও যথেচ্ছ বিচরণ করা সম্ভব (আমিও বাড়ির লোকদের ফাঁকি দিয়ে এভাবেই ব্যবসা প্রশাসন পড়তে ৯৪ সালে পুনায় চলে যাই)! পুনায় এসেই আশিষ ভর্তি হন ডেকান কলেজ অব আর্কিওলজিতে। এখানে অ্যাডমিশন নেওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ ছিল; কিন্তু ক্রমেই আগ্রহ বাড়তে থাকে এ বিষয়ে-বলেন, এই কোর্স তার অন্তর্চক্ষু খুলে দিয়েছিল। নিজেদের প্রাচীন ও ঐতিহ্যিক ইতিহাসের শেকড়ের সঙ্গে যোগসূত্রের যৌগিকতায়-যা তার রাজনৈতিক সচেতনতায়ও শক্তি জুগিয়েছিল। 

আশিষের এটুকু ব্যাকগ্রাউন্ড জরুরি এজন্য যে, তার সিনেমা বুঝতে হলে তার এসব বিষয় সম্পর্কে আগ্রহের সূচনা পর্বকেও আলোচনায় নিতে হবে। সিনেমা বিষয়ে অদম্য আগ্রহের কারণে তিনি পুনা ফিল্ম ইনস্টিটিউটেও ভর্তির চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু সে বছর পুনা ইনস্টিটিউটে ছাত্র-ছাত্রীদের ধর্মঘট চলায় প্রশাসন ভর্তিপ্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছিল। পুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেক্কান কলেজে ভর্তির সময় থেকেই প্রতিদিন সন্ধ্যায় নিজের বাইসাইকেল চালিয়ে প্রভাত রোডের পুনা ফিল্ম ইনস্টিটিউট ও ন্যাশনাল ফিল্ম আর্কাইভে যেতেন সিনেমা দেখতে। অন্যদিকে তৎকালীন খ্যাতনামা শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে চলতে থাকে আর্কিওলজিরও নিবিড় পাঠ। এভাবে একই সঙ্গে যে বছর মাস্টার্স শেষ করেন ঠিক সে সময়ই নির্মাণ করেন তার প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘এটসেট্রা’! সেটা ১৯৯৭ সাল। ১৬ মিমি এ চারটি আলাদা আলাদা বিষয় নিয়ে নির্মিত অথচ একই মোড়কে সংযুক্ত একটি যৌগিক উপস্থাপনা-সেই গ্রিক মিথের এই ডেব্যু ফিল্মটিকে ‘টেট্রালোজি’ও বলা হয়, যার রয়েছে চারটি আলাদা বিষয় অথচ থিম হিসেবে কোথাও যেন একটা নিবিড় সূত্রে গাঁথা! অনেকটা সেই সুপ্রাচীন গ্রিক Attic থিয়েটারের আদলে-যেখানে পরপর তিনটি কমেডি বা ট্র্যাজেডি নাটকের পর চতুর্থ পর্বে আসে জীবনের জয়গানের এক Dionysian উদযাপন পর্ব। এ ছবিতেও ‘রিনানসিয়েশন’,‘সোলিলোকি’, ‘সারকামসেশন’ ও ‘দি ওয়াক’ শিরোনামের আলাদা পর্বগুলোকেও আশিষ যেন নিরীক্ষাধর্মী উদ্যোগে গাঁথতে চেয়েছেন মনুষ্য জন্মের কার্যকারণ ও জীবাত্মার অপার, অসীম সম্ভাবনার শিখরে উত্তরণে! আর এভাবেই নিজের প্রথম ছবি থেকেই যেন তার পথ এক গোপন, গভীর সম্ভাবনার অনুসন্ধানে ব্রতী হয়েছিল! ৯৯ সালে কলকাতায় বানান তার দ্বিতীয় শর্ট ফিল্ম ‘কালীঘাট ফেটিশ’ বা ‘কালীঘাট অতিকথা’-যেখানে কলকাতার আদি পীঠস্থান-কালীঘাটের কালী পূজার পাঁঠাবলির সঙ্গে জাক্সটাপোজ করে দেখান এক কালীভক্ত বহুরূপীর কালীরূপে বিচরণের দৃশ্যপট। একই সঙ্গে কালীভক্ত ভক্তকুলের মাতৃমূর্তি দর্শনের লক্ষ্যে মন্দিরে মন্দিরে বিচরণ! মন্দিরের বিগ্রহ ঘিরে বিচরণকারী এসব জনসাধারণ হয়তো সংস্কৃতে ক্রমঃপঠিত শ্লোকের বিব্দুবিসর্গ বুঝছেন না, তবুও বলির পাঁঠার রক্তস্রোত যেন তাদের মনেও জাগিয়ে তুলেছে রক্তপ্লাবন আর আশিষের কাছে এ সকল মুহূর্তই গুরুত্বপূণর্, মুহুর্মুহু মানবমনের গভীর ঐক্যতানে, গেঁথে চলেছে-ধর্ম ও এর নানান আচারের গূঢ়তম যোগসূত্র!

প্রত্নতত্ত্বে মাস্টার্স শেষ করে আশিষ বোম্বেতে ফিরে যান আর শুরু কাজ শুরু করেন সেখানকার ভারলী আদিবাসীদের জীবনাচরণ বিষয়ে গবেষণা। এভাবে প্রত্নতত্ত্ব, মিথ, মানবমনের ধর্মীয় আচার প্রবণতা এক প্রকার মিলেমিশে যেতে থাকে তার সিনেমা ভাবনায়। ১৯৯৯ সালে থিতু হন যুক্তরাষ্ট্রে এসে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির আওতায় চলতে থাকে ইউরোপের চারটি দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কার্যে অংশগ্রহণ। কিন্তু সিনেমা তার পিছু ছাড়ে না-বা তিনিও কখনো এর থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। চলতে থাকে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের পাশাপাশি ডায়েরিতে নোট নেওয়া ও ক্যামেরায় নানান প্রতিবেশ-পরিবেশে শুটিংয়ের কাজ। 

আশিষকে অনেক লেখক, ক্রিটিক প্রশ্ন করেছেন আপনি কি ধর্মীয় মূল্যবোধ দ্বারা তাড়িত? আপনার ছবিতে প্রাচীন হিন্দু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণের আধিক্য প্রাধান্য পায়! হিন্দু মিথ, ঐতিহ্য, আচার-আচরণ, বিশেষত প্রায়ই লক্ষ করা যায় নানান হিন্দু দেবদেবী আপনার ছবির প্রধান সব চরিত্র রূপে যেন আবির্ভূত হয়...আপনি কি ঈশ্বরে বা একাধিক ঈশ্বরে বিশ্বাসী? 

এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরে আশিষকে প্রায়শই তার পারিবারিক এক বিপর্যয়ের বিষয়ে স্মৃতিচারণ করতে দেখা যায়! বলেন, তার পরিবার দেশভাগের সময় পাকিস্তানের পাঞ্জাব থেকে পালিয়ে কলকাতায় এসে আশ্রয় নেন। মার জন্ম পাকিস্তানের লাহোরে আর ছেলেবেলা কাটিয়েছেন উত্তর ভারতের দেরাদুন, দিল্লিতে। বাবা জন্মেছেন গান্ধারী ঐতিহ্যের বৌদ্ধিক সভ্যতার খ্যাতনামা প্রত্নস্থান পাকিস্তান-আফগানিস্তানের বর্ডার সংলগ্ন মারদানে। বাবা-মা দুজনই বর্ণ-হিন্দু পরিবারের সদস্য হয়েও তাদের রয়েছে নিজস্ব ধর্মীয় সংবেদনশীলতা। বাবা একেশ্বরবাদী, ব্রাহ্মণ্যবিরোধী, সংস্কারপন্থি বৈদিক হিন্দু আর মা সনাতনী হিন্দু পরিবারের অসংখ্য দেবদেবী নিয়ে বড় হয়েছেন। আর এটাই আশিষের জন্য হিন্দুধর্মের এক বহুমাত্রিক বর্ণচ্ছটায় রূপান্তর হয়েছে। আর এমনই পরিবেশে শৈশব কেটেছে আশিষের। যেমনি নানা মন্দিরে ঘুরে ঘুরে ফিরেছেন বাবার আর্য সমাজের সঙ্গে অগ্নিহোম যজ্ঞ করে, তেমনি কলকাতার ছেলেবেলার দিনগুলোতে কাটিয়েছেন দুর্গা, কালী, সরস্বতী, লক্ষ্মী পূজার মণ্ডপে মণ্ডপে। আর এগুলোতে ধর্মীয় ভক্তিভাবের পরিবর্তে বরং এদের জৌলুসপূর্ণ সাংস্কৃতিক বর্ণচ্ছটাই যেনবা আশিষের আকর্ষণের মূল বিষয় হয়ে উঠেছিল। 


২০০২ সালে নির্মিত ১৮ মিনিটের ‘ডান্সিং ওথেলো বা বৃহন্নলা কি খেলকালী’ ছবিতে তিনি সপ্তদশ শতকের দুই শৈল্পিক আর্টফর্মকে সংযুক্ত করতে চেয়েছেন-একটি শেক্সপিয়রীয় ট্র্যাজেডি ও দক্ষিণ ভারতীয় ডান্স ফর্ম কথাকলি! এটি করতে গিয়ে তিনি এমন একজন কথাকলি শিল্পীর প্রতিচ্ছবি তৈরি করেছেন-যিনি তার দুর্দান্ত অভিনয় কলার মাধ্যমে, শেক্সপিয়ারের নাটক-ডান্সিং ওথেলো থেকে বিমূর্তায়নের মাধ্যমে হয়ে ওঠেন ঔপনিবেশিক ভারতের একজন চাটুকারের চরিত্র। অর্জুন রায়নার এই দুর্দান্ত অভিনয় দীর্ঘসময় ধরে যেন আমাদের মনে এক দীর্ঘস্থায়ী, সুতীব্র প্রতিক্রিয়ার রেশ রেখে যায়। 

প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, আশিষ আমাকে নিজেই বলেছেন, তিনি স্যামুয়েল বেকেটের একজন ভক্ত। বেকেটের সাহিত্যের শুষ্ক, আবেগহীন, নঞর্থক, ট্রাজিক মেডি-এ সকল চিহ্ন আশিষকে সবসময় ভাবিয়েছে। আর হয়তো এর অনুপ্রেরণাতেই তিনি বেকেটের ১৯৬৫ সালে লেখা অণুনাটক : ‘কাম অ্যান্ড গো’ অবলম্বনে নিরীক্ষাধর্মী চলচ্চিত্রিক অভিযোজনের প্রকাশ ঘটান ২০০৫ সালে নির্মিত-১৮ মিনিট দৈর্ঘ্যরে তার আরেকটি শর্ট ফিল্ম : ‘অন্তরাল’ বা ‘এন্ড নোট’-এ। বেকেটের এই সর্বাপেক্ষা সার্থক নাটকের (নানান ক্রিটিকদের মতে) কাহিনির ঘেরাটোপে বন্দি হন সেই তিন তরুণী বান্ধবী-যারা মেতে উঠেছে শৈশবের স্মৃতিচারণায়, স্টেজের বদলে আমরা তাদের আবিষ্কার করি কোনো টেনামেন্ট অ্যাপার্টমেন্টের পার্কিং স্লটের পাশেই-নিচতলার ফাঁকা স্পেসে। সেখানে তারা মিলিত হয়েছে দড়ি খেলায়, কখনো গানের আসরে, আর কখনোবা ছোঁয়াছুঁয়ি খেলায়; কিন্তু খানিক পর শুরু হয় বেকেটের নাটকের মতোই সেই সর্বাপেক্ষা অস্বস্তিকর মুহূর্ত, যখন এক বন্ধুর অন্তরালে পাশাপাশি বসে থাকা জনকে তাদের অপর বন্ধু কানপড়া দেয়, সেই অন্তরালে থাকা বন্ধুটির কোনো এক গোপন বিষয়ে। ব্যস... এরপর সেই চিরাচরিত কানাকানি চলতে থাকে এক বন্ধুর আড়ালে অন্য বন্ধুটিকে নিয়ে। এভাবে তিনজনের কেউই আর বাদ যায় না। তবে এতটা অব্দি আসতে আশিষকে পোড়াতে হয় অনেক কাঠখড়! স্টেজের নাটকের তিনটি চেয়ারে পাশাপাশি বসে থাকা এই তিন বান্ধবীর নৃশংস সেই কদর্যতা প্রকাশে ওদের একসময়ের প্রাণের বন্ধনের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে হয় আশিষকে। ছেলেবেলার নানান নস্টালজিক মুহূর্ত, শৈশবের গীত, অপেক্ষাকৃত কৈশোরের শাস্ত্রীয় গানের সম্মিলিত অনুশীলন, সবই যেন বয়সের সীমা পেরিয়েও একই আছে এখনো...আর এর মাধ্যমে আশিষ খুঁজে পান তার চলচ্চিত্রের জন্য আরাধ্য এক ভাষাভঙ্গি, কখনো সাদাকালোয়, কখনো বা সেপিয়া টোনে আর কখনো কালারে। বেকেটের আদলে ধারেকাছেই কোথাও ঘটতে থাকে অতিকায় ধর্মীয় কোনো অব্যাখ্যাত অভিব্যক্তি-মানব মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা সেই অস্বাভাবিক রিচুয়ালের ষাষ্ঠাঙ্গ আরতি কোনো এক জনগোষ্ঠীর আদিতম অভিব্যক্তিতে মনসা আরতির অতিকায় অর্পণ! কন্যাদিগের সুখস্মৃতি বলতে আশিষ তাদের একসঙ্গে মাছ কিনতে বাজারে পাঠান। হয়তোবা মাছকাটার রঙাভ ইশারায়, মাছের কানকোর গড়িয়ে পড়া রক্তের মাঝে লালন করা তিন কন্যার রজঃরক্তের ইঙ্গিত। সবশেষে নাটকের সেই বিখ্যাত মুহূর্ত, সেই পাশাপাশি তিনটি চেয়ারে বসে তরুণীদের ফের একজনের অনুপস্থিতিতে অন্য দুজনের নির্মম সেই গোপন রসিকতা, কানাকানির দৃশ্য। ওরা বেকেটীয় ভঙ্গিতে এখন একজন অপরজনের হাত ধরে রাখেন! আর বেকেটের ক্রিটিকরাও যেমনটি বলে থাকেন, এর মধ্যে দিয়ে এই তিনজনের অবস্থান যেন আমাদের মাঝে আরও গভীরতম দ্যোতনার জন্ম দেয়, হয়তোবা মহাজাগতিক স্বরূপ সন্ধানে একপ্রকার অশরীরী করে তোলে এদের! আর আশিষের মাত্র ১৮ মিনিটের এই সিনেমা হয়ে ওঠে সেই মানবিক নির্মমতার এক মর্মস্পর্শী বয়ান এবং সম্পূর্ণ সেই আশিষীয় ভিজুয়াল রীতিতে (সিনেমা অব রিলিজিয়সিটি)। আশিষ নিজেই যেমনটি বলে থাকেন-I would say my films are attempts to reconfigure the importance of ritual within the religious framework. In that sense, they could be taken as liturgical texts, cinematic contemplations on the sacred within the framework of religion. I am not concerned with the sociological. I am not concerned with the political or the personalthose are incidental, rhetorical devices that frame the film’s digenesis. My films are an iteration of religiosity.

এভাবে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অদম্য আশিষ ধারাবাহিকভাবে নির্মাণ করতে থাকেন তার নিরীক্ষাধর্মী জঁরার চলচ্চিত্র, যাকে-প্রয়োগের সিনেমা, ধর্মীয়-আধ্যাত্মিক আবেগের সিনেমা বলে অভিহিত করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তিনি। তার সিনেমা ঘিরে বিশ্ব চলচ্চিত্র পরিসরেও শুরু হয় তৎপরতা। দেখতে দেখতে প্রধানতম চলচ্চিত্র উৎসবগুলো এখন আশিষের ছবির অপেক্ষায় থাকে, আর্ট গ্যালারিগুলোও তৎপর হয়ে ওঠে ওর ছবি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনে। তার যতটা হয়তোবা তার সিনেমার নিরীক্ষামূলক ফর্ম ও ভাষাভঙ্গির কারণে তার চেয়েও বেশি বোধকরি অদ্ভুতুড়ে, অতিকায় ধর্মীয় রীতির প্রকাশমান অনুষঙ্গে। আশিষের আর্কিওলজিক্যাল, এনথ্রোপলোজিক্যাল মানস যেন খুঁজে ফেরে মনুষ্য মনের গভীর আকাঙ্ক্ষার আর অসহায়ত্বের বিপরীতে ভগবানের বা সেই আপাত নীরব ও মর্মর প্রকৃতির রহস্যের সামনে নতজানুতার সংস্কৃতিতে। যেন এই ডিসফাংশনাল সমাজ, সভ্যতা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায়ই নিহিত আছে-সেই ঐশ্বরিক আত্মসমর্পণের অভ্যন্তরে। যদিওবা উদ্ধার সম্ভব-তা হয়তো সেই আদি দেব অগ্নি, কালী দেবী, গণেশের পুনরাবির্ভাবের অন্তরালেই লুকিয়ে আছে। 

এখানে বলে রাখা ভালো, আশিষের একটা সিনেমা নিয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা যায়। ভারতীয় দর্শনের রূপ ও দেহজ সাধনার নানা স্তর এসব সিনেমার ফর্ম ও ভাষায় এমনতর সন্নিবেশিত যে এর স্তর খুঁজে পাওয়া বা একরৈখিক ন্যারেটিভ প্রকাশ করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সেটাই প্রধানতম বাধা। আশিষের পরবর্তী সিনেমা ‘নিরাকার ছায়া’-কেরালার মালয়ালাম ঔপন্যাসিক সেতুমাধবান রচিত ‘পাণ্ডব পুরাণ’-এর ভাবাবলম্বনে আশিষ ২০০৭-এ নির্মাণ করলেন পূর্ণদৈর্ঘ্যরে (৮০ মিনিট) কাহিনিচিত্র-নিরাকার ছায়া বা শ্যাডো ফর্মলেস। 

স্বামী পরিত্যক্তা এক একাকী গৃহিণীর কল্পনার জগৎই জীবন্ত হয়ে ওঠে ছবিতে-ঠিক যখন তার প্রেমাস্পদ তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার পরিচিত বাস্তবতাকে বদলে দেয় ভিন্নতায়! মুবির মতে আশিষের এই ডেব্যু ফিচার ফিল্মটিতে যেন অ্যান্তোনিয়নির আদলে-বিষয়বস্তুর বিপরীতে প্রায় অবাস্তব ন্যারেশনের এক অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা। তবে এক সূক্ষ্ম-সুদৃঢ় পাটাতনের ভিত্তির ওপর গভীর অপার্থিব সাউন্ডট্র্যাকের এই ছবিটি যেন বাংলা সিনেমায় এক দানবীয় নিরীক্ষাধর্মী নির্মাতার আগমনী জানান দেয়। ছবিটি ২০০৭ সালেই লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে সগর্বে স্থান করে নেয়। 

প্রখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ ও ‘সিনেমা প্রায়োগা’ (প্রয়োগের সিনেমা) ধারণার প্রধান প্রবক্তা-অমৃত গাঙ্গুর আশিষের প্রায় সকল সিনেমা বিষয়েই সোচ্চার! আশিষের কেবল ‘রতি চক্রব্যূহ’ (২০১৩) সিনেমা নিয়েই গাঙ্গুরের ৮০৫০ শব্দের অন্তত ২০ পাতার আলোচনায় ‘রতি চক্রব্যূহ : শূন্যতার অভ্যন্তরে শূন্যতা’ শীর্ষক সন্দর্ভে তিনি বলেন, ‘আশিষের প্রায় সব ছবিই একটি সাধারণ সূত্রে গাঁথা-একজন অদৃশ্য সূত্রধরের মাধ্যমে-যিনি সকল সুতো ধরে রাখেন-আর তিনি হলেন কাল বা সময়, আর তা ধরে রাখেন স্বয়ং কালী-তান্ত্রিক শাক্ত ধারায় তার স্থির বিশ্বাস থেকে যার গোড়াপত্তন।’ আর তাই অমৃত মনে করেন, আশিষের সেই প্রথম ছবি এটসেট্রা থেকে রতি চক্রব্যূহ অব্দি আশিষ যেন সর্বদাই সেই আদি শক্তির সন্ধানে ব্যাপ্ত। আর তাই তিনিও মনে করেন, রতি চক্রব্যূহ কোনো অঘটন নয়, এটি আশিষের সেই বিশ্বাসের পথেই দীর্ঘ অনুশীলনমাত্র। আশিষের কঠো-উপনিষদের নচিকেতার গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমা-কঠো-উপনিষদ (২০১১)-এ প্রায় এক ঘণ্টার দীর্ঘ সিঙ্গেল টেক দৃশ্যধারণ তার পরবর্তী সিনেমা-রতি চক্রব্যূহতে এসে প্রায় ১০২ মিনিটের এক বৃত্তাকার ঘূর্ণায়মান দৃশ্যের টেম্পোরাল এনগেজমেন্টে রূপান্তর হয়। আর সবচেয়ে অভিনব বিষয় হলো-তার সিনেমার উত্তরোত্তর কথ্যভাব (শব্দ) ও এর চেতনভাবের ব্যাপ্তি। যেন তার প্রথম ছবি এটসেট্রায় ব্যবহৃত নৈঃশব্দ্যরা অপেক্ষমাণ ছিল রতি চক্রব্যূহতে প্রকাশিত বাচিক ব্যাপ্তির! কিন্তু তদুপরি একটি দৃঢ় শরীরী কাঠামোর আওতায়-সংঘবদ্ধতায়। ‘তন্ত্রবাদের মূল দর্শন বোধকরি শরীরই হলো কসমস বা মহাবিশ্বের সঙ্গে জাগতিক বিশ্বের সংযোগ সেতু, শরীর হলো সেই থিয়েটার যেখানে মনো-জাগতিক নাটকের মঞ্চায়ন সংঘটিত হয়। রতি হলো প্রেমের দেবী, যা একই সাথে নারীজ-কামশক্তিও! যখন শক্তি শিবের দেখা পায়-রতি কার্যকর হয়ে ওঠে! রতি মানবের গতিশক্তি, যুগলের মিলনের মাধ্যমে সেই শক্তি কার্যকর হয়, সার্থক হয়ে ওঠে। শাক্তের শক্তি-শিবের বাহন নয়। মহাজাগতিক ক্ষেত্রে, শক্তি ও শিব সংযুক্ত শক্তি। আর বিপরীত রতি হলো জগতের সেই নারীরূপ শক্তি কেন্দ্রিকতা-যা সর্বক্ষণই কামোদীপ্ত, বিপরীত শক্তির সাথে মিলোন্মুখ, দ্বৈততার স্বরূপ সংরক্ষণে নিয়োজিত; কিন্তু পুরুষভাবের স্বরূপ হলো এর প্রতিটি পদক্ষেপে ও বিচ্যুতিই ঘটায়, জগৎকে দ্রবীভূত, আর্দ্রতর করে তোলে। মৃত্যু বারবারই আশিষের ছবিতে ফিরে ফিরে আসে, কখনো সমাধির সৌম্যতায় আর কঠো-উপনিষদে যেমন, নচিকেতা যখন যমকে প্রত্যক্ষ করে আর মৃত্যুর দেব তাকে প্রশ্ন করে-মৃত্যুর রহস্য নিয়ে সে কী জানে! আর ততধিক আশ্বর্য দেখা যায়, মৃত্যুই এ ছবিতে রতিকে ‘রতি চক্রব্যূহে’ সঙ্গ দেয়, এ ক্ষয়ের এক এমন ফর্ম তবুও যেন নিঃশেষিত হওয়া নয়!’ আর পরিশেষে রতি চক্রব্যূহের গণ-আত্মহত্যাও কোনো পরিসমাপ্তি নয়, বরং যেন নতুন এক আকাঙ্ক্ষার পুনঃজন্ম। আর রতি স্বরূপ হলো কামদেবের দুই পত্নী-প্রীতি আর রতির একজনা। আর সৌরজাগতিক বিধির-চন্দ্রের ৬ষ্ঠ কলারও বিশেষ্য পদ হলো এই রতিই, যেখানে চাঁদের মানও অপেক্ষাকৃত নিচের সারিতেই, আর এটিই সেই জটিলসর্গীয় কালসর্প, সময়ের পেঁচিয়ে থাকা চক্রস্থিত শক্তি (কয়েল ফর্ম)! আর তাই শাক্ত মতাধর্মী আশিষের ‘রতি চক্রব্যূহ’র জন্মও সেই সর্পস্বরূপা চক্র অভ্যন্তরে, কালীর কালাভ্যন্তরে, আর পুরোটা সময়ই সেই সূত্রধরের হাতেই পরিচালিত যেন চরিত্ররা!

রতি চক্রব্যূহের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে এর পূর্বসূর আর অন্তিমসূরকে ঘিরে! ‘পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের রাতে সদ্য বিবাহিত বারোজন যুবক-যুবতী এবং তাদের পুরোহিত গণবিবাহের পর বাসরে মিলিত হয়ে নিজেদের মধ্যে আড্ডা মারতে থাকে...’ এমন একটি টেলপের মাধ্যমে ছবি শুরু হয়। এরপর এক ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ির দুর্গামণ্ডপে বসে এদের সেই আড্ডা। বৃত্তাকার সরীসৃপের আদলে ১৬ ফুটের সার্কুলার ডলিতে ক্যামেরা বসিয়ে শুরু হয় এদের কথোপকথনের দৃশ্যগ্রহণ। ১০২ মিনিটে ৫৬ বার প্রদক্ষিণ করে ক্যামেরা সেই বৃত্তাকার আসরের আলাপরত চরিত্রদের। আর দীর্ঘ আড্ডা শেষে আরেকবার ব্ল্যাক স্ক্রিনে ভেসে ওঠে আরেকটি কথা-‘শিগগিরই তারা আত্মহত্যা করে। জানার প্রয়োজন নেই যে কেন এবং কীভাবে তারা আত্মঘাতী হলো, গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো যে তারা আর আমাদের মধ্যে বেঁচে নেই।’ কেবল মাত্র একটি টেকেই নির্মিত আশিষের এই অভিনব চলচ্চিত্রটির অনন্য সিনেম্যাটোগ্রাফি করেছেন তারই দীর্ঘ-সহযোগী, ভারতের খ্যাতনামা তরুণ চিত্রগ্রাহক বাসব মল্লিক। আশিষের সাথে সাক্ষাতের সময় তিনি জানিয়েছিলেন, তার সহযোগীরা তাকে কোলাবোরেট করে থাকেন-সমহারে প্রাপ্ত ন্যূনতম পারিশ্রমিকের বিনিময়ে, তাই তিনি এদের কোলাবোরেটরস বলে উল্লেখ করেন। এরা সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নেন তাদের পরবর্তী সিনেমার বিষয়ে এবং শুরু করেন একেকটি জার্নি। অনেকটাই যেন প্রয়োগের সিনেমায় নিজেদের আত্মনিয়োজিত করেন সকলে মিলে। 

আশিষের সব সিনেমার কথা লিখে শেষ করা যাবে না এই পরিসরে! তবে রতি চক্রব্যূহের পর তিনি একের পর এক নির্মাণ করেন-কল্কিমন্থনকথা (২০১৫), আপৎকালীন ত্রিকালীকা (২০১৬), বৃন্দাবনী বৈরাগ্য (২০১৭), না-মানুষ প্রেমের 

কথামালা (২০২১) এবং সর্বশেষ রটরডেম চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ছবি-বিধ্বস্ত (২০২৪)। এখনো নির্মাণ পর্যায়ে আছে আরও দুটি ছবি। মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদ বধ’ মহাকাব্য অবলম্বনে আশিষের নির্মাণাধীন একটি চলচ্চিত্রের সম্পর্কে আমি জানি-যার কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের আমন্ত্রণে আশিষ অভিকুন্তক সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছিলেন। এখানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত তার ‘প্রয়োগের সিনেমা’ শীর্ষক কর্মশালা ও নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহের রেট্রোস্পেকটিভ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়-তরুণ চলচ্চিত্রাগ্রহীদের মাঝে যা ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। বিশ্বচলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক ও তথাকথিত নিরাপদ-আর্টফিল্ম বিশ্বের বিপরীত স্রোতে দাঁড়িয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমী এই চলচ্চিত্রপ্রেমী যে প্রয়োগের সিনেমার চর্চা অব্যাহত রেখেছেন-স্বাধীন ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের শত দুরাশার মাঝেও তাই যেন এক উজ্জ্বলতর আলোকবর্তিকা হয়ে জেগে আছেন আশিষ অভিকুন্তক! 

ঋণসূত্র 

১. সিনেমা প্রায়োগার প্রবক্তা অমৃত গাঙ্গারের আশিষবিষয়ক আলোচনা ও সাক্ষাৎকার।

২. আন্তর্জাতিক ওয়েব প্ল্যাটফর্ম গঁনর আয়োজিত আশিষ অভিকুন্তকের বছরব্যাপী রেট্রোস্পেকটিভ উপলক্ষে প্রকাশিত ওয়েব কনটেন্ট।

৩. রটরড্যাম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আশিষ অভিকুন্তকের রেট্রোস্পেকটিভ 

প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা।

৪. আশিষ অভিকুন্তকের সাক্ষাৎকার।

  লেখক : স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষক

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫