Logo
×

Follow Us

চাকরি

প্রতিষ্ঠান কেন দক্ষ কর্মী হারায়

Icon

ফারিহা জান্নাত কুয়াশা

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:৫৬

প্রতিষ্ঠান কেন দক্ষ কর্মী হারায়

অফিসের কাজে ব্যস্ত এক কর্মী। ছবি: সংগৃহীত

এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বল তো... গানের এই লাইনটা শুনলে মনে হয়, সম্পর্ক, কাজ, অথবা একটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের যাত্রাটা যেন কখনো শেষ না হয়। তবে বাস্তবতা ভিন্ন, সেই পথ অনেক সময় শেষ হয়ে যায় কর্মীদের জন্য। আজকের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যোগ্য লোকের অগ্রাধিকার থাকার কারণে চাকরি ধরে রাখাই অনেক কর্মীর জন্য চ্যালেঞ্জিং। তবু চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। 

কোনো কোনো মালিক অভিযোগ করে থাকেন, ভালো কর্মীরা এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে যান, প্রতিষ্ঠানের কথা চিন্তা না করে তারা কেবল নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। যেসব মালিক এমন মন্তব্য করেন, তাদের উচিত নিজেদের ভুলের দিকেও নজর দেওয়া। তাদেরকেও ভাবতে হবে, কর্মীরা কেন প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যায়...

কাজের মূল্যায়ন না করা : দক্ষ কর্মীরা তাদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রত্যাশা করেন। যখন তাদের প্রচেষ্টা এবং অবদান নিয়মিতভাবে উপেক্ষা করা হয়, তখন কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েন। তারা এমন প্রতিষ্ঠানে যেতে চান যেখানে তাদের কাজের যথাযথ প্রশংসা এবং স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

প্রতিশ্রুতি পূরণ না করা : কর্মীদের কাছে ঘন ঘন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন অনেক বস। কিন্তু তা পূরণ করেন না। বিভাগীয় প্রধানের প্রতিশ্রুতি কর্মীদের মাঝে উদ্দীপনা বাড়ায়। এ ক্ষেত্রে বস যখন কেবল লোক-দেখানো প্রতিশ্রুতি দিতে থাকেন তখন হতাশা ছেয়ে যায় কর্মীদের মাঝে।

অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেওয়া : যারা আন্তরিক এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন। বিশেষ উপলক্ষে বাড়তি কাজ করতেও তাদের কোনো অভিযোগ থাকে না। কিন্তু প্রতিষ্ঠান ক্রমাগত অতিরিক্ত কাজ করালে বিষিয়ে ওঠে কর্মীদের মন। কর্মীদের দিয়ে বাড়তি খাটিয়ে নেওয়ার প্রবণতা ভালো কিছু বয়ে আনে না। এটা তাদের উৎপাদনশীলতাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলাফল কর্মী অফিসের প্রতি বিমুখ হয়ে ওঠেন।  

অপর্যাপ্ত সুবিধা : একটি প্রতিষ্ঠান তার কর্মীদের মূল্যায়ন করার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন হলো অফিস থেকে দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। যেসব প্রতিষ্ঠানে বেতন ছাড়া আর কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই; তখন সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মী নিজের দক্ষতা, প্রচেষ্টা এবং শিল্পের মানদণ্ড অনুযায়ী নতুন চাকরি খুঁজে নেন।

ভুল কর্মী বাছাই ও পদোন্নয়ন : যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন লোক নিয়োগ দেন। আবার অপেক্ষাকৃত কম যোগ্য কর্মীদের পদোন্নয়ন দেন। এখানে ভালো কর্মীরা তাদের ভবিষ্যৎ দেখেন না, যার ফলে তারা চাকরি ছেড়ে নতুন সমাধানের দিকে এগিয়ে যান।

স্বৈরাচারী নেতৃত্ব : যে প্রতিষ্ঠানে স্বৈরাচারী নেতৃত্ব বিদ্যমান, সেখানে কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। কর্মীদের মতামতের গুরুত্ব প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া উচিত। ‘বস ইজ অলওয়েজ রাইট’-এই ধরনের নেতৃত্ব কর্মীরা পছন্দ করেন না। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে দক্ষ কর্মীরা খুব বেশিদিন থাকেন না।

চাকরির নিরাপত্তা না থাকা : চাকরিতে যদি নিরাপত্তা না থাকে সে ক্ষেত্রে একজন কর্মী নতুন চাকরি খুঁজতে থাকেন। কারণ আর্থিক অস্থিতিশীলতার সময়ে কর্মীরা  নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন। আর ছাঁটাইয়ের ভয়ও কাজ করে। ফলে কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। 

কর্মক্ষেত্রের নেতিবাচক পরিবেশ : প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ কর্মীদের মনোভাব এবং কর্মক্ষমতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি, অসুস্থ প্রতিযোগিতা, এবং নেতিবাচক মনোভাব বিরাজ করে, তবে দক্ষ কর্মীরা সেখানে থাকার মানসিকতা হারিয়ে ফেলেন। তারা এমন কর্মক্ষেত্র খুঁজতে থাকেন, যেখানে পরিবেশ বন্ধুসুলভ এবং সমর্থনময়।

সঠিক পারিশ্রমিকের অভাব : বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দক্ষ কর্মীদের ধরে রাখতে পারে না। কারণ তারা সঠিক বেতন কাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। কর্মীরা জানেন যে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বাজারে ভালো সুযোগ রয়েছে। যদি প্রতিষ্ঠানে তাদের পারিশ্রমিক তাদের দক্ষতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তখন তারা আরও ভালো সুযোগ খোঁজেন, যেখানে তাদের পরিশ্রমের সঠিক মূল্য দেওয়া হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫