ফ্যাশন ডিজাইন হতে পারে নির্ভরযোগ্য ক্যারিয়ার

পছন্দসই রুচিশীল পোশাক পরিধানে হাল আমলে তরুণ থেকে প্রবীণ কেউই পিছিয়ে নেই। ফলে শৈল্পিক সৃজনশীলতা ও সৃষ্টিশীল নান্দনিকতার প্রয়োগের জায়গা হয়ে উঠেছে ফ্যাশন ডিজাইন। যুগের চাহিদার দিকে তাকিয়ে বলা যায়- সৃজনশীল চিন্তাধারার অধিকারী এবং সাহসি মনোভাবসম্পন্ন তরুণ-তরুণীদের জন্য ফ্যাশন ডিজাইন হতে পারে নির্ভরযোগ্য ক্যারিয়ার। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে পোশাকশিল্প বেশ বড় ভূমিকা রাখে। পোশাক যে শুধু বিদেশে রপ্তানি হয় তা নয়, দেশে রয়েছে এর বিশাল বাজার। দেশের সংস্কৃতি, রুচির ও আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই পোশাক তৈরি করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইনাররা, এতে স্বাভাবিকভাবে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে।  

ফ্যাশন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রবণতা এবং মনোভাবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত, যা প্রতিফলিত হয় কীভাবে মানুষ পোশাকের মাধ্যমে নিজেকে উপস্থাপনে পছন্দ করে। ফ্যাশন ডিজাইনারদের ভোক্তা মনোভাব এবং সমাজের বৃহত্তর নান্দনিক মূল্যবোধের বিচারে বিচক্ষণ হতে হয়। গবেষণা ও ট্রেন্ড সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করার সক্ষমতা পোশাক ডিজাইনারদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ফ্যাশন ডিজাইন ও উৎপাদনে জড়িত পরিবেশগত দিকগুলোও বিবেচনায় নিতে হয়।

বাংলাদেশে যেহেতু গার্মেন্টসশিল্প বিকশিত হয়েছে, তাই এখানে কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে। দেশেই ফ্যাশন ডিজাইনারদের রয়েছে চাকরির বিশাল বাজার। এর মধ্যে টেক্সটাইল শিল্প, গার্মেন্টসশিল্প, বায়িং হাউস, বুটিক হাউস বা দেশি-বিদেশি পোশাক ব্র্যান্ড হাউসে রয়েছে কাজের অপার সম্ভাবনা। এ ছাড়া দেশে অনেক ফ্যাশন স্কুল আছে, যেখানে প্রভাষক হিসেবেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।  চাকরির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিদেশেও ফ্যাশন কোম্পানিতে চাকরি পাওয়া সম্ভব। ক্যারিয়ার গড়া যায় ফ্যাশন ডিজাইনার, ফ্যাশন স্টাইলিস্ট, জুয়েলারি ডিজাইনার, ফুটওয়্যার ডিজাইনার, ফ্যাশন মডেল, নিটওয়্যার ডিজাইনার, টেক্সটাইল ডিজাইনার, ফ্যাশন জার্নালিস্ট, ক্রিটিক, ফ্যাশন ফটোগ্রাফার, কস্টিউম ডিজাইনার, ডিজাইন ডিরেক্টর, আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন টিচার, ফ্যাশন বা অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজার, ভিজ্যুয়াল মার্চেন্ডাইজার, কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার প্রভৃতি পদে। 

একজন ভালো ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার জন্য সৃজনশীলতা অপরিহার্য। বাস্তব অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে অনেকাংশে এগিয়ে দেয়। ফ্যাশন ডিজাইন ও প্রযুক্তি বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা দেশের স্বনামধন্য ফ্যাশন হাউসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সফলতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। ফ্যাশন হাউস প্রতিষ্ঠা করে অনেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, এতে অন্যদের কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে। 

বর্তমানে বাংলাদেশে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ানো হয় সেখানে দেশি-বিদেশি ফ্যাশন এবং অ্যাপারেল বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সেমিনার, কর্মশালা ও গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সময়োপযোগী শিক্ষা এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারেন। এসব কর্মশালায় বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী যারা ফ্যাশন ও অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়। ফলে শিল্প ও একাডেমির এক মেলবন্ধন হয় এখানে, যা ক্যারিয়ার গঠনে ভূমিকা রাখে। উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি ফ্যাশন টেকনোলজিতে ছয় মাস বা এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করারও সুযোগ রয়েছে। এটা সম্পন্ন করেও ডিজাইনার হিসেবে কাজ করা যায়। এ ছাড়া বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ এবং সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারের হাতছানি তো রয়েছেই।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh