ন্যায্য মজুরির আশায় হলিউডে চলছে লেখক ও চিত্রনাট্যকারদের ধর্মঘট। এবার তাদের সমর্থনে পাশে দাঁড়ালেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ড্রিউ ব্যারিমোর। শুধু তাই নয়, এমটিভি মুভি অ্যান্ড টিভি অ্যাওয়ার্ডের সঞ্চালনার পদ থেকেও সরে দাঁড়ালেন এই অভিনেত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমি লেখকদের কথা শুনেছি। তাদের প্রতি সম্মান জানাতে এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে আমি এমটিভি মুভি অ্যান্ড টিভি অ্যাওয়ার্ডস লাইভ থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’ মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে এই অভিনেত্রী এমনটি বলেন।

তিনি তার বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘আমরা সবাই যে সম্মান পাই এবং যা উদযাপন করি সিনেমা ও টিভিতে, তা তাদের থেকেই সৃষ্টি হয়। এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমি ঘরে বসেই অনুষ্ঠানটি দেখতে চাই। আশা করছি আপনারাও আমার সঙ্গে থাকবেন।’

এমটিভি মুভি অ্যান্ড টিভি অ্যাওয়ার্ডের নির্বাহী প্রযোজক ব্রুস গিলমের নিশ্চিত করেছেন বিষয়টি। এবারের আসর সঞ্চালক ছাড়াই হতে পারে। তবে তিনি পরের বছর আবার সঞ্চালক হিসেবে থাকবেন। এ ছাড়া ইতিমধ্যে ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’ শো ধর্মঘটের কোপানলে পড়েছে। তারা তাদের নতুন শো প্রচার করতে পারেনি।

বেশ কিছুদিন ধরেই নিজেদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের কথা বলছিলেন হলিউডের লেখক ও চিত্রনাট্যকাররা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দাবি-দাওয়া না মানায় গত মঙ্গলবার থেকে তারা ধর্মঘটে যান। যার এখনো কোনো সমাধান হয়নি।

হলিউড লেখকদের সংগঠন রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকার সদস্যসংখ্যা সাড়ে ১১ হাজারের বেশি। তাদের দাবি-দাওয়ার মধ্যে মুখ্য ছিল পারিশ্রমিক বাড়ানো, শো-পিছু বেশি লেখক, পেনশন এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, উন্নত কাজের পরিবেশ…ইত্যাদি।

তাদের অভিযোগ, স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের বৃদ্ধির কারণে কাজের চাপ অসহনীয় জায়গায় পৌঁছেছে। কিন্তু সেই তুলনায় লেখকরা যোগ্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে তাদের স্টুডিও ও প্রযোজকদের সংগঠন ‘অ্যালায়েন্স অব মোশন পিকচার্স অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডিউসারস’-এর সঙ্গে দর-কষাকষি চালিয়েছিল। কিন্তু সে সবই বিফলে গেছে। রাইটার্স গিল্ডের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, প্রযোজকদের পক্ষ থেকে যে উত্তর পাওয়া গেছে, তা তাদের দাবিদাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয়। তাদের দাবিগুলোতে প্রযোজকরা কর্ণপাতই করতে চাইছেন না। গিল্ডের সদস্য লেখকরা ২ মে থেকেই কলম-খাতা-ল্যাপটপ সব তুলে রেখেছেন।

হলিউডের ইতিহাসে গত ১৫ বছরে এ রকম দেখা যায়নি। শেষ যখন এরকম ‘ধর্মঘট’ হয়েছিল, ২০০৭-২০০৮ সালে, সেবার মাত্র ১০০ দিন লেখকরা কাজ বন্ধ রাখায় হলিউডের ক্ষতি হয়েছিল ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।