
নিখাই নাটক মঞ্চস্থ। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
ঘটনাটি ব্রিটিশ পিরিয়ডের একটা স্টিমার ঘাটকে নিয়ে। বিভিন্ন ধরনের লোকের আনাগোনা সেখানে। স্থায়ীভাবে কেউই থাকে না ঘাটে। কিন্তু এক বৃদ্ধ দশ বছর ধরে এই ঘাটকে আঁকড়ে পড়ে আছে। রাতবিরেত এই ঘাটে কেউ না থাকলেও এই বৃদ্ধকে পাওয়া যায়।
একদিন হঠাৎ মাঝ রাতে এক ব্রিটিশ দারোগা তার স্ত্রীকে নিয়ে হাজির হন। নদী পার হওয়া ভীষণ জরুরি। কিন্তু কোন মাঝি-মাল্লা না পাওয়ায় অপেক্ষা করতে হয় তাদের। তারপরই এক এক করে ঘটতে থাকে নানা ঘটনা। বেরিয়ে আসে একজন মানুষের জন্মের ইতিহাস।
নাটকটি প্রসঙ্গে নাট্যকার-নির্দেশক গাজী রাকায়েত বলেন, যখন কেউ পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে, তখন কি তাকে বাঁচানোর আগে ধর্মের পরীক্ষা করে দেখতে হবে সে হিন্দু, খ্রিস্টান না মুসলমান? এরকম উল্লেখ কিন্তু কোথাও নেই। শুধু ইসলামেই নয় সব ধর্মেই মানুষকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে সবার উপরে।
তিনি বলেন, অথচ মানুষ আজ খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত। এই বিভক্তি ধর্মের কারণে নয়, মানুষ তার নিজের স্বার্থেই ধর্মকে ব্যবহার করে এই বিভক্তি টেনে এনেছে। আজ পৃথিবীতে দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে যে দ্বন্দ্ব সেটা এই বিভক্তিকে কেন্দ্র করেই। এই বিভক্তি মানবজাতিকে মহাপ্রলয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু ধর্মে ধর্মে নয়, একই ধর্মের মধ্যে মানুষে মানুষে যে ব্যবধান সেটাও ভয়াবহ! পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে মানুষের সাথে মানুষের যে ব্যবধান সেটাকে ঘুচাতে হবে এর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, মানব বৈষম্যকে নিয়ে মঞ্চে কাজ করার প্রবল একটা ইচ্ছা আমার ছিল। থিয়েটার আমাকে সেই সুযোগটি করে দেয়ায় আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। থিয়েটারের সকল নাট্যকর্মী ও সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টা না থাকলে “নিখাই” মঞ্চে আনা সম্ভব হতো না।
তিনি আরো বলেন, মঞ্চে এটি আমার ষষ্ঠ নির্দেশনা এবং প্রথম মৌলিক রচনা। টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে আমার মৌলিক রচনা নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। এর আগে আমার বিভিন্ন নাটক রূপান্তর ও নাট্যরূপ হিসেবে মঞ্চে এসেছে। কিন্তু মৌলিক রচনা হিসাবে এবারই প্রথম। থিয়েটারের অল্প সংখ্যক নতুন নাট্যকর্মী কাজ করেছে।
অভিনয়ে যারা আছেন- (প্রবেশ ক্রমানুসারে)
আরফান ভূঁইয়া : জাহাঙ্গীর কবির, রফিকুল ইসলাম রফিক
জামাল সুকানী : প্রবীর দত্ত, লেনিন ফিরোজী
সাখাওয়াত দারোগা : সাফিউর রহমান সাফি, তৌহিদুল ইসলাম বাদল
ফরিদা : তাহমিনা আক্তার, ইউসা আনতারা, আকেফা আলম ঐন্দ্রিলা
নেপথ্যে
রচনা,নির্দেশনা, পোশাক ও মঞ্চপরিকল্পনা : গাজী রাকায়েত
সহযোগী নির্দেশনা ও ব্যবস্থাপনা : রফিকুল ইসলাম
সহকারী : প্রবীর দত্ত, জহির, শাকিল
আবহ সঙ্গীত : গাজী রাকায়েত
আবহ সঙ্গীত নিয়ন্ত্রণ : শাহরিয়ার ইসলাম, তুহিন চৌধুরী, পলাশ শুদ্র
আলোক পরিকল্পনা : ঠান্ডু রায়হান
আলোক প্রক্ষেপণ : শাহরিয়ার, শামীমুর রহমান
পোস্টার : পীযূষ দস্তিদার
প্রপস ও মঞ্চ সামগ্রী : শাকিল
রূপসজ্জা : তন্ময়, জাহাঙ্গীর
আলোক সামগ্রী সরবরাহ : মালেক
পর্দা সরবরাহ : অশোক মুখার্জী
প্রযোজনা উপদেষ্টা : প্রদীপ বণিক, আফরোজা বানু, ড. নীলুফার বানু,
অশোক রায় নন্দী ও তুহিন চৌধুরী।
প্রযোজনা অধিকর্তা : রেজাউল একরাম রাজু
মিলনায়তন ব্যবস্থাপনা : নরেশ ভূঁইয়া, হীরেন দে, রণজিৎ সাহা, আপেল বাশার, মোহসীন রেজা, অসীম রায়, স্বপন ঘোষ, শিল্পী সরকার অপু এম. এম, এ. মুহিত, রোকসানা ফেরদৌসী লুসি, মুনীরা ইউসুফ মেমী, সিরাজুল ইসলাম, ফেবিয়ান গোমেজ, জাহিদ হোসেন শোভন, শরীফ, রহমতউল্লাহ তুহীন, জাহাঙ্গীর কবীর, ফাইজুর রহিম ডিউ, রকি খান, বকুল, আজম, শান্তি, মিঠু, মাইনুল, দীপু, আকাশ, মাসুম, রত্না, রিজভিনা মৌসুমী, মাহমুদা মুন, জহির, রীনা আক্তার, শংকর সরকার, যামিনী পূর্বাশা, সাবিনা ইয়াসমিন।