সোমবার মহিলা সমিতিতে মঞ্চস্থ হবে ‘কোথায় জলে মরাল চলে’

সিনিয়র রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৩২

নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে আগামীকাল সোমবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় মহিলা সমিতিতে মঞ্চস্থ হবে কোথায় জলে মরাল চলে। এটি রচনা করেছেন মোহন রাকেশ। অনুবাদ করেছেন অংশুমান ভৌমিক। নির্দেশনা দিয়েছেন ড. আইরিন পারভীন লোপা। নাটকটি প্রযোজনা করেছেন নাট্যম রেপার্টরী।
কোথায় জলে মরাল চলে নাটকের গল্প সম্পর্কে জানা যায়, তেইশশো বছর আগেকার কপিলাবস্তুর কথা, গৌতম বুদ্ধের মনকে রাজকীয় বিলাস-বৈভব আকৃষ্ট করতে পারেনি। মানবজীবনের হতাশা, দুঃখ, জরা-ব্যাধি প্রভৃতির চিন্তা তাকে আকুল করে তোলে। তিনি সংসার সম্পর্কে ক্রমেই উদাসীন হয়ে পড়লে তার পিতা যশোধরা নামে সুন্দরী রাজকন্যার সঙ্গে বিবাহ দেন।
সংসার জীবনে দুঃখ, জরা-ব্যাধি এবং মৃত্যুর বিষয়গুলো গৌতম বুদ্ধকে খুব ভাবিয়ে তোলে। বৌদ্ধধর্মে এই তিনটি বিষয়কে ত্রিতাপ বলে। মানবজীবন থেকে ত্রিতাপের যন্ত্রণা মোচনের জন্য তিনি উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। ২৯ বছর বয়সে গৌতম সংসারের মায়ার বন্ধন, রাজকীয় ঐশ্বর্য, পুত্র রাহুল ও স্ত্রী যশোধরাকে ত্যাগ করে একদিন গভীর রাতে গোপনে গৃহত্যাগ করেন এবং ১২ বছর সাধনার পর তিনি নির্বাণ লাভ করেন।
বহুদিন পর স্বভূমিতে ফিরে এসেছেন গৌতম বুদ্ধ। তাকে একবার চোখে দেখার জন্য কপিলাবস্তু উদ্বেল। তার কাছে দীক্ষা নেবার জন্য অধীর শতসহস্র অনুগামী। রাজপ্রাসাদে দেবী যশোধরাও অধীর। কাল তিনিও দীক্ষা নেবেন। ওদিকে রাজকুমার নন্দর ভবনে অন্য হাওয়া বইছে। নন্দ নিজে বুদ্ধের সান্নিধ্য পেতে চাইলেও তার স্ত্রী সুন্দরীর ব্যাপারে কোনো আকর্ষণ নেই। এই পরিস্থিতিতে স্বামী নন্দর ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ একটুও শিথিল হতে দেবেন না তিনি।
সুন্দরীর তীব্র আগ্রহে আজ রাতে কামোৎসবের আয়োজন হয়েছে নন্দর ভবনে। কপিলাবস্তুর অভিজাত সম্প্রদায় সেখানে আমন্ত্রিত। সুন্দরীর তত্ত্বাবধানে সেজে উঠছে চারদিক। ভবনকে নৃত্যগীতের উপযোগী মঞ্চ করে তুলতে, সুরাপানের অনুকূল পরিমণ্ডল রচনা করতে কোনো কার্পণ্য করছেন না সুন্দরী। তবু কমল সরোবরের রাজহাঁসেরা এত চঞ্চল হয়ে উঠছে কেন তার থই মিলছে না। আলোচ্য বিষয় নিয়েই নাট্যম রেপার্টরীর সপ্তম প্রযোজনা, নাটক কোথায় জলে মরাল চলে।
নাটকটির নির্দেশক ড. আইরিন পারভীন লোপা বলেন, প্রায় তিন হাজার বছরের সামাজিক ও রাজনৈতিক চিত্রের আবহ হুবহু তুলে ধরবার প্রয়াসে সেট, পোষাক, সংগীত, অঙ্গরচনাসহ অভিনয়েও সেই সময়কে ধারণের চেষ্টা করেছি। কতটা সফল দর্শক তার মূল্যায়ন করবেন, কারণ তাদের সন্তুষ্টিই আমাদের সফলতা।
এতে অভিনয়ে আছেন- শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, সংগীতা চৌধুরী, মো. ফখরুজ্জামান চৌধুরী, শাকিল আহমেদ, দীপু মাহমুদ, শিমুল সাইফুল, মিথিলা চক্রবর্তী, শরিফুল ইসলাম মামুন, তাহমিনা খাতুনসহ অনেকেই।
নাটকের নেপথ্যে যারা আছেন- সেট-অসীম দাস, আবহসংগীত-শেখ জসিম, আলো-মো. বজলুর রহমান, পোষাক পরিকল্পনা-ড. আইরিন পারভীন লোপা, অংঙ্গরচনা পরিকল্পনা-শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, প্রপ্স-শরিফুল ইসলাম মামুন এবং আবহসংগীত প্রক্ষেপন-মুক্ত।