Logo
×

Follow Us

বিনোদন

জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে নকশী কাঁথার মাঠ

Icon

সিনিয়র রিপোর্টার

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৪:৫৯

জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে নকশী কাঁথার মাঠ

নকশী কাঁথার মাঠ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

প্রতিবারের মতো এবারো দুই দেশের শিল্পীদের পারস্পারিক সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা বিনিময় ও জনগণের আত্মার ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে ৬ থেকে ১৭ অক্টোবর ১২ দিনব্যাপী গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৩ এর আয়োজন করেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ।

এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) উৎসবের সমাপনী দিনে শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে নকশী কাঁথার মাঠ।

পল্লী কবি জসিম উদ্দীন রচিত নকশী কাঁথার মাঠ নৃত্যনাট্যটি পরিবেশন করবে বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টস।

নকশী কাঁথার মাঠ পল্লী কবির অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি লেখা। গল্পের পটভূমিতে প্রথম দৃশ্যে দেখা যাবে, বহু কাল পরে নিজ গ্রামে ফিরে এসেছে নৃত্যনাট্যের নায়ক রূপাই। চারিদিকের সমস্ত পরিবেশ এখন তার অপরিচিত। হঠাৎ সে দেখতে পেল একটি কবর। কবরের উপর একটি নকশী কাঁথা। মনে পড়ে গেল তারই প্রাণ প্রিয় পত্নী সাজুর তৈরি এ কাঁথা। বুঝতে বাকী রইলনা এটা তার স্ত্রীর কবর। তখন নায়কের চোখে ভাসতে থাকল তার অনেক সুখ ও আনন্দময় বিগত দিনগুলোর স্মৃতি।


২য় দৃশ্যে দেখা যাবে, একই গ্রামের যুবক যুবতী রূপাই ও সাজুর দেখা হল দুজনার কোন এক মুহূর্তে। প্রেমে পড়ে গেল দুজন দুজনার। দিনে দিনে প্রেম হলো। বাঁশির সুরে সুরে তাদের সম্পর্ক আরো নিবিড় হলো।

৩য় দৃশ্যে দেখা যাবে, বাংলাদেশের গ্রামের এই যুবক যুবতীর প্রেম গ্রামের লোকের কাছে সহ্য হলো না। তারা এ প্রেমের নিন্দা করতে থাকলেন। এক দিন সাজুর মার কাছেও ধরা পড়ে গেল তাদের এ প্রেম, তিনিও বাধ সাধলেন। রূপাইকে বলে দিলেন তুমি আর আমাদের বাড়িতে এসো না। বিরহে নিপতিত নায়ক রূপাই আহার নিদ্রা ত্যাগ করলেন কিছুই তার ভালো লাগে না। অবস্থা বেগতিক দেখে রূপাইয়ের মা খবর দিলেন ঘটককে।

৪র্থ দৃশ্যে দেখা যাবে, ঘটক এসে ব্যবস্থা করে দিলেন রূপাই ও সাজুর বিয়ের। সুখে আনন্দে আত্মহারা দুজনের দিন কাটতে লাগলো। এমনি সময় জমি দখলকে কেন্দ্র করে মারামারি শুরু হলো। রূপাইয়ের লাঠির আঘাতে মারা পড়ল বিপক্ষের একজন। পুলিশে ধরা পড়ার ভয়ে বাধ্য হয়ে গ্রাম থেকে পালাতে হলো রূপাইকে।

৫ম দৃশ্যে দেখা যাবে, দিন যায় মাস যায় বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হয় রূপাই ফিরে আসতে পারে না গ্রামে। এদিকে তার প্রাণ প্রিয় পত্নী সাজু অপেক্ষায় থাকে। শুধুই অপেক্ষা আর অপেক্ষা। কখন তার স্বামী ফিরে আসবে। তাদের সুখময় বিগত দিনগুলোর চিত্র দিয়ে তৈরি করতে থাকে নকশী কাঁথা। আহার নিদ্রা ত্যাগ করে তার অপেক্ষা চলতে থাকে দিনের পর দিন। অবশেষে একদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সাজু। নকশী কাঁথায় রেখে যায় তার জীবনের আনন্দময়  স্মৃতিগুলো।


পরিশেষে এ আনন্দময় স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে রূপাই তার প্রিয় পত্নীর বিয়োগ ব্যথা সহ্য করতে না পেরে  সেও মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। আর এভাবেই বিয়োগাত্মক পরিণতির মধ্য দিয়ে নৃত্যনাট্যের সমাপ্তি হবে। এমনটিই জানিয়েছেন নৃত্যনাট্য সংশ্লিষ্টরা।

চিত্রনাট্যটি পরিবেশন করছে বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টস। এর কোরিওগ্রাফি করেছেন নৃত্য সম্রাট জি, এ, মান্নান। এটি নির্দেশনা দিয়েছেন নৃত্য গুরুমাতা রাহিজা খানম ঝুনু। নৃত্য পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানে ফারহানা চৌধুরী বেবী। এর নাট্যরূপ দিয়েছেন এ, কে, এম মুজতবা। সঙ্গীত পরিচালনায় আছেন ওস্তাদ খাদেম হোসেন খান। নৃত্যনাট্যের কণ্ঠ শিল্পীরা হলেন নীনা হামিদ, ইন্দ্রমোহন রাজবংশি, জি এ মান্নান ও অন্যান্য।

নৃত্যনাট্যে অংশগ্রহণ করেছেন এদের মধ্যে সাজু চরিত্রে আছেন ফারহানা চৌধুরী বেবী, রূপাই  চরিত্রে আব্দুর রশিদ স্বপন, সাজুর মা  চরিত্রে সেলিনা হক, রূপাইর মা চরিত্রে আফরোজা লীনা, ঘটক  চরিত্রে আব্দুল মতিন, সর্দার চরিত্রে আমিরুল ইসলাম মনি, বিশেষ চরিত্রে আছেন হেনা হোসেন, গ্রাম্য চাষি চরিত্রে মাহফুজ, উজ্জল, সুমন, পারভেজ, ফারাবী, সোহেল, সুমন, আকাশ।

সহ শিল্পীবৃন্দ হচ্ছেন বিথিয়া, লিপি, আরুবা জারা, তাহিয়া, মাহিবা, অত্রি, তানিশা, বিন্দু নন্দিনী, ফারাবী, জারা, গল্প, দীপান্বিতা, রূফায়িদা, হিয়া, প্রজ্ঞা, নবনীতা, অদ্রী, প্রিয়ন্তী, নিশিতা, পূর্ণা, শারাকা, পারমিতা, অঙ্কিতা, রূপ, জোয়ানা।

নৃত্যনাট্যে আলোক নিয়ন্ত্রণে আছেন সবুজ ভূঁইয়া। এডিটিং এবং এলইডিতে আছেন বাবুল চন্দ্র দাস। রূপ সজ্জ্বায়  জনি এবং সহযোগিতায় আতিকুর রহমান উজ্জল।

এ প্রসঙ্গে বাফার কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টস দেশের অন্যতম একটি সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্রমবর্ধমান আকাশ সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে আমাদের চিরন্তন ঐতিহ্য ও আগামী প্রজন্ম মূলধারার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠবে এ অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টস এর অগ্রযাত্রা। বাংলাদেশের মূলধারার সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রসারে দেশ ও জাতির কল্যাণে এবং অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করে দেশীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ ও সুস্থ জীবন ধারায় মাদক বিবর্জিত ও সন্ত্রাস মুক্ত সুস্থ সমাজ প্রতিষ্ঠাই আমাদের উদ্দেশ্য। শুধুমাত্র আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার পাশাপাশি দেশের সংস্কৃতির সাথে আত্মার একটা টান অনুভব করানোর জন্য দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সামনে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টস। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের যে কোন জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের জাতীয়তাবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তোলা। আগামী প্রজন্মকে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে গড়ে তুলে সুস্থ সমাজ প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫