
চন্দন সিনহা।
‘গান আমার পেশা নয়, নেশা। আর এ নেশার জন্য জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়া আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের, গৌরবের’- এভাবেই কথাগুলো বললেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী চন্দন সিনহা। ২০২২ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি সেরা গায়ক হিসেবে সম্মাননা পেয়েছেন। ‘হৃদিতা’ চলচ্চিত্রে কবির বকুলের কথায় ইমরানের সুর-সংগীতে ‘ঠিকানাবিহীন তোমাকে’ গানের জন্য এ পুরস্কার ঘরে তুলে নেন তিনি।
এর আগে তিনি ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী’ ছবিতে ‘তুমি আছ বলে তারা জ্বলে নেভে’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়ে প্রথমবার এ সম্মান পান। ‘দরিয়া পাড়ের দৌলতি, ‘গহীন বালুচর’সহ আরও কিছু সিনেমায় প্লেব্যাক করেও তিনি বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। তিন দশক ধরে গানের ভুবনে আছেন ‘শীর্ষবিন্দু’খ্যাত এ গায়ক।
১৯৯৩ সালে নির্মাতা আবদুল্লাহ আল মামুনের হাত ধরেই সংগীতাঙ্গনে পথ চলা শুরু করেন তিনি। সে সময় তিনি এ নির্মাতার ‘শীর্ষবিন্দু’ ধারাবাহিকে কণ্ঠ দেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের এ ধারাবাহিকে কণ্ঠ দিয়ে দারুণ সাড়া ফেলেন। এর পর এ নির্মাতার প্রায় সব নাটক-সিনেমাতে তিনি নিয়মিত গাইতেন বলে জানান।
সে সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “বিটিভির ‘শীর্ষবিন্দু’ ধারাবাহিকের মধ্য দিয়ে আমাদের নাটকে গানের যাত্রা শুরু হয়। আমার বেশ ভালো লাগছে এখন প্রায় সব নাটকেই গান থাকছে।” বাংলাদেশের প্রথম ডেইলি সোপ ‘জোয়ার ভাটা’র টাইটেল গানটিও তার কণ্ঠে ছিল। তবে সমসাময়িক শিল্পীদের চেয়ে চন্দন সিনহা অনেকটাই প্রচার বিমুখ। নিজেকে তিনি আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন বলে জানান। কিন্তু কেন?
তিনি বলেন, ‘টেলিভিশনের প্রোগ্রাম কিংবা পত্রিকার নিউজে আসার জন্য আমার অনেক সুযোগ ছিল। আমি নিজেই আড়ালে থেকেছি। আমি চাই, আমার শিল্পকর্ম মানুষ জানুক। আমাকে না চিনলেও হবে।’ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কেউ চিরদিন থাকে না। কিন্তু তার কর্মটা তাকে বাঁচিয়ে রাখে। আমি চাই এভাবে আমার কর্মটাই ফোকাস হোক। আমার ভালো লাগে বিভিন্ন রিয়েলিটি শো থেকে শুরু করে নতুন প্রজন্মের অনেকেই আমার গান করছে। এর চেয়ে আর বড় পাওয়া কী হতে পারে?’ নাটক-সিনেমার গানের বাইরে অডিওতেও তিনি গান করেন। উল্লখযোগ্য কয়েকটি অ্যালবাম হলো তার ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘ঘুম যদি না আসে’, ‘তোমারই ভালোবাসায়’, ‘তুমি কোথাও নাই’ ও ‘সুখের শহরে’।