
শুভ্রদেব। ফাইল ছবি
সংগীতশিল্পী শুভ্রদেব। বাংলা গানে তিনি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা, তবে বাঁশির সুরে নয় কণ্ঠের মার্ধুযতায় মুগ্ধ করেন। আশির দশকে তার উত্থান, নব্বইয়ে এসে জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠেন এ তারকা। জনপ্রিয় গানের সংখ্যা নেহাত কম নয়, এই গায়কের। ‘এ মন আমার পাথর তো নয়’, ‘মরণ যদি হয়’, যে বাঁশি ভেঙে গেছে’, ‘আমি হ্যামিলনের সেই বাঁশিওয়ালা’, ‘কোনো এক সন্ধ্যায়’সহ আরও অনেক গানই তার শ্রোতাদের মুখে মুখে শোনা যায়।
২০০০ সালে মিনি বিশ্বকাপ থিম সং ছিল এ তারকার কণ্ঠে। শুধু গায়ক হিসেবেই নন, মডেল-অভিনেতা হিসেবেও তিনি প্রশংসা কুড়ান। কোমল পানীয় পেপসির মডেল হয়ে তিনি চমকে দেন। ভারতে যে বিজ্ঞাপনে মডেল হতেন বলিউড তারকারা। সেখানে শুভ্রদেবের উপস্থিতি অন্যরকম ছিল। ‘পাতালপুরীর গল্প’, ‘স্ত্রীর পত্র’সহ একাধিক নাটকে অভিনয় করেছিলেন এ গায়ক। ক্যারিয়ারে এ তারকা অর্জন করেছেন অনেক পুরস্কার।
এবার তিনি পেলেন একুশে পদক। রাষ্ট্রীয় এই সম্মাননায় ব্যক্ত করেছেন নিজের অভিপ্রায়। শুভ্রদেব বলেন, ‘বাংলা গানের জন্য অনেক আগে থেকেই আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছি। শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি বাংলা গান যেন বিশ্বের দরবারে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারে। তারই ধারাবাহিকতায় ক্রিকেটের থিম সং করেছি, বিবিসি এশিয়া টুডেতেও আমার গান প্রচার হয়েছে। এখনো আমি চাই আমাদের গানকে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে। সংগীতে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় এ সম্মাননা আমাকে আরও বেশি দায়িত্বশীল করেছে।’
এদিকে শুভ্রদেব রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে সমালোচনা করেছেন। এ নিয়েও তিনি কথা বলেন। তিনি জানান, ‘যারা সমালোচনা করছে তারা হয়তো নিউ জেনারেশন। আমার কাজ সম্পর্কে জানে না। একুশে পদক তো শুধু বয়স দিয়ে হয় না, কনট্রিবিউশন দেখেও হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিউজিক ওয়ার্ল্ডে কী কনট্রিবিউশন, গানের জগতে কী করেছি এ সব দেখেই আমাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আমি ভারতের অন্যতম মাদার তেরেসা আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছি। এখন কেউ যদি সমালোচনা করে, কিছু করার নেই।’
রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদক পাওয়ার পর সংগীত নিয়ে আপনার আগামী দিনের পরিকল্পনা কী? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সব সময় চিন্তাধারা ছিল বাংলা গানকে বিশ্বের দরবারে ছড়িয়ে দেওয়া। এটা আমার সংগীত ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই ছিল। তবে এখন সেই চিন্তার প্রতি আরও বেশি যতœশীল হব। নতুন প্রজন্ম যেন বাংলা গানে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে তার জন্য কিছু করতে চাই। এসব মাথায় রেখেই আগামী দিনে কাজ করে যাব।’