
প্রতীকী ছবি
ভাষার পরিমিতিবোধ না থাকলে অনেক গভীর গল্পও উৎকর্ষহীন হয়ে পড়তে পারে। অহেতুক বর্ণনা, প্রাঞ্জলতা, অপ্রয়োজনীয় চরিত্র-গল্প তো বটে, যে কোনো লেখা পাঠে বাধা হয়ে হয়ে দাঁড়ায়। কবিতার কথা বলতে গিয়ে লেওনার্দ কোহেন বলেছিলেন, ‘শব্দ নিয়ে বেশি খেলতে যেও না। যখন উড়াউড়ি বিষয়ে কথা বলো তখন ফ্লোর ছেড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা কোরো না।’
এ কথা গল্পকারদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দুই লাইনে যদি সব বোঝানো যায় তা দুই পাতায় টানার প্রয়োজন নেই। আবার সরাসরি বলাও আর্ট নয়। খেয়াল রাখতে হবে, প্রযুক্তিনির্ভর ও ক্যারিয়ার সচেতন মানুষ এখন সময় ও গল্পহীন শতাব্দীতে বাস করে। তার এখন রূপকথার গল্প শুনে সময় কাটে না। বিনোদনের প্রয়োজন হলে ফেসবুকে রিলস দেখে। এসব ভিডিওই এখন তাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্পের ‘শেষ হইয়াও হইলো শেষ’-এর অনুভূতি দেয়। বলছি না, এমন পাঠকের কথা মাথায় রেখে লেখা প্রয়োজন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাঠকের চাহিদা ও সময় বিবেচনাও রাখতে হবে। কমন একটা দুনিয়ায় আমাদের একটা গল্প খুঁজে বের করতে হবে যা আগে কেউ কখনো শোনেনি। বাজি ধরে আর্নেস্ট হেমিংওয়ে ছয় শব্দেই সার্থক ছোটগল্প লিখেছিলেন। এমনও আছে, গাব্র্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস নিজের উপন্যাস-সমান আয়তনের লেখাকে শুধু গল্পের কাতারেই রেখেছেন। তবে সেসব দিন ফুরিয়েছে। পাঠকদেরও ছোট পরিসরেই পড়া ও ভাবার স্পেস করে দিতে হবে। অহেতুক বর্ণনা টেনে সিরিয়ালের মতো গল্প বলা যেন পাঠকের বিরক্তি উদ্রেকের কারণ না হয়। পাঠকের কাঁধ থেকে ভার নামানোর দায়িত্ব আপনার নয়। তবে একটু হালকা করে দিতে পারেন এমন একটা গল্প বলতেই পারেন। ইতালো ক্যালভিনো চাইতেন, সবকিছু থেকে ভার কমিয়ে ফেলতে। এখনকার গল্পতেও এভাবে চিন্তা করা যেতে পারে।