
রুনা লায়লা। ছবি: সংগৃহীত
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। গত ২৪ জুন গানে গানে সংগীতজীবনের ছয় দশক পূর্ণ করলেন তিনি। ১৯৬৪ সালের এ দিনে তিনি প্রথমবার জুগনু সিনেমার ‘গুড়িয়া সি মুন্নি মেরি ভাইয়া কি পেয়ারি’ গানে কণ্ঠ দেন।
পাকিস্তানি সিনেমার প্লেব্যাক দিয়ে তার ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু হয়। মাত্র ১২ বছর বয়সে উর্দু সিনেমা ‘জুগনু’তে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। এরপর তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের আগেই বাংলাদেশের সিনেমায় প্লেব্যাক শুরু করেন। নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘স্বরলিপি’ (১৯৭০) সিনেমাতে ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটিতে তিনি কণ্ঠ দিয়েছিলেন। এখনো শ্রোতাদের মুখে মুখে এ গানটি শোনা যায়। এ গান লিখেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সুর করেছিলেন সুবল দাস। গানে লিপসিং করেছিলেন চিত্রনায়িকা ববিতা।
সংগীতজীবনে ছয় দশক পূর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে রুনা লায়লা বলেন, ‘আমি ভীষণ ভাগ্যবতী যে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এখনো গান গাইতে পারছি, সুর করতে পারছি; এটাই অনেক বড় বিষয়। তার চেয়েও বড় কথা, আমার সংগীতজীবনের চলার পথের ছয় দশক আমি নিজের চোখে উপভোগ করে যেতে পারছি। এটা যে কত বড় সৌভাগ্যের বিষয়, কত বড় প্রাপ্তি; তা আসলে ভাষায় প্রকাশের নয়।’
এ সময় তিনি ‘জুগনু সিনেমার সংগীত পরিচালক মানজুর সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার ভাষ্য, ‘কীভাবে সিনেমায় গান গাইতে হয়, তা টানা এক মাস আমাকে শিখিয়েছেন। এটা আমার সারা জীবন কাজে লেগেছে।’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাংলা, হিন্দি, উর্দু, গুজরাটি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, পশতু, আরবি, পারসিয়ান, মালয়, নেপালি, জাপানি, ইতালীয়, স্প্যানিশ, ফরাসি, ইংরেজিসহ ১৮টি ভাষায় গান গেয়েছেন রুনা লায়লা। স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তিন শর বেশি সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। ক্যারিয়ারের এ সময়ে এসেও নতুন গান থেকে দূরে নন কিংবদন্তি। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের সঙ্গেও গান করছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, রুনা লায়লা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা ছিলেন সংগীত শিল্পী। তার মামা সুবীর সেন ভারতের বিখ্যাত সংগীত শিল্পী। তার যখন আড়াই বছর বয়স তার বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে যান।