
জনপ্রিয় উপস্থাপিকা মৌসুমী মৌ। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় উপস্থাপিকা মৌসুমী মৌ। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন তিনি। তার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল হয়ে উঠেছিল ক্রিকেটময়। পাশাপাশি তিনি ইভেন্ট ও কর্পোরেট শো নিয়েও ব্যস্ত সময় পার করেন। নিজের ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে আলাপ করেছেন এ গ্ল্যামারকন্যা। কথা বলেছেন মোহাম্মদ তারেক।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে একাধিক শো করলেন। তবে কি এমন শোতেই আগ্রহবোধ বেশি করছেন?
বিশ্বকাপ উপলক্ষে চারটি প্রতিষ্ঠানে শো করেছি। টফিতে তিনটি শো অর্থাৎ প্রি (ক্রিক ক্যাফে), মিড (ফ্রি হিট) ও পোস্ট (ক্যাচ দ্য ম্যাচ) শো করেছি। ডিবিসি নিউজে করেছি ‘ব্যাটে বলে বিশ্ব কাঁপে’, নাগরিক টিভিতে করছি ‘ক্রিক বাজ’ এবং দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে করছি ‘টিবিএস ম্যাচ অ্যানাটমি’। এর বাইরে আমার রেগুলার শো তো আছেই। এ সময় দিনরাত টেলিভিশন সেটেই কেটেছে। কারণ টফির শুটিং হয়েছে নাগরিকের সেটে। আবার নাগরিকের শুটিং। শুটিং শেষে সেখানেই ঘুমানোর বন্দোবস্ত করা ছাড়া আমার আসলে উপায় ছিল না। বিশ্বকাপের শোয়ের জন্য ঈদের শোতে সময় দিতে পারিনি। বিটিভিতে শুধু একটি লাইভ শো করতে পেরেছি। ঈদের দিন শ্রীলঙ্কা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের শো করেছি। আসলে স্পোর্টস শো করতে গেলে প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। আপডেটেড থাকতে হয়। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ ফলো করতে হয়েছে। সত্যি বলতে চ্যালেঞ্জিং কিছু করতে আনন্দ লাগে।
ক্রিকেট শোর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
ভালো সময় কাটিয়েছি। দেশের গুণী কোচ ও ক্রিকেট অ্যানালিস্ট নাজমুল আবেদীন ফাহিম স্যারের সঙ্গে শো করেছি। তার সঙ্গে কথা বললে নিজেকে ঋদ্ধ করা যায়। তিনি জীবনবোধ নিয়েও কথা বলেন। ঈদের দিন সালামি দিয়েছেন। অন্যান্য সহকর্মীরাও যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। একাধিক শো করার কারণে বাসায়ও যেতে পারিনি। চ্যানেলে কাজের ফাঁকে ঘুমিয়ে নিতাম।
ক্রিকেট শো আর অন্যান্য শোর মাঝে কী পার্থক্য চোখে পড়ে?
ক্রিকেট শোতে একপ্রকার উত্তেজনা কাজ করে। সেলিব্রিটি শোতে একজন ব্যক্তির সম্বন্ধে জানা যায়। সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা হয়। দুটোর আনন্দ আলাদা।
বাংলাদেশের পরাজয়ের পরও হাসিমুখে সঞ্চালনা করতে হয়। আবেগ সামলে উপস্থাপনার বিষয়ে কী বলবেন?
একটি মজার অভিজ্ঞতা বলি। সেদিন বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ। আমি টফিতে শো করছি। রিয়াদ যখন মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন, আমিও তখন সেটে বসে পড়েছি। এত কাছে এসে দল হেরে গেল? আমাদের প্রডিউসার তানভীর খান তখন বললেন, ‘মৌ হাসি হাসি মুখ করো। আর শো শুরু করো।’ আমাদের পেশাটাই এমন। জীবনে যা কিছু ঘটুক, হাসিমুখে সঞ্চালনা করে যেতে হবে।
অন্যান্য ব্যস্ততা কেমন?
নিয়মিত শো চলছে বিভিন্ন চ্যানেলে। এ ছাড়া ইভেন্ট ও কর্পোরেট শোর ব্যস্ততা আছে। গ্রামীণফোনের ফটোশুট করেছি। এ ছাড়া নাটকের কথা হচ্ছে। শিগগির শুটিং করব। দুটো ওয়েব ফিল্মের কাজ শেষ করেছি। চ্যানেল আইর আই স্ক্রিনে আসবে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ‘শোধ’ ও দীপ্ত প্লেতে আসবে অলোক হাসানের ‘ত্রিভুজ প্রেম’।
সম্প্রতি মঞ্চাভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপনা করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাচ্ছি।
আমি মঞ্চে কাজ করা মানুষ। মূকাভিনয় অর্থাৎ ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন এবং প্রাচ্যনাটের স্কুলিং আমার মজ্জায় মিশে আছে। তাই মঞ্চাভিনয়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা। তাও আবার তারিক আনাম খান স্যারের নির্দেশনায় এটা আমার জন্য পরম পাওয়া। তবে ক্রেডিট দিতে হবে স্কয়ার টয়লেট্রিজ টিমকে। কারণ আমার লন্ডন যাবার কারণে রিহার্সেলের ডেট ছিল না। কিন্তু তাদের বিশ্বাস ছিল আমি পারব। লন্ডন থেকে ফিরে ২ ঘণ্টা এবং শোয়ের দিন সকাল থেকে রিহার্সেল করেছি। বাকিরা কিন্তু টানা ২ দিন রিহার্সেল করেছেন। পুরো টিমের সাপোর্ট আমার সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে। ‘মেরিল বেবি আদরে গড়া ভবিষ্যৎ’ উপস্থাপনা আমার জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা। এ জন্য সুমন পাটোয়ারী ও তারিক আনাম স্যারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।