
অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সবকিছুতে আসছে পরিবর্তন। বাদ যায়নি শোবিজ দুনিয়া। দীর্ঘ সময় যারা শোবিজে প্রভাব বিস্তার করেছেন এখন আর তাদের দেখা যায়নি। বিনোদন অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতেও এসেছে নতুন নতুন মুখ। কালোতালিকাভুক্ত শিল্পীরা এখন পুরোদমে টেলিভিশন-বেতারে গান করছেন।
সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে বাংলাদেশ শিল্পকলা। সেখানেও স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর অনেক যোগ্য ব্যক্তিরা এসেছেন। এর মধ্যেও অনেকে শোবিজের জন্য খারাপ সময় অপেক্ষা করছে বলে সামাজিক পাতায় মন্তব্য করেন। ব্যান্ড তারকা মাকসুদ বিভিন্ন ইস্যুতে ফেসবুকে নিজের মতামত তুলে ধরেন। সম্প্রতি তিনি একটি পোস্টে লেখেন, ‘গতকাল একটি কনসার্ট জবরদস্তি পণ্ড, আরেকটি বাতিল ঘোষণা কি ইঙ্গিত করছে ব্যান্ড-সংগীত শিগগিরই নিষিদ্ধ করা হবে?’
তবে গত শনিবার শোবিজ অঙ্গনে বেশ উত্তাপ ছড়ায়। একই দিনে পর পর দুটি ঘটনা নানা রকম সমালোচনা ও আলোচনার জন্ম দেয়। এর মধ্যে একটি হলো ‘ব্যবসায়ী-তাওহিদি জনতা’র বাধার মুখে পড়েন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। ২ নভেম্বর দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর আর এস রোডে ‘খুকি লাইফস্টাইল’ নামের একটি ব্র্যান্ড শপ উদ্বোধনের কথা ছিল তার। কিন্তু ব্যবসায়ী-তাওহিদি জনতার ব্যানারে একদল মানুষের বাধার মুখে শোরুম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেননি এই অভিনেত্রী।
এর আগে ‘খুকি লাইফস্টাইল’ শোরুম উদ্বোধনের কথা জানিয়ে গত ২৯ অক্টোবর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এ নিয়ে শোবিজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় অনেকের। বিষয়টি নিয়ে মেহজাবীন নিজেও কথা বলেছেন। তার ভাষ্য, ‘চট্টগ্রামে একটি শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, কিন্তু বিমানবন্দর থেকে শোরুমে যাওয়ার পথে শুনলাম যে নিরাপত্তাসংক্রান্ত কিছু সমস্যা হয়েছে। তাই আয়োজক ও আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে নিরাপত্তার অভাবে আমরা শোরুমে যাব না। আমরা তখনই গাড়ি ঘুরিয়ে বিমানবন্দরের দিকে ফিরে যাই এবং ঢাকায় ফিরে আসি।’ একই দিনে সমালোচনার মুখে পড়েন শিল্পকলার মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে তার পদত্যাগও দাবি করেন।
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের শো চলার মাঝপথেই তা বন্ধ করে দিয়েছেন মহাপরিচালক। ২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে নাটকটি চলা অবস্থায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেন মাসুম রেজা।
নাটকের শো শুরুর আগে শিল্পকলার গেটে বিক্ষোভকারীরা নাটক বন্ধের জন্য ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। এরপর তারা দেশ নাটকের দলনেতা এহসানুল এজাজ বাবুকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান এবং নাটকটির মঞ্চায়ন বন্ধ করে দিতে বলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নাটকটি বন্ধ করে দিতে হয় বলে জানা যায়।
পর পর এ দুটি ঘটনায় অনেকে বলছেন, এটি শোবিজের জন্য অশুভ লক্ষণ। এভাবে চলতে থাকলে সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষ নিরাপদে থাকতে পারবেন না। এখন সময় বলে দেবে আসলে নতুন বাংলাদেশের সংস্কৃতি কোন পথে ধাবিত হচ্ছে।